‘কলকাতার কোনও ট্রামলাইন যেন বোজানো না হয়’, নির্দেশ প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
মঙ্গলবার মহানগরের প্রাচীন ঐতিহ্য রক্ষা করতে ফের সচেতন হতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট । ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, -‘কলকাতার কোনও ট্রামলাইন যেন এখনই বুজিয়ে ফেলা না হয়’। কলকাতার ট্রামের উন্নতির জন্য তৎপর কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম। কলকাতায় ট্রাম বাঁচিয়ে রাখার মামলায় তাঁর গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য, “ট্রামগুলোর যা অবস্থা তাতে তিন কোটি টাকার বেশি লাগবে না। আন্তর্জাতিক মানের করতে সুরক্ষা দিতে এটুকু টাকার প্রয়োজন।”প্রধান বিচারপতির প্রস্তাব মতোই যাতে কোনও বেসরকারি সংস্থা এতে যুক্ত হয় তাদের আহ্বান জানানো হয়েছে।আলিপুর এলাকায় ট্রামলাইন বুজিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ এসেছিল। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে ট্রাম চলাচল বন্ধ ছিল। তবে কারা এটা করেছে তা এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশ খতিয়ে দেখছে। পরিবহণ দফতর বলছে, তারা এখনও জানে না কারা করেছে। কারণ পরিবহণ দফতর এই রকম কোনও নির্দেশ দেয়নি।প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ ১) আপাতত ট্রামলাইন বুজিয়ে ফেলা বন্ধ রাখতে হবে। যতদিন না নির্দিষ্ট কমিটি কলকাতার সমস্ত লাইন পরিদর্শন করে আদালতে রিপোর্ট জমা না দিচ্ছে।২) খিদিরপুর ট্রামলাইনের বিলুপ্তির বিষয়ে কলকাতা পুলিশকে তদন্ত করে রিপোর্ট দিতে হবে হাইকোর্টে।, উল্লেখ্য, ১৯ ফেব্রুয়ারি কমিটি বৈঠকে বসবে। তাতে লাইন বুজিয়ে ফেলার বিষয়টি আলোচনায় উঠবে। এই সংক্রান্ত রিপোর্ট আদালতে জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।আদালত নিযুক্ত নির্দিষ্ট কমিটির পরিদর্শন রিপোর্ট আসা পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হবে ট্রামলাইন বোজানোর কাজ। রাজ্যের আইনজীবী জানান, “রাজ্য, কলকাতা পুলিশ- সহ অন্যান্যদের নিয়ে গঠিত কমিটিকে জানিয়েছি যাতে অন্তত একটা রুট, ‘ময়দান থেকে খিদিরপুর’ রুটে পিপিপি মডেলে ট্রাম চালানো যায়। প্রধান বিচারপতির প্রস্তাব মতো, যদি কোনও বেসরকারি সংস্থা যুক্ত হতে চায়, তাদেরও আহ্বান জানানো হয়েছে।অবিলম্বে কলকাতায় ট্রামলাইন বুজিয়ে ফেলার কাজ বন্ধ করতে হবে। গত মাসেই এই নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, ট্রামলাইন বুজিয়ে ফেলার বিষয়ে ছবি-সহ রিপোর্ট রাজ্যকে জমা করতে হবে আদালতে। হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ, রাজ্যকেই ট্রাম বাঁচাতে উদ্যোগী হতে হবে। প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ ” ট্রাম রাজ্যের ঐতিহ্য। তা তুলে দেওয়া খুব সহজ কাজ। কিন্তু রাজ্যকেই ট্রাম বাঁচাতে উদ্যোগী হতে হবে।”শহরের রাস্তায় ট্রাম ফিরিয়ে আনার দাবিতে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল একটি নাগরিক সংগঠন। তারা অভিযোগ করেছিল, রাস্তায় যাতে ট্রাম চলতে না পারে, তাই কালীঘাট, ভবানীপুর, জাজেস কোর্ট, খিদিরপুরে ট্রামলাইন পিচ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। গত মাসেই সেই লাইন বুজিয়ে ফেলার কাজ অবিলম্বে বন্ধ করতে বলে কলকাতা হাইকোর্ট।