আর্থারাইটিস; সময়ে চিহ্নিতকরণ এবং চিকিৎসা সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে ফর্টিস আনন্দপুর, কলকাতার প্রথম আর্থারাইটিস ওয়েলনেস ক্লাব চালু করেছে
ফর্টিস আনন্দপুর, কলকাতা প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে কলকাতার প্রথম আর্থারাইটিস ওয়েলনেস ক্লাব এর সূচনা করেছে। এই আর্থারাইটিস ওয়েলনেস ক্লাব , আর্থারাইটিস এর শিকার মানুষের জন্য সর্বাত্মক সহায়তা ব্যবস্থা হিসাবে কাজ করবে। সময়ে রোগ চিহ্নিতকরণ ও অত্যাধুনিক চিকিৎসার পাশাপাশি, অস্ত্রোপচারের আগে ও পরে পূনর্বাসন সহায়তা দিতে এই ক্লাব কাজ করবে। আর্থারাইটিস ক্লাবের মাধ্যমে সকল সদস্যদের জন্য যোগা ও মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার নানা কর্মসূচি রাখা হচ্ছে, তাও সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। এর সঙ্গেই, থাকছে ল্যাব এর নানা পরীক্ষানিরীক্ষা ও রেডিওলজির উপর ১৫ শতাংশ এবং ওষুধপত্র আর বোন হেলথ প্যাকেজে ১০ শতাংশ ছাড় এর মতো নানা সুবিধা।
ডঃ রণেন রায়, ডাইরেক্টর, ফর্টিস আনন্দপুর, কলকাতা, জানালেন, “আর্থারাইটিস এর ব্যপারে সচেতনতা ধীরে ধীরে বাড়ছে, তা সত্ত্বেও এখনো অনেকটা পথ চলা বাকি। আর্থারাইটিস জনিত সমস্যায় ভোগা মানুষজন অনেক সময় জানেনই না কার কাছে, কখন যেতে হবে। আগে শুধুমাত্র প্রবীন নাগরিকরাই আর্থারাইটিস প্রবণ ছিলেন, কিন্তু বর্তমানে পরিবর্তিত জীবনধারার কারণে, এখন যুব সম্প্রদায়ের অনেকেই আর্থারাইটিস এর শিকার হচ্ছেন। আর্থারাইটিস এর নানা লক্ষণ সম্পর্কে না জানার ফলে রোগ নির্ণয়ে বিলম্ব হচ্ছে, দেরি হচ্ছে চিকিৎসাতেও। এর ফলশ্রুতি হিসাবে নানা জটিল সমস্যা উঠে আসছে। মানুষকে সবার আগে জানতে হবে যে এই পরিস্থিতি নিরাময়যোগ্য, বিশেষতঃ যদি আগেভাগে শনাক্ত করা যায়। আর্থারাইটিস অ্যাওয়ারনেস ক্লাব, যে কোন হাড় বা জয়েন্ট সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের ওয়ান স্টপ সেন্টার হিসাবে কাজ করবে। এখানে সময়ে চিকিৎসা সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি বিভিন্ন বয়সের আর্থারাইটিস আক্রান্তদের জীবনযাত্রাকে সুগম করার ক্ষেত্রেও সহযোগিতা মিলবে”।
ফর্টিস আনন্দপুরের কনসালট্যান্ট রিউম্যাটোলজিস্ট ডাঃ অর্ঘ্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এখন সময় এসেছে মানুষকে সচেতন করার যে অনেক আর্থারাইটিস রোগীর কিছু অন্তর্নিহিত ইমিউনোলজিকাল সমস্যা থাকতে পারে। রিউম্যাটিক রোগগুলি প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করা জটিল এবং চ্যালেঞ্জিং। জয়েন্ট এর পাশাপাশি, এটি মস্তিষ্ক, চোখ (ইউভিটিস / শুষ্ক চোখ), ফুসফুস, হৃদয়, কিডনি, লিভার, পেশী (মায়োসাইটিস), রক্তনালী (ভাস্কুলাইটিস), ত্বকের ফুসকুড়ি এবং মুখের আলসারের আকারে শরীরের যে কোনও অংশের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে। এই রোগ নির্ণয় পদ্ধতি এবং রিউম্যাটিক রোগের ব্যবস্থাপনা গত কয়েক দশক ধরে নাটকীয়ভাবে বিকশিত হয়েছে। এর আগে, চিকিত্সার বিকল্পগুলি হিসাবে কেবল ব্যথানাশক এবং স্টেরয়েড পাওয়া যেত। CSDMARDs (কনভেনশনাল সিন্থেটিক ডিজিজ মডিফাইং অ্যান্টি রিউম্যাটিক ড্রাগস), bDMARDs (বায়োলজিক DMARDS), এবং বিভিন্ন ইমিউনোমোডুলেটর সহ নতুন ওষুধগুলি রোগের উপর আরও ভাল নিয়ন্ত্রণ এবং জীবনযাত্রার মান আরও ভাল করতে পারে। এর সঙ্গেই এগুলি রিউম্যাটিক ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত রোগীদের জীবনকে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন করেছে। এ বছর বিশ্ব আর্থ্রাইটিস দিবসের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল-‘ইটস ইন ইওর হ্যান্ডস, টেক অ্যাকশান’। এতে রোগীদের, তাদের যত্নকারি এবং সমাজকে এই রোগ সম্পর্কে সচেতন করার উপর জোর দেওয়া হয়েছে যা, উত্পাদনশীল, ব্যথা-মুক্ত সমাজের দিকে পরিচালিত হয়। আর্থারাইটিস ক্লাব এই উদ্দেশ্যে কাজ করবে”।