প্রশাসনিক ব্যবস্থায় ফাঁক না রাখতে  চরম  তৎপরতা 

পায়ে পায়ে মানুষের ঢল বাড়ছে জয়দেব–কেন্দুলিতে

         খায়রুল  আনাম

মকরসংক্রান্তিতে গঙ্গাসাগরের পরেই রাজ্যের অন্যতম তীর্থস্থান বীরভূমের ইলামবাজার ব্লকের অজয় নদ তীরবর্তী   জয়দেব-কেন্দুলির মেলার সমস্ত প্রস্তুতি সেরে ফেলেছে  বোলপুর মহকুমা ও  বীরভূম জেলা প্রশাসন।  বীরভূমের জেলাশাসক বিধান রায়কে সভাপতি ও বোলপুর মহকুমা শাসক অয়ন নাথকে  সম্পাদক করে জয়দেব-কেন্দুলি মেলা কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি একাধিক বার বৈঠকে বসে মেলা পরিচালনার ব্যবস্থাপনা নিয়ে পুলিশ প্রশাসন, দমকল বিভাগ, স্বাস্থ্য বিভাগ, ইলামবাজার ব্লক প্রশাসন,  বিদ্যুৎ বিভাগ,  জয়দেব-কেন্দুলি গ্রাম পঞ্চায়েতের সঙ্গে আলোচনা সেরে নিয়েছে।  সরকারিভাবে ২৮ পৌষ থেকে ২ মাঘ, ১৪ থেকে ১৭ জানুয়ারি জয়দেব-কেন্দুলির মেলা হলেও পক্ষকালের বেশি এই মেলা থেকে যায়। এই মেলায় কলা বিক্রিরও ব্যাপক প্রচলন রয়েছে।

      জয়দেব-কেন্দুলির মেলার অন্যতম আকর্ষণই হলো বাউলদের আখড়া। সেইসাথে বর্তমানে কীর্তনীয়ারাও এখানে জাঁকিয়ে বসেছেন।  জয়দেব-কেন্দুলির মেলাকে বাউল মেলাও বলা হয়ে থাকে।  এখানে যে সব আখড়াগুলি আসে সেখানে হাজার হাজার মানুষ পাতপেড়ে খিঁচুড়ি খেতে পারেন বিনামূল্যে। এদিন ভোরে এখানকার অজয় নদে প্রায় দু’লক্ষ মানুষ মকরে পুণ্যস্থান করবেন বলে আশা করা হয়েছে। পূর্বপুরুষদের স্মৃতি তর্পণ করবেন অনেকেই।  পুজো দিবেন রাধাবিনোদ মন্দিরে। এজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে  তিনটি ঘাট নির্দিষ্ট করা হলেও অজয় নদের বিভিন্ন জায়গাতেই ভক্তজনেরা পুণ্যস্থান করেন। কথিত আছে যে,  এদিন জয়দেব-কেন্দুলিতে পুণ্যস্থান করলে গঙ্গা স্নানের পুণ্য পাওয়া যায়। দেবী গঙ্গা এদিন বিরাজ করেন  এখানে। প্রশাসনিক সূত্রে জানা যাচ্ছে, এখানে এবার ৬০০ টি দোকান ও ৩০০ টি আখড়ায় ভক্তজনেরা উপস্থিত হবেন। সে জন্য স্বাভাবিক জল সরবরাহ ব্যবস্থা ছাড়াও অতিরিক্ত দু’টি পাম্প বসিয়ে পাইপলাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্নানঘাটে কোনও দুর্ঘটনা  ঘটলে তার মোকাবিলা করার জন্য  বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী  মোতায়েন রাখা থাকছে। রাখা হচ্ছে লাইফ জ্যাকেটেরও ব্যবস্থা। বেলা তিনটের  সময় এখানকার বাউল মঞ্চে  রাজ্যের ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোগ দফতরের মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন এবারের জয়দেব-কেন্দুলির মেলা।

ছবি : মেলার পথে মানুষ।

Leave a Reply