বাঁকুড়া বিদ্যাভবনে রক্তদান শিবির, কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা ও ‘বিদ্যারত্ন’ পুরস্কার প্রদান
সাধন মন্ডল বাঁকুড়া:-

বাংলার নবজাগরণের অগ্রদূত, সমাজসংস্কারক ও শিক্ষাবিদ পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ২০৬ তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের উদ্যোগে আজ এক মহতী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে মাল্যদান ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। উদ্বোধন করেন বাঁকুড়া লোকসভার সাংসদ মাননীয় শ্রী অরূপ চক্রবর্তী। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা শাসক নকুল চন্দ্র মাহাত, বিধায়ক মৃত্যুঞ্জয় মুর্মু, জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক ড. শ্যামল সাঁতরা, পুরসভার চেয়ারপার্সন অলোকা সেন মজুমদার, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক জগবন্ধু ব্যানার্জী, বিশিষ্ট সমাজসেবী বিক্রমজিৎ চট্টোপাধ্যায়, জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান, জেলা শিক্ষা অধিকর্তা শুভঙ্কর দাস, পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান হিরন চট্টারাজ, বিশিষ্ট শিক্ষক গৌতম দাস, গৌতম গরাই, স্বাতী ব্যানার্জী , তীর্থঙ্কর কুণ্ডু সহ জেলার এক ঝাঁক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ ও শিক্ষক-শিক্ষিকা।

এই দিনে আয়োজিত রক্তদান শিবিরে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ৯১ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা রক্তদান করেন। মানবসেবার এই মহৎ কাজে অংশগ্রহণ করে তাঁরা বিদ্যাসাগরের জীবনদর্শনকে বাস্তবে রূপ দিলেন।

এছাড়াও জেলার ২১ জন কৃতি ছাত্রছাত্রী, যারা এ বছর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় মেধাতালিকায় স্থান অর্জন করেছে, তাদেরকে ‘কোহিনূর সম্মান’-এ ভূষিত করা হয়। শিক্ষার উৎকর্ষে তাঁদের এই সাফল্য সমগ্র জেলার গর্ব বাড়িয়েছে।

প্রথমবারের মতো এ বছর থেকে বাঁকুড়া জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের উদ্যোগে ‘বিদ্যারত্ন’ পুরস্কার প্রদান শুরু হয়। জেলার ৪৫টি চক্রের মধ্যে নির্বাচন করে তিনটি মহকুমার মোট ৯টি বিদ্যালয়কে একাডেমিক উৎকর্ষ, প্রশাসনিক দক্ষতা, সামাজিক দায়িত্ব, ক্রীড়া-সংস্কৃতি এবং পরিবেশ সংরক্ষণে বিশেষ ভূমিকার জন্য এই মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার দেওয়া হয়।2025 সালের জেলার মহকুমা ভিত্তিক সেরার সেরা বিদ্যালয় পুরস্কার পেয়েছে যথাক্রমে সোনামুখীর ব্রজনাথপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় – বিষ্ণুপুর মহকুমা , খাতড়ার কংসাবতী শিশু বিদ্যালয় – খাতড়া মহকুমা , এবং ওন্দার তালবান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয় – বাঁকুড়া সদর মহকুমা ।

অনুষ্ঠানে প্রায় চার শতাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকার উপস্থিতি অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত ও অনন্য করে তোলে। সমগ্র অনুষ্ঠানটির পরিচালনা ও সঞ্চালনা করেন অধ্যাপক ড. শ্যামল সাঁতরা, সহ-সঞ্চালক হিসেবে ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষক রাধামাধব মুখার্জী।

অনুষ্ঠানের সমাপ্তি পর্বে ড. সাঁতরা ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বলেন,
“প্রতি বছর বিদ্যাসাগরের জন্মজয়ন্তীতে DPSC তে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয় । এবারে তার সঙ্গে যুক্ত হলো জেলার কৃতি শিক্ষার্থীদের ‘কোহিনূর সম্মান’ এবং বিদ্যালয়ভিত্তিক ‘বিদ্যারত্ন’ পুরস্কার প্রদান। শিক্ষার মানোন্নয়ন ও সামাজিক দায়বদ্ধতায় যেসব বিদ্যালয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, তাদের এই স্বীকৃতি জেলার প্রতিটি বিদ্যালয়ের জন্য এক অনুপ্রেরণা। আগামী দিনে আমরা প্রত্যাশা করি জেলার প্রতিটি স্কুলই এই মর্যাদাপূর্ণ আসনে পৌঁছানোর লক্ষ্যে কাজ করে যাবে।”

Leave a Reply