একুশে জুলাইয়ে যানজট নিয়ন্ত্রণে কলকাতা পুলিশের দক্ষতা কে সাধুবাদ জানালো হাইকোর্ট

মোল্লা জসিমউদ্দিন,

অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালনে কৃতিত্ব দেখালো কলকাতা পুলিশ। ‘মানুষের যেন কোনও সমস্যা না হয়’। একুশে জুলাইয়ের মামলা নিয়ে আগেই বলেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। সোমবার এজলাসে বিচারপতি পুলিশের ঢালাও প্রশংসা করলেন।সোমবার তিনি বললেন, “রাস্তা খুব সুন্দর মেইনটেন হয়েছে।” এদিন সকালে এজলাসে বসেই কলকাতা পুলিশকে সার্টিফিকেট দিয়ে দিলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে সতর্ক করে গাইড লাইন দিয়েছিল এই বেঞ্চ। সোমবার এজলাসে বসেই রাস্তার হাল নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে আদালত।এদিন বিচারপতির সঙ্গে সহমত প্রকাশ করেন নিউ আলিপুর থেকে আসা এক আইনজীবীও। তিনি দাবি করেন, -‘আজও অন্য দিনের মতো একই সময়ে তিনি বাড়ি থেকে গাড়ি নিয়ে কোর্টে পৌঁছেছেন’। বিচারপতি ঘোষ বলেন , “আমি তো বরাবর বলি কলকাতা পুলিশের উপর আমার ভরসা আছে।” তবে এরপরেই বিচারপতি ক্ষোভ উগরে দেন একাংশ আইনজীবীদের নিয়ে।সোমবার বার অ্যাসোসিয়েশন প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করেছে, -‘কোনও মামলার একপক্ষ না এলে যাতে সেই মামলায় রায় না দেওয়া হয়।’ সেই প্রসঙ্গ টেনে এবং এজলাস কার্যত আইনজীবী শূন্য দেখে বিচারপতির মন্তব্য, “এইভাবে কোর্টের কাজ এগোনো যাচ্ছে না। আজ রাস্তার যা অবস্থা সকাল সাড়ে ১০ টার মধ্যে কোর্টে পৌঁছনো যায় না এটা আমি বিশ্বাস করি না। আপনারা কাজের জায়গা নষ্ট করছেন”।একুশে জুলাই ধর্মতলায় তৃণমূলের সভা শুরুর আগে কলকাতা মহানগরীতে যান চলাচলে পরিস্থিতি কেমন থাকে সেদিকে নজর ছিল হাইকোর্টের। সপ্তাহের প্রথম দিন তৃণমূলের সমাবেশের দরুন নিত্যযাত্রীদের যাতে ভোগান্তির মুখে পড়তে না হয় তা নিশ্চিত করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সমাবেশ উপলক্ষে গত শনিবার থেকেই শহরে বিভিন্ন জেলা থেকে আসতে শুরু করেছেন তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা।সোমবার সকাল থেকে এই হাওড়া ও শিয়ালদা স্টেশন সহ জেলা থেকে তৃণমূলের কর্মী সমর্থকরা কলকাতা মুখি হন। হাইকোর্ট স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল সকাল ন’টা থেকে এগারোটার মধ্যে কোন মিছিল শহরে করা যাবে না। এই বিষয়টি দেখতে হবে কলকাতা পুলিশকে। হাইকোর্টের দু’ঘণ্টার এই পরীক্ষায় সকাল ১১: ০০ বাজার পর দেখা যায় কলকাতা পুলিশ পুরোপুরি কৃতকার্য হয়েছে। সোমবার সকাল থেকেই কলকাতা শহরের রাস্তায় গাড়ি কম ছিল। বাস মিনিবাস সাধারণ যাত্রীদের জন্য খুব কম পরিমাণে চলাচল করে। এর দরুন কলকাতা শহরে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে ট্রাফিক পুলিশকে বিশেষ বেগ পেতে হয়নি। তবে তার মধ্যেও অফিস-যাত্রীরা যাতে সময় মত গন্তব্যস্থলে যেতে পারে সেদিকে লালবাজারের কড়া নজরদারি ছিল। মেট্রো পরিষেবা স্বাভাবিক থাকায় তাতে ভিড় ছিল উল্লেখযোগ্য। সোমবার সকালে কলকাতা পুলিশ যেভাবে মিছিল আটকে যান চলাচল সামলেছে তাতে তাদের কাজে প্রশংসা করেছেন হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। তিনি বলেছেন ভালোভাবে যান নিয়ন্ত্রণ হয়েছে পুলিশ কাজ করেছে।হাইকোর্টে একজন আইনজীবী জানিয়েছেন, অন্যান্য দিন নিউ আলিপুর থেকে হাইকোর্টে আসতে কুড়ি থেকে ২৫ মিনিট সময় লাগে। সোমবার ওই একই সময় লেগেছে। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ জানান, স্বাভাবিক সময়ে লেগেছে গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে রাস্তায় ট্রাফিকের কোন সমস্যা ছিল না। এদিকে সোমবার কাক ভোর থেকেই ধর্মতলার একাধিক রাস্তা কলকাতা পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দিয়েছিল। যেসব রাস্তা দিয়ে বাস ও অন্যান্য গাড়ি চলাচল করেছে সেখানে যাতে কোন বিঘ্ন না ঘটে তার জন্য সকাল ৯’টা থেকে ১১ টা পর্যন্ত তৎপর ছিল ট্রাফিক পুলিশ। এদিকে সাধারণ মানুষের মধ্যে বেশি অসংখ্য কি একুশে জুলাই রাস্তাঘাটের যান চলাচল পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে না এ কথা জেনে বাড়ি থেকে বের হননি যারা বেরিয়েছেন তাদের প্রধান চলাচলের পথ ছিল মেট্রো। এর মধ্যে বিভিন্ন বাস স্টপেজ গুলিতে সাধারণ মানুষের ভিড় ছিল সকাল থেকে যথেষ্ট। কারণ প্রয়োজনের তুলনায় শহরে বাস মিনিবাসের সংখ্যা ছিল যথেষ্ট কম। মেট্রো রেলে অতিরিক্ত যাত্রী হওয়ায় সোমবার সকাল থেকে বিভিন্ন স্টেশনে মেট্রোরেল চলাচলের সময় গেট বন্ধ হতে সমস্যা দেখা দেয়।

Leave a Reply