চাকরিহারাদের ভাতা প্রদান নিয়ে নুতন মামলা, রায়দান স্থগিত রাখলেন বিচারপতি সিনহা
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে চাকরিহারাদের ভাতা প্রদান নিয়ে নুতন এক মামলার শুনানি চলে । সওয়াল জবাবের পর এই মামলার রায়দানও স্থগিত রাখলেন বিচারপতি।সওয়াল-জবাব পর্বে উঠে আসে “ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তের সঙ্গে মামলাকারীদের স্বার্থ আদৌ জড়িয়ে রয়েছে? কেন মামলাকারীরা ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করবেন?” হাইকোর্টে মামলাকারীদের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী ফিরদৌস শামিম। তিনি জানিয়েছেন , “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি বাতিল হয়েছে ওই কর্মীদের। সেই নির্দেশের অন্য মানে করা হচ্ছে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ রয়েছে এমন বিষয়ে আইনসভা বিপরীত সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।” আইনজীবীর যুক্তি, “কর দেন এমন যে কোনও নাগরিক ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তে বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন। জনগণের টাকা কোথায় খরচ হচ্ছে, তা জানার অধিকার রয়েছে।এর ফলে মামলাকারীদের স্বার্থও জড়িত।” দু’পক্ষের সওয়াল জবাব শোনার পর মামলার রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। প্রসঙ্গত, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০১৬ সালের এসএসসি-র প্যানেল বাতিলের জেরে চাকরি খারিজ হয়ে গিয়েছে ২৫,৭৫২ জন শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীর। শিক্ষকদের নতুন করে নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণি অর্থাৎ অশিক্ষক কর্মীদের জন্য এখনও বিজ্ঞপ্তি জারি হয়নি। এই সময়ের জন্য সরকারি কোষাগার থেকে তাঁদের যথাক্রমে ২৫ হাজার ও ২০ হাজার টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে একের পর এক মামলা দায়ের হচ্ছে হাইকোর্টে।মামলাকারীদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম এদিন সওয়াল করেন, -‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরি বাতিল হয়েছে ওই কর্মীদের। সেই নির্দেশের অন্য মানে করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। আইনজীবীর বক্তব্য, শীর্ষ আদালতের নির্দেশ রয়েছে, এমন বিষয়ে আইনসভা বিপরীত সিদ্ধান্ত নিতে পারে না’। অন্যদিকে, রাজ্য এদিন মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে। রাজ্য জানায়, -‘ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তে মামলাকারীদের কী স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে? তাঁরা কেন ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করবেন? এর জবাবে আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের যুক্তি, কর দেন এমন যে কোনও নাগরিকরা ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন। জনগণের টাকা কোথায় খরচ হচ্ছে তা জানার অধিকার সবার রয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। ফলে মামলাকারীদের স্বার্থও জড়িত।দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে শুনানি শেষ করেন দেন বিচারপতি সিনহা। এর আগে এই মামলার রায় স্থগিত রাখেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা।গত ১৫ মে ওই ভাতা সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। রাজ্যের তরফে ভাতা দেওয়ার জন্য ওই প্রকল্পের নামকরণ করা হয়েছে, ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল লাইভলিহুড অ্যান্ড সোশ্যাল সিকিউরিটি ইন্টারিম স্কিম, ২০২৫।’ আগের দিনের শুনানিতে এই ভাতা নিয়ে একের পর এক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রাজ্যকে বিচারপতি অমৃতা সিনহা প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘যারা এই টাকা পাবেন তাদের থেকে রাজ্য প্রতিদানে কী পাবে? সুপ্রিম কোর্টে একটার পর একটা রিভিউ পিটিশন হতে থাকবে আর এরা টাকা পেতে থাকবেন? বেকারদের জন্য কি রাজ্য এই ধরনের কোনও প্রকল্প চালু করেছে বা চালু করার কথা ভাবছে?’গত ১ এপ্রিল থেকে টাকা দেওয়া শুরু হয়েছে শুনে বিচারপতি জানতে চেয়েছিলেন, কেন এত দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হল?