সেখ সামসুদ্দিন,
প্রথম সারির বাংলা দৈনিকে প্রকাশিত একটি খবর হৈ চৈ ফেলে দেয়, ক্লাস সেভেনের এক ছাত্র পাড়ায় পাড়ায় মিষ্টি বিক্রি করে নিজের পড়াশুনার সাথে সাথে নিজের সংসার চালানোর জন্য পথে ঘুরছে। বাবা অসুস্থ তাই কর্ম ক্ষমতা হারিয়েছে অনেকাংশে, বাড়িতে ছোট বোন। সিনেমার মত শোনালেও এটাই বাস্তব। মা সকালে বানিয়ে দেয় রসগোল্লা-পান্তুয়া-দই আর সেটা পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে বিক্রি করে ছোট্ট সুমন। রসগোল্লার মতন দেখতে ছোট্ট সুমন যেন এযুগের নবীন ময়রা। তার এই জীবন সংগ্রামের খবর সাড়া ফেলে গোটা জেলায়। আমরাও অবাক হই এত কাছে থেকেও এতদিন কোনো খবর আমরা পাইনি এই ব্যাপারে। খবর সংবাদপত্রে দেখেই ছুটে যায় পল্লীমঙ্গলের সদস্যরা। সাময়িক আর্থিক সাহায্যতে পল্লীমঙ্গল বিশ্বাসী না কোনোদিনই, অতীতেও এর উদাহরণ আছে। সুমনের পরিবারের সাথে কথা বলে বুঝি ওর পরিবারের রুটি রুজি দিনে ১৫০পিস মিষ্টি বিক্রি ও ৫ কেজি দই বিক্রি। সেটা হলে তবেই তাদের সংসার চলবে। ঠেলা নিয়ে ঘুরে বেড়াতে হবে না সুমনকে, আর কিছু সামান্য মূলধনের ব্যবস্থা করলে সচ্ছল হতে পারে সংসারের আয়। পল্লীমঙ্গল সমিতি এদিন অতিরিক্ত মূলধন হিসাবে ৫০০০ টাকা সুমনের অ্যাকাউন্টে প্রদান করে এবং প্রতিদিন ২০০ পিস মিষ্টি ও ৫ কেজি দই যাতে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে না বেচতে হয় তার জন্য শক্তিগড়ের একটি বিখ্যাত ল্যাংচা দোকানের সাথে চুক্তি করে দেয়হ এর ফলে সরাসরি আর্থিক সাহায্য না হলেও পরিবারটির স্থায়ী ও নিয়মিত আয়ের ব্যবস্থা হবে। সুমন মন দিতে পারবে লেখাপড়ায় বলে জানান পল্লীমঙ্গল সমিতির পক্ষে সন্দীপন সরকার। শক্তিগড়ে পাওয়া যাবে এই মিষ্টি, সেই দোকানের মালিক সৌমেন সাহা জানান তাদের দোকানে সারাদিনে প্রায় ৫০০০ পিস মিষ্টি বিক্রি হয়, সেখানে ২০০ পিস মিষ্টি কারুর থেকে কিনে যদি তার পরিবারের পাশে দাঁড়াতে পারি সে আর এমন কি ! এদিন জামালপুরের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা “আকাশ” ও এগিয়ে আসে। তারাও এদিন সুমনের বাড়িতে যায় তার প্রয়োজনীয় বই খাতা ও শিক্ষাসামগ্রীর লিস্ট নিয়ে যায়। তারা তা পৌঁছে দেবে ওর কাছে বলে জানান আকাশের পক্ষে অয়ন চক্রবর্তী।