জন্মদিনের আলোকে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়,
অন্তরা সিংহরায়
আজ ২ রা আগস্ট বাংলার গর্ব আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের ১৬৩ তম জন্মদিবস। তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন ২ আগস্ট ১৮৬১ অবিভক্ত বাংলার যশোর জেলায় (বর্তমানে বাংলাদেশের অন্তর্গত)।
তিনি ছিলেন প্রখ্যাত বাঙালি রসায়নবিদ , দার্শনিক ,শিক্ষক ও কবি। পি সি রায় নামেও পরিচিত ছিলেন তিনি। বেঙ্গল কেমিক্যালসের প্রতিষ্ঠাতা এবং মার্কারি নাইট্রেটের আবিষ্কারক আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় বৈজ্ঞানিক জগদীশ চন্দ্র বসুর সহকর্মী ছিলেন। বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে ভারতীয় উপমহাদেশের শিল্পায়নে তার ভূমিকা অনস্বীকার্য।নিজের বাসভবনে দেশীয় ভেষজ নিয়ে গবেষণার মাধ্যমে তিনি তার গবেষণা কর্ম আরম্ভ করেন। তাঁর এই গবেষণাস্থল থেকেই পরবর্তীকালে বেঙ্গল কেমিক্যাল কারখানার সৃষ্টি হয় যা ভারতবর্ষের শিল্পায়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে।
তাছাড়াও তিনি মোট ১২টি যৌগিক লবণ এবং ৫টি থায়োএস্টার আবিষ্কার করেন। শিক্ষার বিস্তারের জন্যে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় বেশ কিছু শিক্ষা কেন্দ্র স্হাপন করেন। ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দে পিতার নামে আর,কে,বি,কে হরিশ্চন্দ্র স্কুল ,১৯১৮ সালে পি.সি কলেজ নামে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। যা সেই সময় শিক্ষা বিস্তারে বিশাল ভূমিকা গ্রহণ করেছিলো।
আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় তাঁর দীর্ঘ কর্মজীবনে অসংখ্য বই এবং গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন। তার প্রকাশিত মোট গবেষণাপত্রের সংখ্যা ১৪৫ টি। তাঁর রচিত বইগুলির মধ্যে ‘ইন্ডিয়া বিফোর আফটার সিপয় মিউটিনি’, সরল প্রাণিবিজ্ঞান: বাঙ্গালী মস্তিষ্ক ও তার অপব্যবহার, হিন্দু রসায়ন বিদ্যা ইত্যাদি গ্রন্থ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।বাংলার এই প্রতিভাবান বিজ্ঞানী সারা জীবন বহু সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ১৯১৯ সালের নাইট ব্যাচেলর সম্মান। বাংলার গর্ব,ভারতের গর্ব এই বিজ্ঞানীর দেশ ও মাটির প্রতি ভালোবাসা ছিলো প্রগাঢ় । তাই তিনি সারাজীবন স্বদেশে থেকে মাতৃভাষাতে অধ্যাপনা করে শিক্ষার্থীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন । আজ সেই অসাধারণ প্রতিভাবান ব্যক্তির জন্মদিন অন্তরের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করি।ভারতের ইতিহাসে তাঁর নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে ও থাকবে আজীবন।