Spread the love

প্রকাশিত বৈষ্ণব স্টাডি সিরিজের অন্যতম পুস্তক
‘মদন মোহন: অ্যান এনচ্যান্টিং সাগা’

বৈষ্ণব সংক্রান্ত গবেষণা ও সাহিত্য আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে এবার মণ্ডল ফাউন্ডেশন ও ভক্তিবেদান্ত রিসার্চ সেন্টারের উদ্যোগে প্রকাশিত হল বৈষ্ণব স্টাডি সিরিজের অন্যতম পুস্তক
‘মদন মোহন: অ্যান এনচ্যান্টিং সাগা’। যার মূল উদ্দেশ্য হল বৈষ্ণব সংক্রান্ত অতি সাম্প্রতিক ও সুদূরপ্রসারী গবেষণাগুলি তুলে ধরা।
সম্প্রতি পুরি, বৃন্দাবন ও কলকাতায়
১৭২ পৃষ্ঠার এই ইংরেজি বই প্রকাশিত হয়েছে।পুস্তকের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেন
মায়াপুরের গোবর্ধন ইকো ভিলেজের নির্দেশক গৌরাঙ্গ দাস প্রভু। গৌরাঙ্গ দাস প্রুভুর সানিধ্যে আসার পরেই এই পুস্তকের লেখক
সুশান্ত ভারতী এই বই লেখার অনুপ্রেরনা পান। সুশান্ত ভারতি নিজে একজন ধর্মপ্রাণ এবং গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী। তিনি বৃন্দাবনের প্রসিদ্ধ রাধারমণ পরিবারের এবং শিক্ষাগত দিক থেকে স্থাপত্য সংরক্ষণে তাঁর বিশেষ ব্যুৎপত্তি অর্জন করেছেন। এই দুইয়ের সংমিশ্রণে তিনি তাই ব্রজধামের ঐতিহ্যের উপরে অনন্যভাবে আলোকপাত করেছেন এই বইয়ে।
বৃন্দাবনের বিখ্যাত গোস্বামীদের জ্যেষ্ঠ শ্রীল সনাতন গোস্বামীর অভিভাবকত্বে ষোড়শ শতকে বৃন্দাবনে মনদমোহন মন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়। যমুনার তীরে অনন্যসুন্দর এই মন্দির এখনও টিকে রয়েছে। এখানে মদনমোহনের সঙ্গে পূজিত হন শ্রীরাধা ও রাধার সখী ললিতা। কয়েক শতাব্দী ধরে অগণিত মানুষের ভক্তি ও পূজার সাক্ষ্য বহন করছে এই মন্দির। স্থাপত্যশৈলীর বিচারেও এই মন্দির বিশিষ্ট স্থান অধিকার করেছে।
ভক্তি, ইতিহাস ও স্থাপত্যের ধারাকে যে একটি বইয়ে প্রবাহিত হয়েছে সেই প্রবাহের নাম ‘মদন মোহন: অ্যান এনচ্যান্টিং সাগা’। বইয়ের প্রতিটি পরতে রয়েছে মন্দিরের বহমান ইতিহাসের মূর্ত বর্ণনা। শুরুর দিকে রয়েছে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর জীবন ও বাণী এবং শ্রীল রূপ ও সনাতন গোস্বামীর সঙ্গে তাঁর কথোপকথনের সংক্ষিপ্তসার। দ্বাদশাদিত্য টিলার কথাও বলা হয়েছে যেখানে সনাতন গোস্বামীর সঙ্গে স্বংয় মদন মোহনের সাক্ষাৎ হয় এবং চৈতন্য চরিতামৃতর মতো বিপুল গ্রন্থ রচনার ব্যাপারে শ্রীল কৃষ্ণদাস কবিরাজ গোস্বামী এই ব্যাপারে মদনমোদনের অনুমতি পান।
মন্দিরের বৃহত্তর ইতিহাসের প্রেক্ষাপটের পাশাপাশি বহু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নুনের ব্যাপারী রামদাস কাপুরের ব্যাপারে মহনমোহনের হ্স্তক্ষেপ, মদনমোহন মন্দিরের পক্ষে মুঘল রাজদরবারের রায়, মন্দিরের বিশ্ববিখ্যাত শিখর এবং বহু ভক্তিমূলক লেখায় কবিদের উপরে মদনমোহনের প্রভাব। এছাড়াও এই মন্দিরের ব্যাপারে দুই নামী আধুনিক শিল্পীর অবদান এবং এই মন্দিরের পেন্টিংয়ের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির কথা এই বইয়ে বলা হয়েছে। অন্যান্য যেসব বিষয়ের উল্লেখ রয়েছে তার মধ্যে কামবন থেকে জয়পুর এবং একই সঙ্গে করৌলিতে মদনমোহনের আগমন এবং জয়পুর, করৌলি ও বৃন্দাবনের মন্দিরের স্থাপত্যের অনুপুঙ্খ বিবরণ। এই বইয়ের শেষাংশে রয়েছে গোবর্ধন ইকো ভিলেজে মদনমোহন মন্দির নির্মাণের বিবরণ। বাদ দেওয়া হয়নি মন্দিরের বিপর্যয়ের কথাও।
ভক্তিবেদান্ত গবেষণা কেন্দ্রের ডিন ডঃ সুমন্ত রুদ্র বলেন,
‘মদন মোহন: অ্যান এনচ্যান্টিং সাগা’ পাঠ করা যেন এক তীর্থভ্রমণের শামিল। এ যেন এমন এক তীর্থে ভ্রমণ করা যা যেকোনও স্থান ও সময়ের সব সীমা অতিক্রম করে গেছে। এই বই পাঠ করার সময় পাঠকও পবিত্রভাবে স্থান ও কালের পথ অতিক্রম করে যাবেন যেখানে রয়েছে ভক্তিরসে সমৃদ্ধ ঐতিহ্য ও আধুনিক স্থাপত্যের অনন্য মেলবন্ধন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *