গোমিরা — মুখা নাচ
ড:ঝন্টু বড়াইক
দক্ষিণ দিনাজপুরের কুশমন্ডি ব্লকের মহিষবাথান গ্রামের প্রাচীন সংস্কৃতি গোমিরা নাচ। নাচ শুরু হওয়ার আগে পুরোহিত পুজো করেন এই বিশ্বাস নিয়ে যে এই নাচের দ্বারা অপদেবতারা দূর হবেন এবং প্রকৃতির আরাধনা করে যাতে ফসল ভালো হয়। এরপর নাচ শুরু হয় মুখোশ পরে (মুখোশ গুলো প্রধানত গামার কাঠের ও আম কাঠের হয়) সঙ্গে থাকে ঢাক, ঢোল, বাঁশি, কাশি ও অন্যান্য বাদ্যযন্ত্র। বৈশাখ মাস থেকে শুরু হয়ে ধান রোপনের আগে পর্যন্ত বিভিন্ন দিনে বিভিন্ন জায়গায় গ্রামবাসীরা নাচের অনুষ্ঠান করে থাকে। এই গ্রামের বাসিন্দারা মূলত রাজবংশীয়। চেহারাতে পার্বত্য ছাপ আছে যেমন কিছুটা চাপা নাক, ছোট চেহারা ও ছোট ছোট চোখ। গ্রামের বাড়ি গুলো আর পাঁচটা সাধারণ গ্রামের মতোই মাটির বাড়ি। ছেলেরা কাঠের কাজ করে মুখোশ বানায়, রঙের কাজ মহিলারা করে থাকেন। প্রথমেই থাকে দুটো চরিত্র “বুড়ো’ আর “বুড়ি” এটা পরিবারে এবং সমাজে বয়স্ক মানুষদের গুরুত্ব এবং সম্মান বোঝাবার জন্য। এরপর আরো বিভিন্ন চরিত্র আসে সবই প্রায় বিভিন্ন দেবদেবীর মুখোশ পরিহিতা। কাঠের মুখোশ গুলো এত ভার হয় যে মাথায় এবং মুখের চারিপাশে মোটা করে কাপড় জড়িয়ে তার ওপর মুখোশ পরা হয়। এইখানেই পুরুলিয়ার ছৌ নাচের সাথে তফাৎ। গোমিরাতে কোন যোদ্ধা নেই।
দক্ষিণ দিনাজপুর, কুশমন্ডি