খায়রুল আনাম সম্পাদক সাপ্তাহিক বীরভূমের কথা
জেলায় প্রথম মানবিক প্রকল্পে বৃহন্নলা নাফিসা
সমাজের চোখে ওঁঁরা তেমন একটা সমাদর পায় না। ওঁঁদের জীবনচক্রটা যে ভাবে গড়ে উঠেছে তাতে, সমাজ ওঁঁদের বাঁকা চোখেই দেখে। ওঁঁরা বৃহন্নলা বা সাধারণভাবে মানুষের কাছে ‘হিজড়ে’ নামেই পরিচিত। সমাজে বসবাস করলেও, ‘সমাজচ্যুত’ মানুষের মতো এঁঁরা নিজেদের একটা বৃত্তের মধ্যেই থাকেন। অথচ অন্যের বাড়িতে সন্তান এলে, এঁঁরাই তাঁদের নিয়ে মাতোয়ারা হয় কিছু অর্থের বিনিময়ে। এটাই এঁঁদের জীবিকার্জনের অন্যতম অবলম্বন। যদিও এ নিয়ে এঁঁদের বিরুদ্ধে জোর করে টাকা-পয়সা আদায়ের অভিযোগও ওঠে অনেক সময়। আবার সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচি থেকেও এঁরা দূরে থেকে যায়। তবে, বর্তমান সময়ে বৃহন্নলারা সংঘবদ্ধভাবে সরকারি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাও আদায় করে নিচ্ছে। সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা বৃহন্নলাদের হাতে পৌঁছে দিতে সরকারিভাবে উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে। যার দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো জেলা বীরভূমের পুর শহর রামপুরহাটে। পুর শহর রামপুরহাটে বসবাস করেন বেশকিছু বৃহন্নলা। ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচীতে এখানকার এক বৃহন্নলার দরজায় গিয়ে হাজির হন রাজ্য সরকারের মানবিক প্রকল্পের জেলার নোডাল অফিসার রশ্মি সেন। আর সেখানে পৌঁছে তিনি সরকারের মানবিক প্রকল্পের প্রথম সুবিধা পৌঁছে দেন বৃহন্নলা নাফিসা খাতুনের হাতে। বৃহন্নলারা যাতে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধাগুলি পান, সেই নির্দেশও তিনি দেন তাঁর সঙ্গে উপস্থিত রামপুরহাট মহকুমাশাসক জগন্নাথ ভড়কে। এরপর তিনি রামপুরহাটের আরও চারজন বৃহন্নলার হাতে খাদ্যসাথী এবং পাঁচজন বৃহন্নলার হাতে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কার্ডও তুলে দেন। এঁরা যাতে এইসব কার্ডের সুবিধা পাওয়া থেকে বঞ্চিত না হন, তা সুনিশ্চিত করতে রশ্মি সেন মহকুমা প্রশাসনকে নির্দেশও দেন। বোলপুরেও এদিন রশ্মি সেন চারজন বৃহন্নলার হাতে খাদ্যসাথী এবং স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের কার্ড তুলে দেন। বোলপুর লায়েকবাজারের আরও বারোজন বৃহন্নলা যাতে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পেতে পারেন, সে ব্যাপারে রশ্মি সেনের কাছে আবেদন জানানো হলে তিনি তা সহানুভূতির সঙ্গে দেখা হবে বলে আশ্বাস দেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বৃহন্নলাদের জাতিগত শংসাপত্র, স্বাস্থ্যসাথী কার্ড, প্রতিবন্ধী শংসাপত্র-সহ অন্যান্য সরকারি সাহায্য তুলে দেওয়ারও ব্যবস্থা করা হয় ।।
112 12,89,834