বাংলা ভাষায় অনূদিত হলো দুই হাজার বছর আগের তামিল সাহিত্য ‘থিরুক্কুরল’
সংস্কৃতি বিনির্মাণের প্রাথমিক যুগে ভারতবর্ষের মানুষকে সৌহার্দের পথ
দেখিয়েছেন যে সব চিন্তাবিদ, দার্শনিক, ঋষি, সন্ন্যাসী তাদের মধ্যে একজন
হলেন তামিলনাড়ুর মণীষী ঋষি থিরুভল্লুভর। দুই হাজার বৎসর আগে জন্ম নেয়া এই
চিন্তাবিদ ছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ মুক্তচিন্তার অধিকারী একজন অসাম্প্রদায়িক
প্রগতিশীল মানুষ। তিনি মনে করতেন পরকালের পুরস্কারের চাইতে ইহকালের
প্রাপ্তির প্রয়োজনীয়তা অধিক গুরুত্বপূর্ণ। তার দেয়া উপদেশগুলো
‘থিরুক্কুরাল’ নামে পরিচিত। তামিল শব্দ ‘থিরু’ সংস্কৃত শব্দ ‘শ্রী’ এর
অনেকটা সমার্থক, আর ‘কুরল’ অর্থ ছোট, ক্ষুদ্র। ছোট ছোট বাক্যে, পদ্যে
তিনি মানুষকে মহৎ, দয়ালু, নির্লোভ, নীতিবান, রুচিশীল অর্থাৎ এক মানবিক ও
সংস্কৃতিময় জীবনযাপনে উৎসাহ দিয়েছেন।
মধ্যযুগ থেকেই তিনি ইউরোপের বিদগ্ধ পণ্ডিতগণের নিকট পরিচিত ছিলেন।
রাশিয়ার বিখ্যাত লেখক লিও টলস্টয় ছিলেন থিরুভাল্লুভার এর মুগ্ধ পাঠক। তার
প্রভাবে মহাত্মা গান্ধী সন্ন্যাসী থিরুভল্লুভর এর অহিংস চেতনার প্রতি
আগ্রহী হয়ে ওঠেন। যা পরবর্তীতে গান্ধীবাদী দর্শনের রূপ লাভ করে। ভারতের
প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ড. এপিজে আব্দুল কালাম মনে করেন থিরুক্কুরলগুলো
পৃথিবীর সর্বকালের সকল মানুষকে এক সৌন্দর্যময় মহৎ জীবন যাপনের সূত্র
শেখায়। তামিল সমাজের সর্বজনশ্রদ্ধেয় এই ঋষিকবি’র ভাস্কর্য ভারত-সিংগাপুর
সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রয়েছে। তামিল ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ রত্ন হিসেবে
বিবেচিত এই শ্লোকগুলো এম রাজারামকৃত ইংরেজি অনুবাদ থেকে বাংলায়
রূপান্তরের ক্ষেত্রে পদ্যে লেখা শ্লোকগুলোকে গদ্যরূপ দিয়েছেন কুড়িগ্রাম
সরকারি মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক সুশান্ত বর্মণ।
অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০২১ উপলক্ষে সুশান্ত বর্মণের অনুবাদে প্রকাশিত
হয়েছে থিরুভল্লুভরের ‘থিরুক্কুরল’। দুই শতাধিক কুরল নিয়ে এ বইটি প্রকাশ
করেছে বাঙ্ময়। প্রচ্ছদ করেছেন কবি ও আলোকচিত্রী রাশেদুন্নবী সবুজ। ১৬০
টাকা মূল্যের এ বইটি বইমেলায় ঘাসফুল প্রকাশনীর স্টলে পা্ওয়া যাবে। এছাড়া
ঢাকায় কাঁটাবনে ঘোড়াউত্রা, রংপুরে বইতরঙ্গসহ অন্যান্য দোকানে পাওয়া
যাচ্ছে। এছাড়াও প্রকাশনীর ওয়েবসাইট (www.bangmoy.com) ও ফেসবুক পেজে
(০১৭৮৩১১৬২৬০) অর্ডার করেও সংগ্রহ করা যাবে।
196 12,89,834