ডিভিসির জলছাড়া নিয়ে অধীর চৌধুরী কে  জনস্বার্থ মামলা প্রত্যাহার করতে বললো কলকাতা হাইকোর্ট

মোল্লা জসিমউদ্দিন

সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীকে ডিভিসি বিষয়ক মামলা প্রত্যাহার করে নিতে বলল।গত বছর রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এতে বিপদে  পড়েছিল সাধারণ মানুষ। তাই নিয়ে শুরু থেকে ডিভিসির জল ছাড়াকে দায়ী করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এই নিয়ে বিস্তর বিতর্ক  হয়। এই বিতর্কে জনস্বার্থ মামলা করতে চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের  দ্বারস্থ হয়েছিলেন বহরমপুরের প্রাক্তন সাংসদ তথা বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতা  অধীর রঞ্জন চৌধুরী। এবার তাতেই বড় নির্দেশ দিল আদালত। এই মামলার শুনানি পর্বে আদালত জানতে চাইলো –‘তথ্য কোথায়?’ ডিভিসির জল ছাড়া বিতর্ক নিয়ে জনস্বার্থ মামলা করতে চেয়ে গত বছর রাজ্যের উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অধীর। গত বৃহস্পতিবার সেই মামলা শুনানির জন্য ওঠে। তখনই মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ। অধীরের আইনজীবীকে প্রধান বিচারপতি জিজ্ঞেস করেন, ‘তথ্য কোথায়?’এদিন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির আইনজীবীর উদ্দেশে হাইকোর্টের  প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আপনার প্রথমে তথ্য সংগ্রহ করা উচিত। সংবাদপত্রের দু’টি পাতা তুলে ধরে মামলা করেছেন। সেখানে কত জল সংরক্ষণ করা হয়? কখন ডিভিসির জল ছাড়ে? জল ছাড়ার ক্ষেত্রে কোন পদ্ধতি মানা হয়? তথ্য কোথায়?’এখানেই না থেমে বিচারপতি শিবজ্ঞানম  আরও বলেন, ‘এর আগেও আপনি জনস্বার্থ মামলা করেছেন। আমরা সেটা গ্রহণ করেছি ও নির্দেশ দিয়েছি। তবে এই মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে’। এদিন প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, -‘ মামলাকারী অধীর চারবারের সাংসদ। সেই সঙ্গেই তিনি প্রাক্তন  প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। কীভাবে কাজ হয় সেটা তাঁর অজানা নয়। তাঁর হাইকোর্টের সাহায্য প্রয়োজন নেই’। প্রসঙ্গত,  ডিভিসির  জল ছাড়া বিতর্ক নিয়ে গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অধীর। তাঁর দাবি ছিল, -‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি তাঁর দফতর, ডিভিসির জল ছাড়া নিয়ে কে সঠিক কথা বলছেন সেটা তিনি জানতে চান।’ উল্লেখ্য, রাজ্যে যখন বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তখন শুরু থেকে তার জন্য ডিভিসিকে দায়ী করেছিলেন মমতা।মুখ্যমন্ত্রীর দাবি , -‘রাজ্যকে না জানিয়ে জল ছেড়েছিল ডিভিসি। রাজ্যের আপত্তিতে কান দেওয়া হয়নি’। তবে সামনে আসা একটি নথিতে দেখা যায়, ডিভিসির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে যেদিন চিঠি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, তার ৩ দিন আগেই ‘বন্যা পরিস্থিতি’ হতে পারে বলে নবান্নের তরফ থেকে ৮টি জেলাকে সতর্ক করা হয়েছিল। তাহলে ডিভিসি জল ছাড়তে পারে এই তথ্য কি আগে থেকেই নবান্নের কাছে ছিল? এই বিতর্কে কে সঠিক কথা বলছে সেটা জানতে চেয়ে হাইকোর্টে  জনস্বার্থ মামলা করতে চেয়েছিলেন অধীর। তবে এদিন তাঁকে সেই মামলা প্রত্যাহার করতে বলল  কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। 

Leave a Reply