প্লাস্টইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের ১১তম আন্তর্জাতিক প্লাস্টিকস প্রদর্শনী,
রাজকুমার দাস , কলকাতা,
বুধবার সন্ধেবেলায় কলকাতার এই বেসরকারি হোটেলের হলঘরে এক সেমিনার হয় প্লাস্টিকইন্ডিয়ার তরফে।সেখানে উঠে আসে বিভিন্ন দাবিদাওয়া গুলি।
আন্তর্জাতিকভাবে ভারতকে প্লাস্টিক-এর অগ্রাধিকার সম্পন্ন উৎস হিসেবে প্রতিপন্ন করবে এই প্রদর্শনী। পাঁচ লাখ লোকের কর্মসংস্থান এবং ৫০০০ প্রোসেসিং ইউনিট সমেত পশ্চিমবঙ্গে প্লাস্টিক শিল্পের সম্ভাবনাকে দৃষ্টিগোচর করা। দর্শনার্থীরা পাবেন ‘আর্লি বার্ড ডিসকাউন্ট’-এর সুযোগ, যদি তাঁরা সঙ্গে সঙ্গে নাম নথিভুক্ত করান। প্লাস্টইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন, প্লাস্টিকস-এর সঙ্গে সংযুক্ত সকল প্রধান প্রতিষ্ঠান, সংগঠন এবং সংস্থার শীর্ষ কার্যকর্তা সমিতি, এ শহরে আয়োজিত তাঁদের এক অনুষ্ঠানে আগামী ১ থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, নয়া দিল্লির নতুন করে সেজে ওঠা প্রগতি ময়দানে প্লাস্টইন্ডিয়া ২০২৩, একাদশতম আন্তর্জাতিক প্লাস্টিকস্ প্রদর্শনী, সম্মেলন ও অধিবেশন-এর কথা ঘোষণা করলো। প্লাস্টইন্ডিয়া ২০২৩-এর লক্ষ্য হবে উদ্ভাবন, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং অগ্রগতি, যা অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে পরিচ্ছন্ন পরিবেশ এবং সংরক্ষণকারী অর্থনৈতিক প্রগতির দিকে অগ্রগামী করবে। এই ঘোষণার সময় এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিল্প, বাণিজ্য এবং উদ্যোগ দপ্তরের সচিব তথা চেয়ারপার্সন ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডব্লুবিআইডিসি শ্রীমতী বন্দনা যাদব, আইএএস; পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অর্থ দপ্তরের কমশনার অফ কমার্শিয়াল ট্যাক্সেস, জনাব খালিদ আজিজ আনোয়ার, আইএএস; চেয়ারম্যান, এনএবি – প্লাস্টইন্ডিয়া ২০২৩ শ্রী অশোক গোয়েল; প্লাস্টইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন-এর প্রেসিডেন্ট শ্রী জিগীশ দোশি; প্লাস্ট ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন – এনইসি-র চেয়ারম্যান শ্রী অজয় শাহ প্রমুখ।প্রগতি ময়দানের মোট ৪.২ মিলিয়ন বর্গফুট নির্মাণ এলাকাব্যাপী প্রদর্শনী অঞ্চল জুড়ে ১৫০ একর স্থান নিয়ে ‘‘প্লাস্টইন্ডিয়া ২০২৩’’ অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানটি ইতিমধ্যেই যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে এবং স্থান ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ বিক্রয় হয়ে গেছে। সারা পৃথিবী থেকে প্রায় ২০০০ প্রদর্শনকারী তাঁদের পণ্য ও প্রযুক্তি নিয়ে এখানে আসতে চলেছেন। প্রগতি ময়দানের নতুন পুরোনো মিলিয়ে সব কটি প্রদর্শনী কক্ষ ইতিমধ্যেই বুকিং হয়ে গেছে।গত তিন দশকে ভারতে প্লাস্টিক উৎপাদন এবং ব্যবহার বহুগুণ বেড়ে গেছে। ২০২১-২২ সালে প্লাস্টিক-এর ব্যবহার আনুমানিক ২২ এমএমটি ছিল, ১৯৯০-এ যার পরিমাণ ছিল মাত্র ০.৯ এমএমটি। এই শিল্প প্রায় ৪ মিলিয়ন বা ৪০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান ঘটিয়েছে এবং রয়েছে ৫০,০০০ উৎপাদন ইউনিট, যার ৮০% ক্ষুদ্র এবং মাঝারি উদ্যোগ। ২০২৫ সাল নাগাদ এই ক্ষেত্রটি ৯.১ লাখ কোটি ছোঁবে বলে মনে করা হচ্ছে।ভারতের পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন রাজ্যে যেমন পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এবং আসামের ভারতের প্লাস্টিক শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সক্ষমতা রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের নিজেরই পলিমার এবং প্লাস্টিক নির্মিত সামগ্রীর ৫ মিলিয়ন টন প্রতি বছর ব্যবহার করার একটি অনুমিত চাহিদা রয়েছে। যার ৪০% পশ্চিমবঙ্গে উৎপাদিত হয় এবং ৫০% অন্যান্য রাজ্য থেকে আসে, – ১০% আসে আমদানি থেকে। ২০২০-২১ সালে রাজ্যে ০.৩৪ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক রপ্তানি করেছিল। এই শিল্প ৫ লাখ মানুষকে কর্মসংস্থার জুগিয়েছে এবং ৫০০০ উৎপাদন কেন্দ্র রয়েছে। গত দশকে সরকারের দুর্দান্ত উদ্যোগ, শিল্প-বান্ধব নীতি এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ এ রাজ্যে প্লাস্টিক শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে।
ফাউন্ডেশন সম্প্রতি একটি ‘ভিজিটর রেজিস্ট্রেশন অ্যাপ’ চালু করেছে প্রদর্শনীকে কেন্দ্র করেই। সারা পৃথিবী থেকে দর্শকরা অ্যাপের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানের জন্য নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারেন। এই অ্যাপটি অনুষ্ঠানে তৎক্ষণাৎ নাম নথিভুক্তির পাশাপাশি ‘আর্লি বার্ড ডিসকাউন্ট’ বা ছাড়ের সুযোগও দেবে।এই প্রসঙ্গে প্লাস্টইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন-এর প্রেসিডেন্ট শ্রী জীগীশ দোশি বলেন, ‘‘প্লাস্টইন্ডিয়ার এই প্রদর্শনী শৃঙ্খল যা প্লাস্টইন্ডিয়া ফাউন্ডেশনের ছত্রছায়ায় অনুষ্ঠিত হতে চলেছে, লগ্নিকারী এবং উদ্যোগপতিদের নিজেদের অস্তিত্বর প্রসারের ক্রমবর্ধমান সুযোগ দেবে। প্লাস্টিক উৎপাদনকারী, প্রোসেসর এবং ব্যবহারকারীদের এটি শুধু একত্রিতই করবে না, ভারতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক ভ্রাতৃত্বকে আরও গভীরভাবে কাছাকাছি এনে দেবে।’’
বছরের পর বছর ধরে, প্লাস্টিক শিল্প নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করেছে যাতে অত্যুন্নত উদ্ভাবনের এবং উন্নত পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি এবং প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশের আর ক্ষতি হচ্ছে না। প্লাস্টইন্ডিয়া ২০২৩-এর উদ্বোধনের মাধ্যমে ফাউন্ডেশন তার ১০টি লক্ষ্যপূরণ করতে চলেছে যা প্লাস্টিক শিল্পকে তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি এনে দেবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।