‘পুলিশের অনুমতি ছাড়া নবান্ন অভিযান করলে পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে’, কলকাতা হাইকোর্ট

মোল্লা জসিমউদ্দিন,

চলতি সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাস নবান্ন অভিযান সংক্রান্ত মামলায় জানিয়ে দিল -‘ যেহেতু পুলিশ অনুমতি দেয়নি, তাই আগামী ২৮ জুলাই ও ৯ আগস্ট নবান্ন অভিযানের ডাকে কোনও জমায়েত নয়’। নবান্ন অভিযান আটকাতে মঙ্গলাহাট ব্যবসায়ী সমিতির আনা মামলায় জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট।২৮ জুলাই পুলিশের অনুমতি ছাড়া নবান্ন অভিযান করলে পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবে বলে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট । কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ হাওড়ার এক ব্যবসায়ীর দায়ের করা মামলার নির্দেশে চলতি সপ্তাহে জানিয়েছেন, -‘পুলিশের অনুমতি ছাড়া সেদিন নবান্ন অভিযান করা হলে ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষের প্রতিদিনের কাজ যদি বাধাপ্রাপ্ত হয় তাহলে পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে’।মামলাকারী মলয় দত্তের অভিযোগ ছিল -‘তিনি একজন ব্যবসায়ী। হাওড়া মঙ্গলাহাটে তাঁর দোকান। নিত্যধান মুখার্জি রোডে প্রায় ১০০ বছর ধরে তাঁদের পোশাকের ব্যবসা। লাগাতার প্রতিবাদ মিটিং মিছিলের জন্য তাঁর ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এই চিন্তায় উদ্বেগে রয়েছেন তিনি। ২৮ জুলাই নবান্ন অভিযান, মিছিল হলে তাঁদের ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, সে কারণেই তিনি মামলা দায়ের করেছেন’।এই।শুনানিতে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানান, -‘ওই মিছিলের অনুমতি পুলিশ দেয়নি। ফলে মামলাকারীর উদ্বেগের কিছু নেই’। ব্যবসায়ীর পক্ষে আইনজীবী বলেন, -‘আমরা আমাদের বক্তব্য হলফনামা দিয়ে জানাব’। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে, ২৯ জুলাই অন্য আর একটি সংগঠনও নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে। এজি কিশোর দত্ত পাল্টা জানান, -‘সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘুরছে তবে পুলিশের কাছে এখনও এটা নিয়ে কোনও আবেদন আসেনি’। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের নির্দেশ, -‘পুলিশের অনুমতি না থাকা সত্ত্বেও যদি কোনও মিছিল করা হয়, তাতে যদি ব্যবসায়ীদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সাধারণ মানুষের কাজকর্মে অসুবিধা হয়, সেক্ষেত্রে পুলিশ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারবে’।উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা না মেটানো, রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি শূন্যপদে নিয়োগ, আরজি করে ধর্ষণ এবং দক্ষিণ কলকাতা ল কলেজে ছাত্রীর গণধর্ষণ ইত্যাদি ইসুতে ২৮ জুলাই নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছিল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। এই সংগঠনের পাশাপাশি চাকরিহারা শিক্ষক চাকরিপ্রার্থী ও সরকারি চাকরিজীবীদের মঞ্চগুলিও এতে শামিল হবে বলে জানিয়েছে। যদিও পুলিশের কাছে থেকে কোনও অনুমতি তারা পায়নি।অন্যদিকে ৯ অগাস্ট বিজেপির একটি সংগঠন একাধিক দাবিতে নবান্ন অভিযানের ডাক দিয়েছে। ইতিমধ্যেই তাদের সেই অনুষ্ঠানের কর্মসূচির বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার চলছে। কোনও সংগঠনের পক্ষে অনুমতি চেয়ে এখনও হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়নি।সেপ্টেম্বর মাসে এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। অপরদিকে আন্দোলনকারী সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, সঠিক তথ্য উদঘাটনে তারাও আদালতের দারস্থ হচ্ছে।

Leave a Reply