ইনফিনিটি’র হাত ধরে ‘জাগৃতি ধাম’-এর পথ চলা শুরু: প্রবীণদের জন্য পূর্ব ভারতের প্রথম গ্রিন সার্টিফয়েড লিভিং সেন্টার
বৈদূর্য ঘোষাল,
: নতুনত্বের ছোঁয়া রেখে বিভিন্ন প্রজেক্ট তৈরি করার কারণে ইতিমধ্যেই প্রসিদ্ধ ‘ইনফিনিটি গ্রূপ’।এবার তাদের হাত ধরেই শুরু হল ‘জাগৃতি ধাম’-এর পথ চলা। প্রবীণদের জন্য পূর্ব ভারতে প্রথম ‘গ্রিন সার্টিফায়েড লিভিং সেন্টার’ হল এই আবাসনকেন্দ্রটি।
‘স্টেট-অফ-আর্ট’ সুবিধাযুক্ত এই আবাস কেন্দ্রের মূল উদ্দেশ্যই হল প্রবীণ আবাসিকদের যত্নের ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসা ও তাঁদের দৈনন্দিন সমস্ত সুযোগ-সুবিধার প্রতি যথাযথ খেয়াল রাখা। ইতিমধ্যেই ‘অ্যাসিস্টেড অ্যান্ড ইন্ডিপেন্ডেন্ট লিভিং’-এ দুর্দান্ত কৃতিত্বের জন্য ইন্ডিয়ান গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (IGBC)-এর তরফে শংসাপত্র পেয়েছে জাগৃতি ধাম কর্তৃপক্ষ এবং বর্ষীয়ান নাগরিক আবাসকেন্দ্র হিসেবে লাভ করেছে ‘সিলভার রেটিং’-ও। সেই নিরিখে পূর্ব ভারতে প্রথম ও সমগ্র ভারতের মধ্যে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে তারা।
এই মুহূর্তে সারা ভারতে সমস্ত ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকা প্রবীণ আবাসনকেন্দ্রগুলির চাহিদা অত্যন্ত বেশি। সেই প্রেক্ষিতেই জানা গিয়েছে যে, বর্তমানে আমাদের দেশে প্রতিদিন প্রায় ১৫ হাজারেরও বেশি মানুষ কর্মজীবন থেকে অবসর নিচ্ছেন,সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্রবীণদের জনসংখ্যার হার-ও। আগামী ৫০ বছরে ভারতে ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিদের সংখ্যা বেড়ে ৩২০ মিলিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও মত প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের হিসেব অনুযায়ী, ২০৩০ সালে ভারতের মোট জনসংখ্যার মধ্যে বরিষ্ঠ জনসংখ্যার হার ৮.৬% থেকে বেড়ে হবে ১২.৫%।
কলকাতার ইবিজা রিসর্ট ও স্পা-এর মনোরম পরিবেশের মধ্যেই অবস্থিত ‘জাগৃতি ধাম’-এ রয়েছে সুন্দর বাগান এবং প্রবীনদের হাঁটা-চলা করার মতো আদর্শ জায়গা। এছাড়াও সেখানে রয়েছে যোগাসন করার ঘর, স্পা ও স্যালোঁ, কমিউনিটি হল, গ্রন্থাগার, বিভিন্ন খেলাধুলো করার ঘর সহ নানা ধরনের ব্যবস্থা যা আবাসিকদের মানসিক ও শারীরিক দু’দিক থেকেই সক্রিয় ও দৃঢ় থাকতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি থাকবে ২৪ ঘন্টার জন্য জেনারেটরের ব্যবস্থা, জামা-কাপড়-ঘর পরিষ্কার রাখার জন্য নিয়োজিত কর্মী ও সেসবের সুযোগ-সুবিধা। এছাড়াও ‘জাগৃতি ধাম’-এ রয়েছে জৈব বাগান যেখান থেকে সতেজ সবজি খাওয়ার ব্যবস্থাও থাকবে আবাসিকদের জন্য।
প্রতিটি ঘরেই রয়েছে ‘ইমার্জেন্সি বাটন’, যাতে চাপ দিলেই সঙ্গে সঙ্গে এসে হাজির হবেন আবাসিকদের পরিঢর্যার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মীরা। সম-মানসিকতার সহ-বাসিন্দাদের সাহচর্যে তাঁরা যে নতুন পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে তুলতেও সক্ষম হবেন সেই বিষয়টিও নিশ্চিত করছে এই আবাসন কর্তৃপক্ষ।
ইতিমধ্যেই জাগৃতি ধাম দুটি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে যারা প্রবীণ আবাসিকদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়ে সাহায্য করে। তাদের মধ্যে একটি সংস্থা হল ইমোহা। ২৫ হাজার প্রবীণ মানুষের পাশে থাকা এই সংস্থার মূল লক্ষ্যই হল প্রবীণ মানুষদের জীবনচর্যাকে উন্নত করা এবং সেই একই ব্যবস্থা থাকবে জাগৃতি ধাম-এর আবাসিকদের জন্যও। অপর যে সংস্থার সঙ্গে তারা সংঘবদ্ধ হয়েছে সেটি হল ইপোচ এলডার কেয়ার। এই সংস্থা ডিমেনশিয়া ও পার্কিনসন্স রোগীদের যত্নের বিষয়ে খেয়াল রাখে। এছাড়াও,প্রবীণদের এই আবাসিক কেন্দ্রে থাকছে নির্দিষ্ট জেরিয়াট্রিক্স টিম এবং আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার ব্যবস্থাও। সর্বোপরি বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষদের সুস্থ জীবন-যাপন ও যত্নের ওপরই সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছে ‘জাগৃতি ধাম’।
এই কেন্দ্রের পথ চলা শুরু প্রসঙ্গে ‘জাগৃতি ধাম’-এর মুখ্য ট্রাস্টি এবং ‘ইনফিনিটি গ্রূপ’-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও চেয়ারম্যান রবীন্দ্র চামারিয়া বলেন, ‘শুরু থেকেই জাগৃতি ধাম দুটি বিষয়ের ওপর বিশেষভাবে নজর রেখেছে। তার মধ্যে প্রথমটি হল প্রবীণদের সুস্থ জীবন কাটাতে,সক্রিয় থাকতে সাহায্য করা এবং দ্বিতীয়টি হল তাঁদের জীবনের এই সোনালী দিনগুলি নিশ্চিন্তে-নিরূপদ্রবে ও নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে পার করতে তাঁদের পাশে থাকা। এই মুহূর্তে মানুষের জীবনসীমা প্রায় ৮০ ছুঁইছুঁই এবং অধিকাংশ মানুষই নিজেদের বয়স কালেও যথাযথ সুস্থ-সবল থাকেন। এমন মানুষদের কথা মাথায় রেখেই পথ চলা শুরু করল ‘জাগৃতি ধাম’—এই যাত্রা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।’