কাজল মিত্র,
৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বরখাস্ত হওয়া ইসিএল কর্মীকে খুনের কিনারা করলো পুলিশ । মৃতের স্ত্রী-সহ ৩ জনকে গ্রেফতার করল স্থানীয় থানার পুলিশ। মৃত্যুকালীন সুবিধা ও স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি দখলের উদ্দেশ্যেই সুপারি কিলার দিয়ে খুন করায় স্ত্রী, দাবি পুলিশের।৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কুলটি শুট আউটের মামলায় অভিযুক্ত ৩ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ ।খুনের সুপারি দিয়েছিল তারই স্ত্রী, দুদিন আগেই কুলটিতে পরেশ মারান্ডিকে গুলি করে খুন করার ঘটনার ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই খুনের রহস্য পর্দাফাঁস করেছে পুলিশ।আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ তদন্তকারীর দল তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পারে যে পরেশের সমস্ত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির জন্য তারই স্ত্রী মঙ্গলি মারান্ডি বিহার থেকে একজন শুটার ভাড়া করেছিলেন। আর ওই ভাড়াটে শুটারের গুলিতেই পরেশ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। জানা গেছে যে পরেশের স্থাবর-অস্থাবর জমি ও নগদ টাকা ও একটি বাড়ি ছাড়াও অনেক সম্পত্তি রয়েছে। এগুলি ছাড়াও একজন ইসিএল কর্মী হওয়ায় পরেশ মোটা জীবন বীমা এবং অন্যান্য সুবিধাও পান। ফলে তার মৃত্যুতে পরেশের স্ত্রী মঙ্গলি সবচেয়ে বেশি লাভবান হতেন। যার তদন্ত করতে গিয়েই ধীরে ধীরে গোটা ঘটনা প্রকাশ্যে আসে ।
আসানসোল পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি অভিষেক মোদি জানিয়েছেন, ইসিএল কর্মী পরেশ মান্ডি খুনের ঘটনায় মৃতের স্ত্রী সহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।এই পুরো ষড়যন্ত্রের মূল ষড়যন্ত্রকারীরা হলেন মঙ্গলি মারান্ডি, ভিকি নোনিয়া এবং সন্দীপ নোনিয়া। তারা আড়াই লাখ টাকার বিনিময়ে পরেশকে হত্যা করতে রাজি হয়।তাদেরকে ২০ হাজার টাকা অগ্রিম দেওয়া হয়েছিল। এটি একটি সম্পূর্ণ সিনেমার মতো। সন্দীপ নুনিয়া মঙ্গলির কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে বিশাল পাসওয়ান নামে আরেক ব্যাক্তির কাছে যান। সে বিহার থেকে ভাড়াটে শুটার এনেছিল।বুধবার সকালে এক শুটার পরেশকে হত্যা করে বিশালকে নিয়ে পালিয়ে যায়।এ ঘটনায় বিশালসহ তিনজনকে আটক করা হলেও ভাড়াটিয়া শুটারের সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি।অভিযুক্তদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, একটি বাইক, একটি স্কুটার উদ্ধার করা হয়েছে।উল্লেখ্য, বুধবার কুলটির শীতলপুরে পরেশ মারান্ডিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনাটি ঘটেছে শীতলপুরের কাছে তুলসীহির নামক একটি গ্রামে।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রামের পাশের খালি জায়গায় একটি অস্থায়ী ঝুপড়ি দোকান ছিল।ওই দোকানে দেশি মদের লেনদেন হচ্ছিল বলে সন্দেহ স্থানীয়দের। দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা তাকে গুলি করে বলে অভিযোগ। গুলির শব্দ শুনে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থলে পৌঁছে। পরেশ রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়। মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, মদের দোকানে অশান্তির জেরে খুন হয়ে থাকতে পারে পরেশ।তবে ধীরে ধীরে তদন্তে বেরিয়ে আসে সত্যতা। অবশেষে শুক্রবার খুনের মামলায় পরেশের স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে কুলটি থানার পুলিশ।