মোল্লা জসিমউদ্দিন
মঙ্গলবার সিটি সেশন কোর্ট নির্দেশ দিল যে, ‘এসএসকেএম ছাড়াও অন্য হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে পারবেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়’। তবে সেইসঙ্গে আদালতের তরফে এও বলা হয়েছে, পার্থকে এসএসকেএম থেকে বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা যেতে পারে।তবে সেখানে গেলে তার দায়িত্ব এবং খরচ, সবকিছুই প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে নিজেকেই বহন করতে হবে ‘।গত ২৩ জানুয়ারি শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার কারণে পার্থকে প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার থেকে এসএসকেএম হাসপাতালের ইমার্জেন্সি অবজারভেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয় । তবে হাসপাতালে আসার পর থেকেই তিনি খাবার খাচ্ছিলেন না । তাই তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ছিল । সেইসঙ্গে পার্থর শরীরে ক্রিয়েটিনিন, পটাশিয়াম, সোডিয়ামের মাত্রাতে গোলমাল দেখা যায় । তাই হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ সরোজ মণ্ডলের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়।তবে এদিন আদালতে পার্থ আইনজীবী আবেদন জানিয়েছেন, -‘পার্থকে অন্যত্র স্থানান্তরিত করানোর’। কারণ হিসাবে বলা হয় আরও ভালো চিকিৎসা। এরপরেই হাসপাতালের কাছে রিপোর্ট চায় আদালত। আর সেখানেই উল্লেখ থাকে ধীরে ধীরে অবস্থার উন্নতি হচ্ছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তারপরেই আদালত নির্দেশ দেয়, যদি এসএসকেএম ছাড়া অন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হলে নিজেকেই পুরো খরচ চালাতে হবে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে ।প্রাক্তন মন্ত্রী চাইছেন যে হাসপাতালে যথাযথ চিকিৎসা হবে সেখানেই যেন তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয়। এই মর্মে বিশেষ সিবিআই আদালতে আবেদন জানিয়েছেন পার্থর আইনজীবী। এর প্রেক্ষিতে এসএসকেএম কর্তৃপক্ষের কাছে প্রাক্তন মন্ত্রীর মেডিক্যাল রিপোর্ট তলব করে নগর ও দায়রা আদালত।গত সোমবার থেকে এসএসকেএমে ভর্তি রয়েছেন পার্থ। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছিল। জানা যাচ্ছে, এখনও সেখানেই রাখা হয়েছে তাঁকে। কারণ, শারীরিক অবস্থান আরও অবনতি হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে , প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর কিডনি ও ফুসফুসের সমস্যা ছিলই। বাড়তি বিড়ম্বনা হিসেবে ক্রিয়েটিনিন, পটাশিয়াম, সোডিয়ামের মাত্রাতে গোলমাল দেখা দেয়।পরিস্থিতির জন্য অবশ্য পার্থর খাদ্যাভ্যাসকেই দায়ী করেছেন চিকিৎসকদের একাংশ। চিকিৎসকদের বক্তব্যের সঙ্গে সহমত জেল কর্তৃপক্ষও। তাঁদের মতে, এই বয়সেও খাদ্যাভ্যাসের ক্ষেত্রে পার্থর বেপরোয়া মনোভাব , যা নানাবিধ শারীরিক অসুস্থতার একটা বড় কারণ।নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত পার্থ গত আড়াই বছর ধরে জেলে। ২০২২ সালের ২২ জুলাই তাঁকে গ্রেফতার করেছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা। ইডির পাশাপাশি পরে সিবিআইয়ের হাতেও গ্রেফতার হন পার্থ। জেলের ভিতর একাধিক বার তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। গ্রেফতারির পর ভুবনেশ্বর এমসে নিয়ে গিয়েও তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করায় ইডি। একাধিক বার তিনি শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে জামিনের আবেদনও করেছেন আদালতে।