দাঁড়িভিট তদন্তে গাফিলতি নিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের প্রশ্নের মুখে এনআইএ
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
দাড়িভিটকাণ্ডে রাজ্যের উচ্চ আদালতে তীব্র ভর্ৎসনার শিকার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ । ঘটনার একবছর পার হয়ে গেলেও তদন্তে সেরকম কোনও রকম অগ্রগতি না হওয়ায় এবার কলকাতা হাইকোর্টের রোষের মুখে পড়ল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। এক বছর পেরিয়ে গেলেও তদন্তে নেই কোনও দৃশ্যমান অগ্রগতি। এখনও জমা পড়েনি কোনও অগ্রগতির রিপোর্ট। উত্তর দিনাজপুরের দাড়িভিট কাণ্ডে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ কড়া ভাষায় জানিয়ে দেয়, -‘আগামী ৯ জুলাইয়ের মধ্যে এনআইএ-কে তদন্তের অগ্রগতি রিপোর্ট আদালতে জমা দিতেই হবে’।বিচারপতি চক্রবর্তীর তীক্ষ্ণ প্রশ্ন, “এক বছর আগে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছিল। এনআইএ অফিসাররা কি নিজেদের আদালতের উর্ধ্বে ভাবছেন? যদি এটা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ভূমিকা হয়, তবে অফিসারদের তৈরি থাকতে বলুন। আদালত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জানে।” ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরের দাড়িভিট হাইস্কুল। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, পুলিশের লাঠিচার্জ, ইট-পাথর ছোড়াছুড়ি থেকে বোমা ও গুলিচালনার অভিযোগ ওঠে। সংঘর্ষে মৃত্যু হয় দুই প্রাক্তন ছাত্র – রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মণ-এর। পরিবারের দাবি , -‘তাঁদের সন্তানরা পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। সেই ভিত্তিতেই বিচারপতি রাজশেখর মান্থার সিঙ্গল বেঞ্চ এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। তবে সেই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার ডিভিশন বেঞ্চে যায়। মামলা চলতে থাকে, কিন্তু এনআইএ-এর পক্ষ থেকে এক বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও তদন্তে কার্যত কোনও অগ্রগতি হয়নি’।এদিন আদালতে নিহতদের পরিবার জানান, দুই ছাত্রের দেহ এখনও সংরক্ষণ করে রাখা আছে। পুলিশ অভিযুক্ত হলেও এনআইএ এখনও পর্যন্ত কাউকেই জেরা করেনি। বিষয়টি শুনে বিচারপতি চক্রবর্তী আরও ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, “১৪ মাসে কোনও জিজ্ঞাসাবাদ হয়নি? এনআইএ-এর কাছে তাহলে এই সময়ের মূল্য কী?”এনআইএ-এর পক্ষ থেকে আইনজীবী দাবি করেন, পুলিশের আগের তদন্তেই ভুল ছিল। অভিযুক্ত গুলি উপযুক্ত পদ্ধতিতে সংরক্ষিত হয়নি, তাই তদন্তে বিলম্ব হচ্ছে। কিন্তু এই যুক্তিকে প্রত্যাখ্যান করেন আদালত। বিচারপতির সাফ বার্তা,”আদালতের নির্দেশ মানা হয়নি। এখন অজুহাত খাড়া করবেন না।