কলকাতা পুরসভায় ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগে ‘পুরাতন’ ওবিসি সংরক্ষণ মানতে বললো কলকাতা হাইকোর্ট

মোল্লা জসিমউদ্দিন, 

চলতি সপ্তাহে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ওবিসি চিহ্নিতকরণ বিজ্ঞপ্তিতে অন্তর্বতী স্থগিতাদেশ দিয়েছে। যার জেরে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণ বিষয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। এমতাবস্থায় বৃহস্পতিবার  কলকাতা পুরসভায় সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পদে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে বলল কলকাতা হাইকোর্ট এর সিঙ্গেল বেঞ্চ । এদিন কলকাতা হাইকোর্টের  বিচারপতি কৌশিক চন্দের নির্দেশ, -‘ওই নিয়োগের জন্য শূন্যপদ কলকাতা পুরসভা পাঠাবে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরকে। সাত দিনের মধ্যে ওই বিষয়ে অনুমতি দিতে হবে দফতরকে। সেই মোতাবেক নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করবে পশ্চিমবঙ্গ মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশন’।কলকাতা পুরসভার  নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নিয়ে বড় নির্দেশ হাইকোর্টের । ওবিসি তালিকা বাতিলের পর, কলকাতা পুরসভারে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। বৃহস্পতিবার হাইকোর্টে ভার্চুয়াল হাজিরা দেন কলকাতা পুরসভার কমিশনার ও রাজ্য মিউনিসিপ্যাল এর আধিকারিক ।ওবিসি বিতর্কের জেরে আগের নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল আদালত। গত বুধবার সেই নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করে দেয় কমিশন। বৃহস্পতিবার হাইকোর্ট জানায়, -‘২০১০ সালের আগের ওবিসি জনগোষ্ঠীকে নিয়ে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে। আইন অনুযায়ী তারা ৭ শতাংশ সংরক্ষণ পাবে’।কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ২০১০ সালের পরে অন্তর্ভুক্ত জনগোষ্ঠীর ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিলের রায় দেয়। অভিযোগ, ওবিসি শংসাপত্র  বাতিলের রায়ের পরেও কলকাতা পুরসভায় সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল পশ্চিমবঙ্গ মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশন। সেই বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। গত বুধবার বিচারপতি  কৌশিক চন্দ কলকাতা পুরসভার কমিশনার এবং কমিশনের চেয়ারম্যানকে হাজিরার নির্দেশ দেন। তাঁদের আইনজীবীরা জানান, -‘ওবিসি সার্টিফিকেট নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের রায় বুঝতে সমস্যা হয়েছে। নিয়োগের আগের বিজ্ঞপ্তি তুলে নেওয়া হয়েছে’। এর পরেই আদালত সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগে ছাড়পত্র দেয়।উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গ মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে মোট ৭৮ শূন্যপদের মধ্যে ‘ওবিসি(এ)’-র জন্য ৮ টি এবং ‘ওবিসি (বি)’-র জন্য ৫ টি পদ সংরক্ষণের কথা বলা হয়েছিল। গত বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের  একক বেঞ্চ তার পর্যবেক্ষণে জানতে চেয়েছিল, -‘গত বছর ২২ মে হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১০ সালের পরে ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল হওয়ার পরেও কী ভাবে সংরক্ষণের কথা জানিয়ে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হল?’ মামলাকারীদের তরফে আদালতে অভিযোগ করা হয় যে, -‘ওবিসি নিয়ে হাইকোর্টের রায় অমান্য করা হচ্ছে। তাই ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে’। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ  জানায়, -‘ওবিসি মামলা দেখিয়ে নিয়োগে কারও হাত বেঁধে দেওয়া হয়নি। ডিভিশন বেঞ্চ রায়ে স্পষ্ট বলে দিয়েছে, ২০১০ সালের আগের ৬৬টি সম্প্রদায়ের ওবিসি সার্টিফিকেট বৈধ। তাদের নিয়ে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালানো হবে’।বিচারপতি কৌশিক চন্দর পর্যবেক্ষণ, -‘দুই দফতর নিজেদের বাঁচাতে একে অপরের উপর দায় চাপাচ্ছে’। শেষ পর্যন্ত হাইকোর্টের নির্দেশে বিজ্ঞপ্তি বাতিল করা হল। নতুন করে কলকাতা পুরসভা শূন্য পদের পরিসংখ্যান দিয়ে পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের কাছে তাদের তালিকা পাঠাবে। সেই তালিকা বিবেচনা করে সাতদিনের মধ্যে অনুমতি দেবে দফতর।সম্প্রতি মিউনিসিপ্যাল সার্ভিস কমিশন কলকাতা পুরসভায় সাব-অ্যাসিসট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার (সিভিল) পদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, মোট ৭৮টি শূন্যপদের মধ্যে ওবিসি (এ)-র জন্য ৮টি, ওবিসি (বি)-র জন্য ৫টি পদ সংরক্ষণের কথা বলা হয়। ওই বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে দায়ের হয় মামলা।

Leave a Reply