পুলিশ লকআপে মারধরের ঘটনায় আইজি মুরলীধর শর্মার নেতৃত্বে সিট গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের 

মোল্লা জসিমউদ্দিন, 


 মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাস মেদিনীপুরে পুলিশি হেফাজতে  ছাত্রীদের অত্যাচারের ঘটনায় আইজি মুরলিধর শর্মার নেতৃত্বে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দিল। দুই নেত্রী  সুশ্রীতা সোরেন এবং সুচরিতা দাস-সহ অন্যদের মেদিনীপুর মহিলা থানায় নিয়ে গিয়ে অত্যাচারের অভিযোগ প্রমাণিত বলে এদিন জানিয়ে দিলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।উল্লেখ্য, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে  ১ মার্চের অশান্তির ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মেদিনীপুরে দু’টি ছাত্র সংগঠনের প্রতিবাদসভা থেকে ছাত্রনেত্রীদের তুলে নিয়ে গিয়ে মেদিনীপুর মহিলা থানায় অকথ্য অত্যাচারের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন সুচরিতা দাস ও সুশ্রীতা সোরেন নামে দুই  নেত্রী । পৃথক দু’টি মামলায় সোমবার দীর্ঘ শুনানি চলে কলকাতা হাইকোর্টে।সুশ্রীতা সোরেন-সহ চার তরুণীকে মহিলা থানায় তুলে নিয়ে গিয়ে প্রায় ১৬ ঘণ্টা আটকে রেখে অত্যাচারের অভিযোগ মামলায় এদিন নির্দেশ দিল  রাজ্যের উচ্চ আদালত। অভিযোগ,  কুহেলি সাহা নামে এক কনস্টেবল সুচরিতাকে অত্যাচার করে থানার ভিতরে। সুশ্রীতার ক্ষেত্রেও পুলিশ মিথ্যে অভিযোগের নথি তৈরি করে জাল অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট তৈরি করেছে বলে রায়ে উল্লেখ করেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। বিচারপতি আরও  জানান, -‘দু’টি ক্ষেত্রেই মেদিনীপুর জেলা মানবাধিকার আদালতে পরবর্তী বিচার প্রক্রিয়া হবে’। আইজি মুরলী ধর শর্মার নেতৃত্বে সিট তদন্ত চালাবে দু’টি ক্ষেত্রেই, নির্দেশ হাইকোর্টের। এক্ষেত্রে পুলিশের কোনও সাহায্য নেওয়া যাবে না। আইপিএস মুরলীধর শর্মাকে এফআইআর দায়ের করতে হবে। অভিযুক্ত উইনার্স টিমের মহিলা কনস্টেবল কুহেলী সাহার বিরুদ্ধে তদন্ত জারি থাকবে। ফৌজদারি মামলার পরবর্তী শুনানি হবে পশ্চিম মেদিনীপুর ডিস্ট্রিক্ট কোর্টের সেশন জাজের মানবাধিকার আদালতে। অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত ও ক্ষতিপূরণের বিষয়টি শুনানির পর নির্ধারিত হবে।এই মামলায় বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ আইজি (প্রশিক্ষণ) আইপিএস মুরলীধর শর্মাকে তদন্তের নির্দেশ দেন। এবং সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা-সহ পুলিশের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ খতিয়ে দেখে তাঁকে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।মঙ্গলবার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ সেই জোড়া মামলার রায় দিলেন। রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি জানান -‘আইজিপি মুরলীধর শর্মার রিপোর্টে দেখা গিয়েছে যে উইনার্স টিমের মহিলা কনস্টেবল কুহেলী সাহা মামলাকারী সুচরিতা দাসের চুলের মুঠি ধরে টেনেছেন, ধাক্কা দিয়েছেন ও তাঁকে মারধর করা হয়েছে। এই ঘটনার তদন্ত জারি থাকবে।আইজিপি মুরলীধর শর্মার নেতৃত্বে একটি সিট গঠন করতে হবে। সিটে বাকি সদস্য কারা থাকবেন, তা তিনিই ঠিক করবেন। মুরলীধর শর্মাকে ঘটনায় এফআইআর দায়ের করতে হবে। এক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্র সচিবকে সবরকম সাহায্য করতে হবে। এক্ষেত্রে পুলিশের কোনও সহায়তা নেওয়া যাবে না। পশ্চিম মেদিনীপুরের ডিএসপি (এডমিনিস্ট্রেশন) যে রিপোর্ট দিয়েছেন, তা আদালত খারিজ করে দিয়েছে। আদালতের  পর্যবেক্ষণ, -‘তিনি যে রিপোর্ট দিয়েছেন তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। এবং সিসিটিভি ফুটেজেও সেই ঘটনা নেই’।আগামী জুলাই মাসে এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। 

Leave a Reply