রাজ্যের গ্রন্থাগারগুলির শূন্যপদ পূরণ হচ্ছে
কলকাতায় অন্ধ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য কলেজ করার প্রতিশ্রুতি মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহর
খায়রুল আনাম
বোলপুর, ৫ জানুয়ারি–এক সময় পাঠকেরা যে আগ্রহ নিয়ে বই পড়তেন, সেই আগ্রহে বর্তমান সময়ে ভাটা পড়ে গিয়েছে। রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, শরৎচন্দ্র, বিভূতিভূষণের লেখা পড়ার জন্য পাঠকেরা যে ভাবে মুখিয়ে থাকতেন, এখন আর তা লক্ষ্য করা যায় না। কিন্তু বইয়ের মধ্যে জ্ঞান-পিপাসা মেটাবার যে সৃজনশীলতা রয়েছে, তা আর অন্য কোথাও নেই। শুধুমাত্র চাকরি সংক্রান্ত বই পড়লে হবে না। বাংলা ভাষাকে বাঁচাতে হলে বাংলা বই পড়তে হবে। রামপুরহাট হাই স্কুল মাঠে ৪২ তম বীরভূম জেলা বইমেলার উদ্বোধন করে এমনই মত প্রকাশ করলেন রাজ্যের জনশিক্ষা প্রসার ও গ্রন্থাগার পরিষেবা দফতরের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার ড. আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, জেলাশাসক বিধান রায়, জেলা পরিষদের সভাধিপতি শেখ ফায়েজুল হক কাজল, সাহিত্যিক অর্পিতা সরকার, জেলা গ্রন্থাগার আধিকারিক সুদীপ্ত বিশ্বাস প্রমুখ। এবারের বইমেলায় ৭০টি বইয়ের স্টল রয়েছে। এই বইমেলা চলবে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন বইমেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছে। এবারের বইমেলার শিরোনাম রাখা হয়েছে–ভাষা শিখব, বই লিখব।
এই বইমেলা শুরুর আগে বইয়ের জন্য একটি পদযাত্রারও আয়োজন করা হয়। এদিন মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী রাজ্যের গ্রন্থাগারগুলির বর্তমান পরিস্থিতির কথা বলতে গিয়ে জানান, রাজ্যে সরকারি যে ১৫ হাজার ৫৫৪ টি গ্রন্থাগার রয়েছে তারমধ্যে বেশকিছু গ্রন্থাগার কর্মীর অভাবে বন্ধ রাখতে হয়েছে। অনেক জায়গাতে একজন কর্মীকে একাধিক গ্রন্থাগারের দায়িত্ব সামলাতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতির দিকে দৃষ্টি দিয়ে ১৫ থেকে ২০ জানুয়ারির মধ্যে ৭৩৮ জন কর্মী নিয়োগ করে শূন্যপদ পূরণ করা হবে। অতীতে একসঙ্গে এতো সংখ্যক কর্মী আগে কখনও নিয়োগ করা হয়নি। সেইসাথে এদিন মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ জানান যে, অন্ধ ও প্রতিবন্ধী ছেলেমেয়েদের জীবন অত্যন্ত দুঃখের। তাই তাঁদের পাশে দাঁড়াতে কলকাতায় তাঁদের জন্য একটি কলেজ করার প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এছাড়াও কলকাতায় এঁদের জন্য একটি প্রদর্শনীরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমরা কয়েক হাজার পড়ুয়ার দায়িত্ব নিয়েছি। জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদেরও বলবো, আপনারাও এভাবে পড়ুয়াদের দায়িত্ব নিন। এজেলায় বহু গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রতিষ্ঠান থাকা সত্বেও গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি সে ব্যাপারে কোনও খোঁজখবর নেয় না বলেও তিনি আক্ষেপ করেন। বইমেলায় সকলকে আসার জন্য তিনি বাসের ব্যবস্থা করা এবং মাইকে প্রচার করার কথাও বলেন এদিন।
ছবি : বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।