মোল্লা জসিমউদ্দিন,
শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে বড়সড় আইনী ধাক্কা খেলেন আরজিকর দুর্নীতি মামলায় মূল অভিযুক্ত সন্দীপ ঘোষ । সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে চার্জ ফ্রেম করার অনুমতি মিলেছে রাজ্যের। নিম্ন আদালত অর্থাৎ আলিপুর আদালতে সিবিআই এজলাসে চলছে দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার পদক্ষেপ । তার মাঝে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ আরজিকর দুর্নীতি মামলার অভিযোগে অভিযুক্ত সন্দীপ ঘোষ ও আশীষ পাণ্ডে। তাঁদের দাবি -‘কলকাতা হাইকোর্টের আদেশের পুনর্বিবেচনা করা হোক’।আরজি কর দুর্নীতি কাণ্ডে অভিযুক্ত সন্দীপ ঘোষ এবং আশীষ পান্ডের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছেন আকতার আলি। এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কয়েকদিন আগে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ নিম্ন আদালত (আলিপুর আদালত) কে দ্রুত শুনানির নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশ মেনে গত বৃহস্পতিবার ট্রায়াল শুরু করার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে নিম্ন আদালত। এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসের দ্বারস্থ সন্দীপ ঘোষ ও আশিস পাণ্ডে।এদের দাবি, -‘বিচারপতি নিম্ন আদালতকে যে দ্রুত শুনানির নির্দেশ দিয়েছেন সেটার পরিবর্তনের প্রয়োজন রয়েছে’।আবেদনকারীর আইনজীবী বলেন, -‘হাইকোর্টের ওই নির্দেশের ফলে সিবিআই তিন দিনের মধ্যে চার্জ ফ্রেম করতে চাইছে। যা বাস্তবে অসম্ভব। তাই হাইকোর্টের আগের দেওয়া রায় পুনর্বিবেনার প্রয়োজন। সিবিআই-এর তরফে আমরা আগে কোনও নথি পাইনি। এখন বিশেষ আদালতের নির্দেশের পরে সেই নথি আমাদের দেওয়া হচ্ছে। কারণ ১০ হাজার পাতার চার্জশিট দিয়েছে সিবিআই। সেটা পড়ার প্রয়োজন রয়েছে দ্রুত শুনানি হলে অভিযুক্তদের পক্ষে সেই মামলা অংশগ্রহণ করা সম্ভব নয়। তাই এই আবেদন তাদের’। এই বক্তব্য শোনার পরও সময়সীমা বাড়ানোর আবেদন খারিজ করে দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে তার দ্রুত শুনানির আবেদন করেন আইনজীবীরা। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ বলেন, -‘অতিরিক্ত সলিসিটার জেনারেলকে নোটিশ পাঠিয়ে ফের আবেদন করুন। নিম্ন আদালতে গিয়ে আপনারা আপনাদের বক্তব্য পেশ করুন। কেন আমি সাত দিনের মধ্যে বিচার শুরুর নির্দেশ দিয়েছিলাম, কারণ আরজি কর দুর্নীতির মামলায় বিচারে সিস্টেমেটিক ডিলে করা হচ্ছে। কে করছে, কেনও করছে আমি সেই দিকে যাচ্ছি না। কিন্তু গত নভেম্বরে চার্জশিট দেওয়ার পরেও ট্রায়ালে দেরি হচ্ছে এটা লক্ষ্য করেছি’।কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী ৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আলিপুর আদালতে চার্জ গঠন করতে চাইছে সিবিআই।উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের এজলাসে মুখ বন্ধ খামে এই মামলায় রিপোর্ট জমা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সেই সময়েই তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন – ‘আরজিকর হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতি মামলায় নিম্ন আদালতকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বিচার শুরু করতে হবে’।আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতি মামলাতে গত বৃহস্পতিবার তদন্তকারী অফিসারকে শো-কজ় করেন আলিপুর বিশেষ আদালতের বিচারক। সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ এবং চার্জ গঠনের জন্য রাজ্যের সম্মতি পাওয়া গিয়েছিল গত ২৭ জানুয়ারি। ২৮ জানুয়ারি হাইকোর্টে স্টেটাস রিপোর্ট-সহ রাজ্যের সম্মতি দেওয়ার বিষয়টি জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। কিন্তু ৩ দিন কেটে গেলেও সেই সম্মতির বিষয়টি লিখিতভাবে জানানো হয়নি নিম্ন আদালতে। কেন মামলার এই গুরুত্বপূর্ণ নথি নিম্ন আদালতে জমা দিতে দেরি হলো? তা লিখিতভাবে তদন্তকারী অফিসারকে আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আলিপুর আদালতে সিবিআই এজলাসের বিচারক।