দুই আন্দলোনকারী শিক্ষক কে পুলিশি তলবে সাড়া দিতে বললো হাইকোর্ট

মোল্লা জসিমউদ্দিন ,

বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে উঠে পুলিশের অতি সক্রিয়তা বিষয়ক মামলা। বিকাশ ভবন চত্বরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন চাকরিহারা শিক্ষকরা। বিকাশ ভবনের সামনে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগে শিক্ষকদের তলব করেছিল বিধাননগর উত্তর থানার পুলিশ। এই তলবকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে গিয়েছেন ২ শিক্ষক। এদিন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে এই মামলার শুনানি ছিল। এদিন শুনানিতেই বিচারপতি জানিয়েছেন, -:তাঁরা শিক্ষক। বিষয়টি ভুলে যাচ্ছেন কেন?’ কলকাতা হাইকোর্টে যে ২ শিক্ষক মামলা করেছিলেন, তাঁদের থানায় হাজির দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্যের উচ্চ আদালত। কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চ জানিয়েছে, -‘বৃহস্পতিবার সকালেই ২ শিক্ষককে থানায় হাজিরা দিতে হবে’। তবে সরকারের আশ্বাসে ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এখনই কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না বলে জানানো হয়েছে। বুধবারের শুনানিতে আদালত জানিয়েছে, -:একসঙ্গে ৫০ থেকে ১০০ জন বিক্ষোভ দেখাতে পারেন। কিন্তু তার বেশি কখনও নয়। শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনে বাধা দেবে না আদালত। কিন্তু অন্য কারো সমস্যা সৃষ্টি করে আন্দোলন করা যাবে না’।রাজ্যের কথা তুলে আদালত জানিয়েছে, -‘কোর্ট যেমন শিক্ষকদের প্রতি মানবিক, তেমন সরকারও তাঁদের প্রতি মানবিক, চাকরিহারাদের হতাশা রয়েছে। কিন্তু বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে আন্দোলন করা যাবে না’। । বিচারপতি মৌখিক নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কোনও কঠোর ব্যবস্থা নিতে পারবে না পুলিশ।এদিন মামলার শুনানি চলাকালীন রাজ্যের আইনজীবী বলেছেন,-: বিকাশ ভবনের সামনে থেকে সরে মেলা গ্রাউন্ডে বসুন চাকরিহারা শিক্ষকরা। সেখানে শুধু শিক্ষকরাই বসতে পারবেন। বাইরের লোক থাকতে পারবেন না। রাজনৈতিক দলের কেউ থাকতে পারবেন না’।তবে এখনই ওই দুই চাকরিহারা আন্দোলনকারীর বিরুদ্ধে পুলিশ কড়া পদক্ষেপ করতে পারবে না বলেও মৌখিক নির্দেশে জানিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।আদালত জানিয়েছে, আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় তদন্তকারীদের জেরার মুখোমুখি হতে হবে আন্দোলনকারীদের মধ্যে অন্যতম শিক্ষক ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল ও সুদীপ কোনারকে। এরপরই বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টেয় মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এসএসসি-র ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। তাতে ২৫ হাজার ৭৩৫ জনের চাকরি গেছে। এই চাকরিহারাদের একাংশই বর্তমানে বিকাশ ভবনের সামনে অবস্থান করছেন।গত ১৫ মে আন্দোলনের নামে তাঁরা বিকাশ ভবনের ভেতরে কর্মীদের আটকে রাখে এবং আটকে থাকা মানুষজনকে পুলিশ উদ্ধারে গেলে আন্দোলনকারীরা পুলিশের ওপরও আক্রমণ করে বলে অভিযোগ। এ ব্যাপারে পুলিশের তরফে সুয়োমোটো মামলাও দায়ের করা হয়। তদন্তের জন্য আন্দোলনকারীদের কয়েকজনকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠিয়েছিল। এরপরই পুলিশি তদন্তে স্থগিতাদেশ চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। তবে তাঁদের সেই আবেদনে সাড়া না দিয়ে তদন্তে পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য চাকরিহারাদের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

Leave a Reply