Spread the love

চিত্রাঙ্গদা,

সুজান মিঠি,

আমার পিতা তোমাকে চাইলেও
এখন আমি আর তোমাকে চাই না অর্জুন!
সমগ্র মহাভারতের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে
ঘুরে আমি তোমাকে ভালোবাসতেই ভুলে গেছি

ভালোবেসেছি তোমার জ্যেষ্ঠ অথচ সুতপুত্র
কর্ণ কে।

আমি চিত্রাঙ্গদা! মণিপুর রাজকন্যা।
জন্মে নারী হলেও কর্মে আমি বীর!
উত্তর থেকে দক্ষিণ
পূর্ব থেকে পশ্চিম
বাম থেকে ডান
আমি বিস্তার করে রেখেছি আমার কঠিন বাহু,
স্নেহের স্রোত
আমার ছায়ায় কম্পিত হয় দুর্বৃত্তরাজ
আমার মায়ায় শঙ্কিত হয় দারিদ্র্য

কর্ণকে ভালোবাসতে বাসতে
ওর সংকট মুহূর্তে পৌঁছানোর বড় বাসনা আমার…

যে ক্ষণে ধরণীর বুকে বসে যাবে ওর রথের চাকা
বীর যোদ্ধা, বীর হৃদয় কর্ণ ভুলে যাবে তার
অস্ত্র বিদ্যা…
তোমার কানে মন্ত্রণা দেবেন কৃষ্ণ
তুমি গাণ্ডীব তুলে নেবে হাতে…
ঠিক সে ক্ষণে আমি গিয়ে দাঁড়াবো কর্ণের সামনে
তোমার অঞ্জলীক চূর্ণ বিচূর্ণ হবে আমার
দৃষ্টি বাণে
তুমি বিস্মিত হবে! কৃষ্ণ তোমায় আবার
প্রচেষ্টায় নিযুক্ত করবেন
আমি আবার কর্ণের প্রবল যন্ত্রণার সময়ে
ভালোবাসার মন্ত্র উচ্চারণ করবো
আমার শাণিত ওষ্ঠে…
হে পুরুষোত্তম
আমি চিত্রাঙ্গদা। দুর্বল সঙ্গ না।
হৃদয় তোমায় দিয়েছি প্রিয়
নই রূপবতী; আমি বীরাঙ্গনা!

অর্জুন! তোমার প্রবল পৌরুষের ভীত কণ্ঠ
যুদ্ধক্ষেত্রে আমার বজ্রমুঠিতে ছটফট করবে!
তারপর আকাশে ভীষণ প্রখর সূর্য উঠবে
আমি প্রশ্ন করবো তাঁকে…
কেন, কেন?
আমার ভালোবাসা কেন এমন অসহায় মৃত্যুবরণ করবে, যখন আপনি ওর পিতা?

চারিদিকে ঝড় উঠবে অর্জুন!
অনুতাপে সূর্য লুকাবে মেঘে,
অন্ধকার হবে কঠিন!
তোমার শর দিকভ্রষ্ট হবে পুনরায়।

একটা কুটির বাঁধবো কুরুক্ষেত্র ছেড়ে।

একমুঠো মাটি কপালে লাগিয়ে আমার কর্ণ
আমায় বলবে…
বীর বধূ আমার!

অর্জুন! আমার নতুন মহাভারতের এ অধ্যায়ে
আমায় এমন সুখী দেখে তুমি ক্রুদ্ধ হয়ো না

তার চেয়ে বরং মাতা কুন্তীকে বুঝিয়ে
যাজ্ঞসেনীর একলা পুরুষ হয়ো।
যাজ্ঞসেনীর একলা পুরুষ…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *