টেটের ভূল প্রশ্নের খেসারত দিতে বিপুল আর্থিক জরিমানার নির্দেশ হাইকোর্টের
মোল্লা জসিমউদ্দিন টিপু ,
কোন সরকারি অর্থ থেকে আর্থিক জরিমানা নয়, নিজের উপার্জন থেকে বিপুল আর্থিক জরিমানার নির্দেশ দিলো কলকাতা হাইকোর্ট। সর্বমোট ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা দিতে হবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এর সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য কে।এটি একপ্রকার আদালত অবমাননার মামলা ছিল।শুক্রবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অরিজিত গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে উঠেছিল টেট পরীক্ষার্থীদের একাংশের দায়ের করা মামলা টি।টেটের ‘প্রশ্নভূল’ মামলায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এর সভাপতি কে বিপুল আর্থিক জরিমানার নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। এতে খুশি মামলাকারীরা, বিপাকে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এর সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য।২০১৪ সালে টেট পরীক্ষায় ৬ টি প্রশ্ন ভূল ছিল। তৎকালীন সময়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সমাপ্তি চট্টপাধ্যায় বিশ্বভারতী কে বিশেষজ্ঞদের নেতৃত্বে প্যানেল তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই বিশেষজ্ঞ কমিটি রিপোর্টে জানিয়েছিল – ৬ টি প্রশ্ন ভূল ছিল। ২০১৮ সালে ৩ অক্টোবর কলকাতা হাইকোর্ট প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ কে নির্দেশ দেয় – ওই ৬ টি ভূল প্রশ্নের উত্তরদাতাদের নাম্বার দিতে হবে। এই নির্দেশ কার্যকর করেনি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। ১৯ জন টেট পরীক্ষার্থী অভাব অভিযোগ জানাতে গিয়ে নানাভাবে হেনস্তা হয়েছেন বলে অভিযোগ। ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে ফের মামলা দাখিল করেন এরা।শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অরিজিত গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে উঠে এই মামলাটি।প্রায় তিন বছর আদালতের নির্দেশ কার্যকর না করার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এর সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য কে ১৯ জন পরীক্ষার্থী গড়পিছু ২০ হাজার টাকা অর্থাৎ সর্বমোট ৩ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা নিজ উপার্জন থেকে দেওয়ার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি আগামী ৭ দিনে ওই ৬ টি ভূল প্রশ্নের উত্তরদাতাদের নম্বর যুক্ত করার নির্দেশ দেন। পরবর্তী ৭ দিনে এদের নিয়োগের নির্দেশ রয়েছে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য, গত মার্চ মাসের মধ্যেই গত ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র যাচাইয়ের রিপোর্ট জমা দিতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ কে । ওই সময় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের এজলাসে এই মামলার শুনানিতে এহেন নির্দেশ জারি করা হয়েছিল। গত ২০১৪ সালে টেট পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে ৬ টি ভূল প্রশ্ন ছিল, যা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে বেশ কয়েকটি মামলা রুজু হয়েছে। সেখানে বিচারপতি ওই ৬ টি ভূল প্রশ্নের ৬ নাম্বার অতিরিক্ত হিসাবে যুক্ত করার নির্দেশও দিয়েছিলেন । তবে কতজন ওই নাম্বার পেয়ে চুড়ান্ত সফল তালিকায় ঢুকেছেন, তা অস্পষ্ট। তাই প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ কে মার্চ মাসের মধ্যেই ২০১৪ সালে টেট পরীক্ষারর উত্তরপত্র যাচাইয়ের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। উল্লেখ্য গতবছর ২৩ ডিসেম্বর নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে সাড়ে ১৬ হাজার শুন্যপদ পূরণের জন্য ১০ জানুয়ারি থেকে ১৭ জানুয়ারি ইন্টারভিউ এবং ৩১ জানুয়ারি টেটের তৃতীয় পরীক্ষার সময়সূচি জানিয়েছিলেন। যার বিজ্ঞপ্তি গত ২৪ ডিসেম্বর প্রাথমিক শিক্ষক বোর্ড ঘোষণা করে থাকে। এই বিজ্ঞপ্তি কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের এজলাসে মামলা দাখিল করেছেন আইনজীবী ফিরদৌস শামীম। পিটিশনে তিনি উল্লেখ্য রেখেছিলেন যে, – ‘ ২০১৪ সালের টেট পরীক্ষার্থীদের থেকে নিয়োগ হওয়ার কথা।ওই বছরের টেটের প্রশ্নমালায় ৬ টি ভূল প্রশ্ন ছিল, তা আদালতে বিবেচনাধীন রয়েছে। ওই ৬ টি ভূল প্রশ্নের নাম্বার অনেকেই পাননি।তাই লিখিত পরীক্ষায় অনেকেই পাশ করতে পারেননি।সেটা সংশোধন না করে কি করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে’? এরপরই কলকাতা হাইকোর্ট ওই ৬ টি ভূল প্রশ্নের জন্য অতিরিক্ত ৬ নাম্বার যুক্ত করার নির্দেশ দেয়। তাতে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে চুড়ান্ত তালিকায় কারা ওই অতিরিক্ত ৬ নাম্বার পেয়ে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে।তা অস্পষ্ট আদালতের কাছে।তাই বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে চারটি পর্যায়ক্রমে শুনানিতে প্রাথমিক শিক্ষক পর্ষদ কে রিপোর্ট তলব করেছিলেন।গত ২০১৪ সালে টেট পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র যাচাইয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়। যা মার্চ মাসের মধ্যে জমা দিতে হবে বলে নির্দেশ ছিল।শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অরিজিত গঙ্গোপাধ্যায় এই প্রশ্ন ভূল মামলায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এর সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য কে ১৯ জন মামলাকারীদের গড়ে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়ার নির্দেশ দেন।পাশাপাশি আগামী ৭ দিনে ৬ টি ভূল প্রশ্নের উত্তরদাতাদের নম্বর দিয়ে পরবর্তী ৭ দিনের মধ্যে নিয়োগের নির্দেশ জারি করে থাকেন।