এসএসসির নুতন বিজ্ঞপ্তি কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা খারিজ করলো সুপ্রিম কোর্ট, নিয়োগ বিধিতে এসএসসির ক্ষমতা কে মান্যতা
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
সোমবার দেশের সর্বোচ্চ আদালত স্কুল সার্ভিস কমিশনের নতুন নিয়োগের বিধিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বঞ্চিতরা যে মামলা করেছিল তা খারিজ করে দিল । মামলাকারীদের শীর্ষ আদালত প্রশ্ন করেন – ‘সুপ্রিমকোর্ট কি জুয়া খেলার জায়গা?’ দেশের উচ্চ আদালত জানায় -‘এসএসসি বিধিকে চ্যালেঞ্জ করে এই মামলার কোন গ্রহণযোগ্যতা নেই।আদালতের নির্দেশে কোথাও বলা হয়নি পুরনো বিধি অনুযায়ী নিয়োগ করতে হবে। নিয়োগ বিধি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূণ্য অধিকার রয়েছে কমিশনের’। এদিকে মামলার গ্রহণযোগ্যতা নেই শোনার পর মামলাকারীদের পক্ষে আইনজীবী আবেদন প্রত্যাহার করে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিচারপতি এতে রাজি হননি। মামলার শুনানি বেশ কিছুক্ষণ চলার পর এই সিদ্ধান্তের কথা জানালে বিচারপতি বলেন -‘মামলা প্রত্যাহার নয়, তা খারিজ করা হচ্ছে। আইনজীবীদের এমন আচরণ দুর্ভাগ্যজনক’।২৬ হাজার চাকরি বাতিলের পর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে নতুন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় এসএসসি। কিন্তু তাতে বেশ কিছু আপত্তি তুলে কলকাতা হাইকোর্টে যান চাকরি প্রার্থীদের একাংশ। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ তার বিচারপতি সৌমেন সেন ও স্মিতা দাস এই সংক্রান্ত মামলা খারিজ করে দেন। রাজ্যের উচ্চ আদালত থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল -‘এসএসসি বিজ্ঞপ্তিতে কোন হস্তক্ষেপ করা হবে না। এসএসসি এবং পর্ষদ বর্তমান অচলাবস্থার জন্য দায়ী হলেও শূন্য পদ দ্রুত পূরণ করা এখন লক্ষ্য। না হলে আবার নতুন করে জটিলতা তৈরি হতে পারে’। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে বঞ্চিতরা ফের মামলা করেন। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও বিচারপতি সতীশচন্দ্র সংবাদ ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি হয়। সেই শুনানির সময় মামলাকারীদের উদ্দেশ্যে বিচারপতি সঞ্জয় কুমার প্রশ্ন করেন -‘আপনারা কারা যোগ্য না অযোগ্য? অযোগ্যদের তো বার করে দেওয়া হয়েছে। আমরা কোথাও বলিনি যে আগের বিধি মেনেই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। রায়টা ভালো করে দেখুন আমরা বলেছি নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে। কোন বিধির কথা বলা হয়নি।এসএসসি একটি দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা এই অবস্থায় নিয়োগ নিয়ে তারা সিদ্ধান্ত নিতে পারে। যারা বঞ্চিত তাদের যোগ্য বা যোগ্য কোন তালিকাতেই অন্তর্ভুক্ত করা যায় না’। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে ২০২৪ সালে সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চে ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তার ফলে ২৫ হাজার ৭৩৫ জন শিক্ষক এবং শিক্ষা কর্মীর চাকরি বাতিল হয়ে যায়। সেই মামলার বেঞ্চে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে ছিলেন বিচারপতি সঞ্জয় কুমার। সোমবার সেই মামলায় আবেদনে শুনানি শুরু হলে তখন বিচারপতি সঞ্জয় কুমার বলেন, -‘আদালত বিবেচনা করেই রায় দেয়।’ সেই সময় প্রধান বিচারপতি রায় ঘোষণার আগে আমার সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। আমি নিজেও সেই রায় সহমত হওয়ার পর তারপর রায় ঘোষণা হয়েছিল। আমি দুঃখিত আপনাদের দাবি মানতে পারছি না। আদালত মনে করছে না এই মামলার গ্রহণ যোগ্যতা আছে বলে। সোমবার বঞ্চিত চাকরির প্রার্থীদের তরফে বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের পাশাপাশি এই মামলায় আইনজীবী ছিলেন ফিরদৌস শামিম। অপরদিকে এসএসসির পক্ষে আইনজীবী ছিলেন কপিল সিব্বল ও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বঞ্চিত মামলাকারীরা এদিন বড় ধাক্কা খেল সুপ্রিম কোর্টে।