TV9 বাংলার নতুন নিউজ সিরিজ ‘পুতুল পুলিশ!’, ৪ ফেব্রুয়ারি, রবিবার রাত ১০টা য়
কলকাতা, ৪ ফেবরুয়ারি: কোর্টের ভর্ৎসনা সত্ত্বেও কি কোনও লাভ হয়েছে? শাহজাহানের বাড়ি ১৯ দিন পর ইডি সিল করেছে। ততদিন তালাই ঝুলেছে। হাফিজ হয়ে যায়নি তো রেশন দুর্নীতির কাগজপত্র? শাহজাহান এখনও ভ্যানিশ! কিন্তু এলাকার মানুষ দিব্বি জানেন শাহজাহান কোথায়!
শুধু পুলিশ রাজ্যপুলিশ টিকির নাগাল পাচ্ছে না সন্দেশখালির বাঘের! বাঘের ডেরায় গিয়ে উকিলমশাই কিন্তু সব কাগজপত্র সইসাবুদ করিয়ে এনেছেন। তারপর ৩১ শে জানুয়ারি বারাসতে আগাম জামিনের আর্জিও করা হয়েছে।
যেমনে নাচাও তেমনি নাচি…। পুলিশ সম্পর্কে এই অদৃশ্য সুতোর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বিমত হতে পারে না। তা আইনকানুন যা-ই হোক না কেন! রাজনীতিকদের অদৃশ্য অঙ্গুলিহেলনে পুলিশের পুতুলনাচ যে কষ্টকল্পনা নয়, বছরের পর বছর ধরে এ রাজ্যে তো তার হাতেগরম উদাহরণ ভূরি ভূরি। ঔপনিবেশিক আমলে প্রজা দমনের জন্য পুলিশের যে খোলনলচে তৈরি হয়েছিল, স্বাধীনতার এত বছর পরও তাতে তেমন বদল আসেনি। ফলে কর্তা বা কর্ত্রীর ইচ্ছায় কর্মটা আইনের রক্ষকদের হাড়েমজ্জায় মিশে আছে।
গত ৫ জানুয়ারি ইডির ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছিল সন্দেশখালিতে। মাস গড়াতে চললেও এখনও অধরা ইডি আধিকারিকদের ওপর হামলার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত, সন্দেশখালির দাপুটে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান। রাজ্যপাল থেকে হাইকোর্ট, সব পক্ষ ভর্ৎসনা করেছে জেলা পুলিশকে। ন্যাজাট থানাকে ‘অব্যাহতি দিয়ে’ আদালত তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছে সিট-এর হাতে। তার পরও কেন শাহজাহানের হদিস মিলছে না, সেই প্রশ্ন উঠছে সর্বত্র। আবার নরেন্দ্রপুরে স্কুলে ঢুকে শিক্ষক নিগ্রহের ঘটনাতেও হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে হাইকোর্টকে।
পুলিশের নানা রূপ দেখে অভ্যস্ত রাজ্যবাসী। শাসকদলের হর্তাকর্তাদের খুশি করতে তাই পুলিশের অতি-সক্রিয়তারও সাক্ষী পশ্চিমবঙ্গ। পালাবদলের পরের বছরই মামুলি কার্টুন শেয়ারের অভিযোগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্রের গ্রেফতারি, শাসকদলের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ায় সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ঝটপট পদক্ষেপ বা মামলার নামে রাতেই হাওড়ার আমতায় আনিস খানের বাড়িতে চড়াও এবং ওই ছাত্রনেতার রহস্যমৃত্যু– সবই পুলিশের অতি-সক্রিয়তার উদাহরণ।
এই ঘটনাগুলিতে পুলিশ কেন দ্রুত দৌড়ঝাঁপ করেছিল, তা সকলেরই জানা। আনিসের অপমৃত্য়ুর পর উঠে এসেছিল সেই রাতের ছবি। যারা আনিসকে ধরতে গিয়েছিলেন, তাঁরা সেদিন জানিয়েছিলেন, বাগনান থানায় আনিসের নামে একটি মামলা রয়েছে। সেই মামলা নিয়ে তাদের ওপর প্রবল চাপ রয়েছে। তাই তাঁরা আনিসকে নিয়ে যেতে এসেছেন। কিছু ক্ষণের মধ্যেই বাড়ির দোতলা থেকে পড়ে মৃত্যু হয় আনিসের। রাজ্যে পুলিশের এই নরম-গরম রূপ অবশ্য় নতুন নয়। ৩৪ বছরের বাম শাসনেও পুলিশের দলদাস চেহারা দেখা গিয়েছে বারবার। এমনকী, নন্দীগ্রামেও পুলিশের গুলিচালনা এবং তাতে গুচ্ছ প্রাণহানি যে পুলিশেরই ব্যর্থতা ও অতি-সক্রিয়তার ফল, সেটা মানবেন যে কেউ।
‘পুলিস কখনো অন্যায় করে না যতক্ষণ তারা আমার পুলিস,’ লিখেছিলেন কবি শঙ্খ ঘোষ। সে কারণেই পুলিশ থেকে যায় পুলিশেই! রক্ষক নয়, ভক্ষকের ভয়ানক ভূমিকা চলে আসে পর্দার বাইরে। আর আমাদের রাজ্যে এমন সব ট্রাডিশন সহজে বদলায় না। পুলিশের এই ভূমিকা তুলে ধরেই TV9 বাংলার নতুন নিউজ সিরিজ ‘পুতুল পুলিশ!’। ৪ ফেব্রুয়ারি, রবিবার রাত ১০টায়।