বানেশ্বরে শিবের পুজোয় পুরোহীত লোহার সম্প্রদায়ভুক্ত।
সাধন মন্ডল,
-বাঁকুড়ার গাজন উৎসব কে ঘিরে জেলাজুড়ে আনন্দ উৎসবে মেতেছে জেলাবাসী জেলার সবচেয়ে প্রাচীন জাঁকজমকপূর্ণ গাজন উৎসব বাঁকুড়া শহরের সন্নিকটে এক্তেশ্বর গ্রামে এখানে তিনদিন ধরে গাজন উৎসবকে কেন্দ্র করে মেলা চলে তিন দিনে 50 হাজারেরও বেশি মানুষ মন্দির প্রাঙ্গণে এসে হাজির হন তার পরেই রয়েছে ষাঁড়েশ্বর এর গাজন এভাবে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে চৈত্রসংক্রান্তিতে গাজন উৎসব হয়ে থাকে এমনি সিমলাপাল থানার দুবরাজপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাঁশীপুর গ্রামে একটি ছোট্ট জলাশয়ের ভিতরে শিব লিঙ্গ বিরাজমান। স্বপ্নাদেশ অনুসারে তথাকথিত তফসিলি জাতি ভুক্ত লোহার সম্প্রদায় এই শিবের পুরোহিত। মিহির লোহার, দিলীপ লোহার ,জয়ন্ত লোহার ,শ্রীকান্ত লোহার ,একই বংশের ছেলে। বংশপরম্পরায় এদের হাতেই বানেশ্বর পূজিত হয়ে আসছেন কয়েকশো বছর ধরে। পুরোহিত মিহির লোহার বলেন আমি কোন বৈদিক মন্ত্র জানিনা। বাবা বানেশ্বর কে আমার অন্তর দিয়ে পূজা করি। বানেশ্বর শিবথানে গিয়ে দেখা গেল
মূর্তিটি অবস্থিত ১৫ ফুট ব্যাসার্ধের একটি জলাশয়ে,যার গভীরতা প্রায় ২৫ ফুট । শিলাবতী নদীর কাছাকাছি এই জলাশয়টি অবস্থিত, ফলে সারা বছর বানেশ্বর জলের তলায় ডুবে থাকেন। মেলা কমিটির পক্ষ থেকে নিখিল সৎপতি, রঞ্জন বিশ্বাস ,কাঞ্চন সৎপতি, জানালেন কথিত আছে অতি প্রাচীনকালে শিলাবতী নদীতে কোন এক সময়প্রবল বন্যায় ভেসে এসেছিল এই মূর্তি। এই কারণেই নাম বানেশ্বর। মিহির লোহার জানালেন প্রসন্ন পাহান (লোহার) নামে আমাদের এক পূর্বপুরুষ বানেশ্বর বাবার স্বপ্নাদেশ পেয়ে এই পুজো শুরু করেন । সেই থেকে বংশপরম্পরায় এই পুজো করে চলেছি। পুজো প্রসঙ্গে তিনি জানালেন গভীর এই জলাশয়টি জলশূন্য করার কাজ শুরু হয় প্রতিবছর চৈত্র মাসের ২০ তারিখে। কোন পাম্পসেট নয়, কলসি করে জল শূণ্য করার রীতি, এই কাজে পাশাপাশি সকল গ্রামের মানুষ হাত লাগান। দেব মাহাত্ম্য অনুসারে প্রতি দিন জল শূণ্য করতে হয় এবং সারা বৈশাখ মাস নিত্য পুজো হয়। আশ্চর্যের বিষয় বৈশাখ মাসে খুব একটা বেশি জল ভর্তি হয় না। বৈশাখ সংক্রান্তির পুজো শেষ হওয়া মাত্রই জলাশয়টি জলে পূর্ণ হয়ে যায়। ফের এক বছরের প্রতীক্ষা। একই সাথে বানেশ্বর ,খাদারানি, চন্ডী সহ একাধিক দেবদেবীর মূর্তি আছে। কয়েক বছর হল শান বাঁধানো সিঁড়ি দিয়ে ভক্তরা নিচে নেমে পুজো দেন। পুজো উপলক্ষে চৈত্র সংক্রান্তির দিন মেলা বসে। বর্তমানে পুজো কমিটি এ দিন থেকে ২৪ প্রহর ব্যাপী অবিরাম রাধানাম সংকীর্তন এর আসর করে আসছেন গত প্রায় পনেরো কুড়ি বছর।
চৈত্র সংক্রান্তির দিন এই মেলা উপলক্ষে ১২_১৫ হাজার মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। একদিনেরএই মেলাকে কেন্দ্র করে এলাকার মানুষের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা ছিল চোখে পড়ার মতো।