‘কুণাল ঘোষের সাথে বন্ধুত্ব হয়ে গেছে ‘,জানালেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়
মোল্লা জসিমউদ্দিন ,
সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।এজলাসে বসেই শাসক দল তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের প্রশংসা করলেন । কুণাল ঘোষের সঙ্গে সাক্ষাতের অভিজ্ঞতার কথাও উল্লেখ করলেন। এদিন একটি মামলা চলাকালীন কুণাল ঘোষ সম্পর্কে বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “কুণাল ঘোষের সঙ্গে বেশ বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছে। একদিন আমার চেম্বারে এসেছিলেন, আমি তো বেশ অবাক হয়ে গিয়েছিলাম।” সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, “মানুষটা খারাপ না। আমি একটি অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। সেখানে উঠে দাঁড়িয়ে আমার সঙ্গে কথা বলেন। ভদ্র মানুষ, ভাল ব্যবহার করেন। আমিই বা কেন খারাপ ব্যবহার করব!” বিচারপতি জানিয়েছেন, মাঝে-মধ্যে কুণাল ঘোষ তাঁর খোঁজখবরও নেন।কুণাল ঘোষের সাহিত্যচর্চার কথাও এদিন উল্লেখ করেছেন বিচারপতি। তিনি বলেন, “ওঁর একটি উপন্যাস আমাকে পাঠিয়েছেন। বেশ ভাল লিখেছেন। লেখার হাত খুব ভাল।” তবে কুণাল ঘোষ যে বিভিন্ন সময় তাঁকে নিশানা করেছেন, সে কথাও উল্লেখ করতে ভোলেননি বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘আমাকে টুল নিয়ে বাইরে বসতে বলেছেন।’সম্প্রতি উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির ঘটনায় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় , ‘সাংবিধানিক পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে।’ আক্রান্ত ইডি অফিসারদের দেখতেও গিয়েছিলেন তিনি। বিচারপতির মন্তব্যের পর কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, ‘চেয়ার ছেড়ে রাজনীতিতে আসুন।’ এদিন বিচারপতি আরও বলেন -‘ কল্যাণ দা (আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়) তো আমার পদত্যাগ চেয়েছেন। আমি তো ভাবলাম আজকেই এজলাসে এসে আমাকে পদত্যাগ করতে বলবেন।”রেশন দুর্নীতিতে জ্যোতিপ্রিয় ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতার বাড়িতে ইডির তল্লাশি অভিযান ঘিরে গত শুক্রবার সকালে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির সরবেড়িয়া। তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে ইডি আধিকারিকরা তল্লাশি চালাতে গেলে বাধা দেন স্থানীয়রা। শাহজাহানের অনুগামীদের হাতে আক্রান্ত হন ইডির আধিকারিকরা। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরাও হামলার মুখে প্রায় পালিয়ে প্রাণে বাঁচেন। সন্দেশখালির সেই দৃশ্য সংবাদমাধ্যমে দেখে নিজের এজলাসে বসে বিচারপতি বলেন , “কেন এখনও রাজ্যপাল ঘোষণা করছেন না যে, রাজ্যের সাংবিধানিক পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে? যদি তদন্তকারীরাই মার খান, তাহলে তদন্ত হবে কী করে?” এখানেই শেষ নয়, শুনানি চলাকালীন সিবিআইয়ের আইনজীবীর উদ্দেশে তিনি বলেন, “আপনাদের কাছে বন্দুক থাকে না? চালাতে পারেন না?” এরপরই তোপ দাগেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। এরপর এদিন কলকাতা হাইকোর্টের নিজের এজলাসে কুণালের সাথে তাঁর সম্পর্কের বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।