সাধন মন্ডল,
পাঁচমুড়ার টেরাকোটার হাতি, ঘোড়া, মনসা চালি সহ নানান সৌখিন শিল্প কর্ম সারা ভারত জুড়ে যার খ্যাতি সেই টেরাকোটা গ্রাম আজ হতাশায় ভুগছে। বাঁকুড়ার টেরাকোটা গ্রাম নামে খ্যাত পাঁচমুড়া গ্রাম তার টেরাকোটার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে শুধুমাত্র বিক্রি বাটার অভাবে আজ চার মাস লকডাউন এর কারণে গ্রামের শিল্পীরা যে শিল্পকর্ম উৎপাদন করেছেন সেই উৎপাদিত দ্রব্য গুলি বিক্রি না হওয়ায় চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন পাঁচমুড়ার টেরাকোটা শিল্পীরা। যদি এই করোনা মহামারী অবিলম্বে শেষ না হয় তাহলে এখানে শতাধিক শিল্পী না খেতে পেয়ে মারা যাবেন যদি অন্য কোন পেশা কে বেছে না নেন। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন শিল্পী টেরাকোটা শিল্পকর্মকে বাদ দিয়ে জন মজুরের কাজে লেগে পড়েছেন সংসার বাঁচানোর তাগিদে। শিল্পী বংশী কুম্ভকার, পতিত কুম্ভকার, লালমোহন কুম্ভকার, বাদল কুম্ভকার রা বলেন পিতৃপুরুষের এই শিল্পকর্মে আর পেট ভরছে না বাবু। তাই বাধ্য হয়ে অন্য পেশা বেছে নিতে হচ্ছে যেতে হচ্ছে মাঠে কাজ করতে শুধু দু’মুঠো পেট ভরে খেতে পাবার জন্য নানান প্রকল্প চালু করেছেন মা মাটি মানুষের সরকার কিন্তু আমাদের মত গরিব শিল্পীদের জন্য শিল্প শ্রী নামে যদি কোনরকম ভাতার ব্যবস্থা থাকত তাহলে আমাদের এই হাল হতো না। সরকার শিক্ষাশ্রী, কন্যাশ্রী, শিল্পীশ্রী, যুবশ্রী সহ একগুচ্ছ প্রকল্প চালু করেছেন কিন্তু আমরা যে তিমিরে সেই তিমিরেই রয়ে গেছি। অবিলম্বে সরকার আমাদের জন্য শিল্পী শ্রী নামে একটি প্রকল্প চালু করলে আমরা দুবেলা দুমুঠো পেট ভরে খেতে পাবো ও শিল্পকর্মে আমাদের মনোযোগ বৃদ্ধি পাবে। শিল্পী বিশ্বনাথ কুম্ভকার বলেন পাঁচমুড়া টেরাকোটা শিল্প আজ ভারতবর্ষে জিআই স্বীকৃত এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে শিল্পীদের ভাতার ব্যবস্থা করলে ভালো হয় নতুবা পাঁচমুড়ার টেরাকোটা শিল্প অচিরেই হারিয়ে যাবে। এছাড়া সরকারি হস্তশিল্প সংস্থা বিশ্ব বাংলা, বঙ্গশ্রী, মঞ্জুশ্রী, এপেক্স সহ সংস্থাগুলি যদি পাঁচমুড়া থেকে শিল্পসামগ্রী কিনে নিয়ে যান তাহলে হয়তো এই শিল্পকর্মটি কে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে। এখানে উল্লেখ্য এই পাঁচমুড়া গ্রামে টেরাকোটা শিল্পী হিসাবে কয়েকজন শিল্পী কে রাষ্ট্রপতি পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়েছে তাছাড়া রাজ্যের পুরস্কারেও সম্মানিত হয়েছেন বেশ কয়েকজন শিল্পী।