খোলামুখ খনিতে কয়লা কাটতে গিয়ে দু’জনের মৃত্যু
জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী
কোলিয়ারি এলাকার চলমান আতঙ্কের নাম খোলামুখ খনি। প্রতি মুহূর্তে মৃত্যু সেখানে হাতছানি দিয়ে ডাকে- একদিকে মৃত্যু অপরদিকে পেটের জ্বালা। মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও অভাবের তাড়নায় স্থানীয় মানুষ সেখানে কয়লা কুড়োতে ছোটে। ওগুলো বিক্রি করে যেটুকু আয় হবে তাতেই কষ্ট করে সংসার চালাতে হবে। মাঝে নিরাপত্তার কড়াকড়ির জন্য কিছুটা বন্ধ হলেও আবার অবৈধভাবে কয়লা কুড়ানো শুরু হয়েছে। ফলে আবার ঘটে গেল দুর্ঘটনা।
৫ ই ফেব্রুয়ারি সাতসকালে কয়লা কুড়াতে গিয়ে মৃত্যু ও আহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তর্জা জমে উঠল তৃণমূল, বাম ও বিজেপির মধ্যে। ফলে উত্তপ্ত হয়ে উঠল রানীগঞ্জের কুনুস্তরিয়া এরিয়ার বাঁশড়া খোলামুখ খনি এলাকা।
অন্যান্য দিনের মত মৃত বিনোদ ভুঁইয়া ও রাজেশ তুরি এবং আহত রামপ্রবেশ বার্নওয়াল ও কারু ভুঁইয়া বাঁশড়া খনিতে অবৈধভাবে কয়লা কাটতে যায়। অসতর্কার জন্য হঠাৎ তারা খনিতে গভীরে গড়িয়ে যায়। এদের মধ্যে দু'জন মাটি চাপা পড়ে মারা যায় এবং অপর দু'জন আহত হয়। তাদের উদ্ধার করা হলে দেখা যায় দু'জন মারা গেছে।আহতদের স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তাদের চিকিৎসা চলছে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে মৃতদের আত্মীয়রা।
এদিকে দুর্ঘটনার খবর সামনে আসতেই রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয় তৃণমূল, বিজেপি ও বাম দলগুলোর মধ্যে। তিন দলই ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এবং খনি কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানায়।
তবে রাজনৈতিক দলগুলি কয়লা খাদানে মৃত্যুর জন্য ইসিএল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিকে দায়ী করলেও পুলিশের দাবি তারা মৃতদেহ দু’টি মৃতদের বাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে।
যদিও বামনেতাদের দাবি - খোলামুখ খনি থেকে কয়লা কুড়োতে গিয়ে চারজন গড়িয়ে খনির গভীরে পড়ে যায় এবং তারা মাটি চাপা পড়ে মারা যায়। অপর দু'জন আহত হয়। ক্ষতিপূরণ এবং কয়লা খনিতে চুরি বন্ধের দাবিতে সিপিআইএম কর্মীরা কোলিয়ারির এজেন্ট অফিস ঘেরাও করে ধর্নায় বসেন।
অন্যদিকে তৃণমূল নেতা-কর্মীরা এজেন্ট অফিসের গেটে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন এবং তারা বলেন কেন্দ্রীয় সরকারের অপদার্থতার জন্যই নিরীহ মানুষজনের প্রাণ গেল।
এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় বিজেপি বিধায়িকা অগ্নিমিত্রা পাল ঘটনাস্থলে গেলে তৃণমূলের কর্মীরা তার বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকে। অগ্নিমিত্রা পাল মৃতদের বাড়িতে গিয়ে তাদের পরিজনদের সান্ত্বনা দেন। পাশাপাশি খনির নিরাপত্তায় থাকা সিআইএসএফের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনিও অসহায় পরিবারগুলির জন্য ক্ষতিপূরণের দাবি তোলেন।