জয়েন্ট এন্ট্রান্স টেস্ট এর কাউন্সিলিং কেন আটকে? আজ হাইকোর্টে উচ্চশিক্ষা দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির জবাবদিহি

মোল্লা জসিমউদ্দিন,

বুধবার কলকাতা হাইকোর্টে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার কাউন্সিলিং নিয়ে মামলার শুনানি চলে। ‘জয়েন্ট এন্ট্রান্স টেস্ট ফর মেডিক্যাল এলায়েড সায়েন্স’ কোর্সের কাউন্সিলিং কেন আটকে? তা জানতে এবার উচ্চ শিক্ষা দফতরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারিকে তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট।আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার তাঁকে ভার্চুয়ালি আদালতের উত্তর জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।আদালতের নির্দেশ পালন না হওয়ায় হাইকোর্টে বুধবার চূড়ান্ত ভর্ৎসনার মুখে পড়ে রাজ্য ও জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দ চলতি বছরের মে মাসের মধ্যেই কাউন্সেলিংয়ের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরেও কাউন্সিলিং হয়নি।এদিনের শুনানিতে রাজ্য আদালতে জানায়, -‘কাউন্সিলিং করা যায় কিনা, সেটা ভেবে দেখা হবে।’ এর পরেই বিচারপতি ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, “বারবার নির্দেশের পরেও রাজ্য সেই নির্দেশ কেন মানছে না?” প্রতুত্তরে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেন, “ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ রয়েছে। শীর্ষ আদালত ওবিসি মামলায় স্থগিতাদেশ দিয়েছে।” তখন বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ” কতদিন তারা অপেক্ষা করবেন পরীক্ষার্থীরা ? মেধার সঙ্গে কোন আপস নয়।” প্রসঙ্গত, ওবিসি সংরক্ষণ মামলা নিয়ে জটিলতার কারণে দেরি হয় রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশেও। সর্বভারতীয় বিভিন্ন পরীক্ষা জেইই মেন্স, জেইই অ্যাডভান্সড এবং নিট ইউজি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু রাজ্যে জয়েন্টের ফল প্রকাশে দেরি হয়। এই নিয়েও কলকাতা হাইকোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রাজ্য সরকারকে।বিচারপতির নির্দেশ অনুযায়ী এদিন বোর্ড কিছু তথ্য জমা দেয় হাইকোর্টে। তবে তা যথেষ্ট নয় বলেই মনে করেন বিচারপতি। তাই আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি এবং হায়ার সেকেন্ডারি বোর্ডের কর্তাদের অনলাইনে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। মেডিক্যাল এলায়েড সায়েন্স কোর্সের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা হয়েছিল ১৪ জুলাই, ২০২৪। রেজাল্ট প্রকাশিত হয় ১৪ নভেম্বর। পরীক্ষার ফল প্রকাশের এতদিন পরেও কাউন্সেলিং শুরু না হওয়ায় একাধিক পরীক্ষার্থী আদালতের দ্বারস্থ হন।প্রথমে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর এজলাসে শুনানি চললেও পরে তা যায় বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে। সেখানে বিচারপতি জানতে চান, ‘সার্টিফিকেট ক্যানসেল হয়নি?’ জয়েন্ট এন্ট্রাস বোর্ডের পক্ষের আইনজীবী জানান, -‘বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন’।তা শুনেই বিচারপতির প্রশ্ন—’সুপ্রিম কোর্টে পেন্ডিং থাকলেও কেউ আবেদন করতে গেলে তাঁর কাছে কি বাতিল সার্টিফিকেট থাকবে?’ উত্তরে জানানো হয়—না, সার্টিফিকেট বাতিল হয়নি।তাতে ক্ষুব্ধ বিচারপতি বলেন —’আমি চাই না কেউ বাতিল সার্টিফিকেটের ভিত্তিতে ভর্তি হোক। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও কীভাবে এমন ভর্তি করা হল? এটা বিস্ময়কর।’ এরপরই বিচারপতি একের পর এক প্রশ্ন তোলেন, ‘কবে নোটিফিকেশন জারি করা হয়েছিল?’, ‘কতজনকে হোল্ডে রাখা হয়েছে?’, ‘এসএমএস করে কাস্ট সার্টিফিকেট জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল—তা করা হয়েছে?’জবাবে এজি (অ্যাডভোকেট জেনারেল) আদালতকে জানান, নোটিফিকেশন হয়েছিল ২৩ মে। তবে একাধিক ভর্তির ক্ষেত্রে বিচারপতির আদেশ মানা হয়নি বলেও স্বীকার করেন তিনি। আদালতে আরও জানানো হয়, জয়েন্ট এন্ট্রান্স ২০২৩-এর কাউন্সেলিং হয়ে গিয়েছে, ভর্তি হয়ে গিয়েছে বহুজন। জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের রেজিস্ট্রারকে আদালতে প্রশ্ন করেন বিচারপতি—’আমার অর্ডারের পর আপনারা কী করলেন? এসএমএস বা নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল সার্টিফিকেট জমা দিতে—কিছুই তো করা হয়নি!’ আজ অর্থাৎ বৃহস্পতিবার ফের মামলার শুনানি।

Leave a Reply