শিক্ষকের লালসার শিকার হয়ে খুন আদিবাসী নাবালিকা ছাত্রীর স্মরণসভা আদিবাসী সম্প্রদায়ের উদ্যোগে

সেখ রিয়াজুদ্দিন বীরভূম
বীরভূমের রামপুরহাট থানার বারোমেশিয়া গ্রামে সপ্তম শ্রেণীর আদিবাসী ছাত্রী তারই স্কুলের ভৌত বিজ্ঞানের শিক্ষক মনোজ পালের লালসার শিকারে খুন হয়ে পড়ে। মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষকের এহেন আচরণে শিক্ষক সমাজ সহ সমস্ত স্তরে কালিমালিপ্ত করে। উল্লেখ্য গত ২৮ শে আগস্ট টিউশনি গিয়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। যদিও পরিবার সেই রাতে স্থানীয় থানায় নিখোঁজ অভিযোগ দায়ের করেন। সেই সাথে সন্দেহের তীর উক্ত শিক্ষকের দিকে তাও পুলিশকে জানান। পুলিশ প্রাথমিক ভাবে শিক্ষককে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেও ব্যার্থ হয়। পরবর্তীতে নিখোঁজের ২০ দিনের মাথায় ফের শিক্ষককে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই আসল রহস্য উদঘাটন হয়। ততক্ষণে নাবালিকার মৃতদেহ টুকরো টুকরো করে বস্তাবন্দি অবস্থায় নালার জলে পাথর চাপা দিয়ে ফেলে দেয়।নাবালিকার পচা গলা বস্তা ভর্তি দেহাংশ উদ্ধার হওয়ায় চাঞ্চল্য ছড়াই এবং উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। ছাত্রী হত্যার আঁচ পড়ে প্রধান শিক্ষকের উপরেও। এনিয়ে আদিবাসী সংগঠন সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে পৃথক পৃথক ভাবে আন্দোলন কর্মসূচি সংগঠিত হয়।২১ শে সেপ্টেম্বর রবিবার আদিবাসী সম্প্রদায়ের উদ্যোগে মৃত ছাত্রীর উদ্দেশ্য একটি স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয় । যদিও আদিবাসী সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠন জমায়েত হলেও কোনো সংগঠনের ব্যানারে লাগানো হয়নি। মৃত ছাত্রীর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন ও ১ মিনিট নিরাবতা পালন করেন। আদিবাসী সম্প্রদায়ের মধ্যে থেকে ১৩ জনের একটি কমিটি গঠিত হয় ছাত্রী খুনের তদন্তের অগ্রগতির স্বার্থে। তারা দাবি করেন এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সাথে শুধু ওই স্কুল শিক্ষক একা জড়িত নেই, এর সাথে আরো অনেকেই জড়িত থাকতে পারেন বলে তাদের অনুমান। ওই নাবালিকা ছাত্রীকে খুন করে প্রমান লোপাটের জন্য যেখানে ফেলেছিলেন সেই জায়গা ওই শিক্ষকের পক্ষে চেনা সম্ভব নয়। ভারত জাকাত মাঝি পরগনার জেলা সভাপতি ঘাসীরাম হেমরম বলেন আমরা প্রশাসনকে ১৫ দিন সময় দিচ্ছি, এর মধ্যে যদি নাবালিকা খুনের সঠিক তদন্ত না হয় তাহলে শুধু বীরভূম কেন গোটা পশ্চিমবঙ্গ আমরা স্তব্ধ করে দেব। এমনকি নাবালিকা খুনের তদন্তে পুলিশের গাফিলতীর বিষয় নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারা। পাশাপাশি প্রধান শিক্ষক সহ ম্যানেজিং কমিটির দিকে ও অভিযোগের আঙুল তুলে।প্রধান শিক্ষককে উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে নালিশ করলেও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় অকালে ঝরে গেল একটা তরতাজা প্রান। উল্লেখ্য মৃতদেহ উদ্ধারের দিন থেকেই আদিবাসী সম্প্রদায়ের লোকজন উত্তেজিত হয়ে ওঠে এবং সেদিন ঘোষণা করেছিলেন রবিবারের কর্মসূচির বিষয়ে। বিশেষ উল্লেখ্য ইতিমধ্যে তদন্তকারী অফিসারকে সরিয়ে অন্য অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে তদন্তের জন্য বলে জানা যায়।

Leave a Reply