Spread the love

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর জন্মবার্ষিকী আজ

কাজী নূর।।

বাংলাদেশের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও সাবেক সেনাপ্রধান এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান (বীর উত্তম) এর ৮৭তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯৩৬ সালের এই দিনে বগুড়া জেলার গাবতলী উপজেলার বাগবাড়ী গ্রামে সম্ভ্রান্ত এক মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ক্ষণজন্মা এই বীরপুরুষ। জিয়াউর রহমানের পিতার নাম মনসুর রহমান এবং মা জাহানারা খাতুন। জিয়াউর রহমানের বাবা তৎকালীন সময়ে কোলকাতার একটি সরকারি দফতরে কেমিস্ট ছিলেন। ভারত ভাগ হওয়ার পর মনসুর রহমান করাচিতে বদলি হয়ে গেলে পুত্র জিয়াউর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে যান। এর আগ পর্যন্ত জিয়াউর রহমান কোলকাতার ঐতিহ্যবাহী হেয়ার স্কুলে লেখাপড়া করতেন।

জিয়াউর রহমানের ডাক নাম ছিল কমল। বগুড়া ও কোলকাতায় শৈশব কৈশোর অতিবাহিত করার পর জিয়াউর রহমান পিতার কর্মস্থল করাচিতে চলে যান। জিয়াউর রহমান ১৯৫৫ সালে শিক্ষাজীবন শেষে পাকিস্তান মিলিটারি একাডেমীতে অফিসার হিসেবে কমিশন লাভ করেন। একজন সৈনিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করলেও জিয়াউর রহমানের বৈশিষ্ট ছিলো তিনি দেশের সঙ্কটময় মুহূর্তে ত্রাণকর্তা হিসেবে বারবার অবতীর্ণ হয়েছেন এবং দেশকে সেই সঙ্কট থেকে মুক্ত করেছেন। জিয়াউর রহমান ১৯৭১ সালে অস্ত্র হাতে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছেন। যুদ্ধ শেষে হলে আবার সেনাবাহিনীর ব্যারাকে ফিরে গেছেন। বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা জিয়াউর রহমান সময়ের প্রয়োজনেই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। তার হাতে গড়া সেই রাজনৈতিক দল আজ বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃত। আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে অসাধারণ দেশপ্রেমিক, অসম সাহসিকতা, সততা নিষ্ঠা ও সহজ সরল ব্যক্তিত্বের প্রতীক জিয়াউর রহমানের অবদান অসামান্য। জিয়াউর রহমান ১৯৬৫ সালে পাক- ভারত যুদ্ধে অসীম সাহসিকতার সাথে যুদ্ধ করেন। আবার বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর ও ফোর্সেস কমান্ডার হিসেবে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। বিশ্ব- মানচিত্রে তিনি বাংলাদেশকে ব্যাপকভাবে পরিচিত করিয়েছেন তার স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্য দিয়ে। বিশ্বব্যাপী জাতির মর্যাদাকে সমুন্নত করেছেন তার শাসনামলে। জিয়াউর রহমান ১৯৭৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার হিসেবে এবং একই বছরের অক্টোবরে মেজর জেনারেল (সেনাবাহিনী প্রধান) হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন।

আধুনিক বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা জিয়াউর রহমানের সৈনিক ও রাজনৈতিক জীবনের সততা, নিষ্ঠা ও নিরলস পরিশ্রম প্রতিটি মানুষ আজও গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে। একজন খাঁটি দেশপ্রেমিক হিসেবেও তার পরিচিতি সর্বজনবিদিত। সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে শহীদ জিয়ার রাজনৈতিক দর্শন ও দিক নির্দেশনা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হওয়ার পর তারই সহকর্মী খন্দকার মোশতাক আহমদ ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। পরবর্তী সময়ে নানা রাজনৈতিক পট পরিবর্তন ও ঘটনাপ্রবাহের পরিপ্রেক্ষিতে সিপাহি- জনতার ঐক্যবদ্ধ অভ্যুত্থান ঘটে। দেশের সেই চরম ক্রান্তিকালে সিপাহি- জনতার মিলিত প্রয়াসে জিয়াউর রহমান নেতৃত্বের হাল ধরেন। রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে তিনি দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র, বাক- ব্যক্তি স্বাধীনতা এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন। দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে চেষ্টা চালিয়েছেন আমৃত্যু। জাতির মধ্যে একটি নতুন উদ্দীপনার সৃষ্টি করে তাদের জাগিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি।

প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ১৯৮১ সালের ৩০ মে একদল বিপথগামী সেনা সদস্যের হাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে শাহাদৎবরণ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *