সুরজ প্রসাদ ,
ফের শাসকদলে অন্তর্দন্দ। কর্মাধ্যক্ষ মিঠু মাঝি মঙ্গলবার পদত্যাগ করবেন বলে জানান। পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের নারী ও শিশু এবং সমাজ কল্যাণ দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ মিঠু মাঝি বলেন তিনি দল থেকে পদত্যাগ করছেন না। কর্মাধ্যক্ষ পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন বলে জানান। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি অপমানিত হচ্ছেন। তাঁকে না জানিয়েই সব কাজ করা হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়েই তিনি এই কর্মাধ্যক্ষের পদ থেকে পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি বলেন পরপর দু’বার জেলাপরিষদের জামালপুর আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। এর আগে তিনি বন ও ভূমি দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ হিসাবে কাজ করেছেন। কিন্তু শেষ পঞ্চায়েত নির্বাচনে তিনি জয়লাভ করার পর তাঁকে নারী ও শিশু, সমাজকল্যাণ দপ্তরের কর্মাধ্যক্ষ করা হয়। কিন্তু তাঁকে কোনো কিছু না জানিয়েই সবরকমের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। তাঁর দপ্তরের অধীন যে সমস্ত বিষয় সে সম্পর্কেও তাঁকে কিছু জানানো হচ্ছে না। সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরই তাঁকে জানানো হচ্ছে।
তিনি বলেন গতবছর সবলা মেলা তাঁকে না জানিয়েই গলসীতে করা হয়েছিল। এবছর সবলা মেলা করা হচ্ছে মেমারির সাতগেছিয়ায়। কিন্তু এবিষয়েও তাঁকে কিছুই আগাম জানানো হয়নি। সবকিছু ঠিক করে তাঁকে জানানো হয়েছে। এভাবে দিনের পর দিন তিনি উপেক্ষার পাত্রী হয়ে থাকতে রাজী নন। গোটা বিষয়টি তিনি দলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ সহ জেলা নেতৃত্ব এমনকি খোদ সভাধিপতিকেও জানিয়েছিলেন। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। এমনকি এব্যাপারে কথা তোলায় তাঁকে কার্যত অপমানিতও করা হয়। মিঠু জানিয়েছেন, তিনি ত্রাণ বিভাগেরও কর্মাধ্যক্ষ। সাম্প্রতিককালে আমফানে ক্ষতিগ্রস্থদের সাহায্যের জন্য তিনি প্রতিটি জেলা পরিষদ সদস্যকে ৫টি করে ত্রিপল দেবার দাবী জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁকে অপমান করা হয়। স্বাভাবিকভাবেই তিনি সরকারী অর্থ খরচ করে প্রতিদিন জেলা পরিষদে আসা তিনি মানতে পারছেন না। তাই বাধ্য হয়েই তিনি পদত্যাগ করছেন। যদিও তিনি জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ পদ থেকে ইস্তফা দিলেও তিনি তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদিকা হিসাবে এবং জেলা পরিষদের সদস্য হিসাবেই কাজ করে যাবেন। এমনকি তিনি তৃণমূল ছেড়ে অন্য দলেও যাচ্ছেন না বলে সাফ জানান।
জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথকেও তিনি একহাত নেন।তাঁর কাছে অভিযোগ করতে গেলে তিনি তাঁকেই অপমান করেন।
এই বিষয়ে সভাধিপতি শম্পা ধাড়া বলেন এখনও এব্যাপারে তাঁকে কিছু জানানো হয়নি।তিনি বলেন জেলা পরিষদের সব কর্মাধ্যক্ষই নিজের মত স্বাধীন ভাবে কাজ করেন।কাউকে কাজ বাধা দেওয়া হয় না।
মিঠু মাঝির পদত্যাগ নিয়ে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র তথা জেলা পরিষদের সহসভাধিপতি দেবু টুডু বলেন কোন সমস্যা হতেই পারে।ওসব বড় ব্যাপার নয়।সব আলোচনা করে মিটিয়ে নেওয়া হবে।
এখানে উল্লেখ্য জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের দু’জন বিধায়ক ও একজন সাংসদ কয়েকদিন আগে বিজেপিতে যোগদান করেন। এখন নতুন করে কর্মাধ্যক্ষ মিঠু মাঝির পদত্যাগ কি সেই রকমই কোন ইঙ্গিত। সময়ই এর উত্তর দেবে।
112 12,89,834