এসএসসির নাম্বার বিভ্রাট না ববিতার ভূল তথ্য প্রদান ? আজ বিচারপতি  গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে শুনানি 

মোল্লা জসিমউদ্দিন , 

এসএসসির নাম্বার বিভ্রাট নাকি ববিতার ভূল তথ্য প্রদান?  আজ অর্থাৎ বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে রয়েছে এই মুহূর্তে শিক্ষক নিয়োগে সবথেকে হাইপ্রোফাইল মামলার শুনানি। গত সোমবার এই এজলাসেই এসএসসি কে দায়ী করে মামলা ঠুকেছেন ববিতা সরকার। অপরদিকে মঙ্গলবার ববিতার বিরুদ্ধে তথ্য কারচুপির অভিযোগ এনে মামলা ঠুকেছেন প্রাক্তন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরির আরেকজন দাবিদার অনামিকা রায়।’ববিতা সরকারের চাকরি অবৈধ। বাতিল করা হোক ববিতা সরকারের চাকরি’। এই অভিযোগ শিলিগুড়ির চাকরিপ্রার্থী অনামিকা রায়ের। এই আবেদনে কলকাতা হাইকোর্টের  বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে মামলা দায়ের করলেন অনামিকা।আজ অর্থাৎ বুধবারই এই মামলার শুনানির প্রবল সম্ভাবনা। অনামিকার দাবি, -‘  কেবল চাকরি নয়, পাশাপাশি প্রাপ্ত  বেতন বাবদ তিনি যে পরিমাণ টাকা পেয়েছেন, সেটাও ফেরত দিতে হবে’। মামলাকারী অনামিকা রায় এর দাবি -‘ ববিতা সরকার স্কুল সার্ভিস কমিশনকে ভুল তথ্য দিয়েছেন  । তাই স্কুল সার্ভিস কমিশনের অ্যাকডেমিক স্কোরে ববিতার নাম্বার অতিরিক্ত রয়েছে’  । ‘একাদশ-দ্বাদশের চাকরির তালিকায় এসএসসি নয়, ভুল করেছেন ববিতা সরকারই’ এই দাবি । কলকাতা হাইকোর্টে এমনটাই দাবি করলেন অনামিকা রায় নামে এক চাকরিপ্রার্থী । সেই সঙ্গে এও জানিয়েছেন, -‘ ওই চাকরির দাবিদার তিনি । ববিতা সরকার নয়’ । এই দাবিতেই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন শিলিগুড়ির বাসিন্দা অনামিকা রায় অনামিকা রায় তাঁর করা মামলার আবেদনে জানিয়েছেন, স্নাতকে ববিতা ৮০০ এর মধ্যে পেয়েছেন ৪৪০ অর্থাত্‍, ৫৫ শতাংশ ।তবে , ববিতা আবেদনের সময় পাশে লিখেছিলেন ৬০ শতাংশের বেশি । সেখানে বলা হয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী ববিতার এসএসসি’র প্রকাশিত অ্যাকাডেমিক তালিকায় ৩১ পাওয়ার কথা । কিন্তু, তিনি স্নাতকে ৬০ শতাংশ লেখার ফলে এসএসসি-র অ্যাকাডেমিক তালিকায় ৩৩ নম্বর পেয়েছেন ববিতা । এই যুক্তিতে অনামিকা রায় দাবি করেছেন, এই ভুল এসএসসি-র নয় ববিতা সরকারের ।যদিও এসএসসিই বা কেন বিনা যাচাইয়ে নাম্বার দিল তা নিয়েও উঠছে বিস্তর প্রশ্নচিহ্ন। অনামিকা রায় তাঁর মামলার আবেদনে দাবি করেছেন, -‘ববিতার চাকরি বাতিল করা হোক’ । এদিন বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায় আদালতে ছিলেন না । তাই তাঁর এজলাসে আসা মামলাগুলি রিসিভ করেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত  বিচারপতি অমৃতা সিনহা । তিনি অনামিকা রায়কে মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন । তবে, আজ  এই মামলা  বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায় এর এজলাসে শুনানির সম্ভাবনা প্রবল রয়েছে  । প্রসঙ্গত , স্কুল সার্ভিস কমিশনের দেওয়া নথির উপর ভিত্তি করেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে ববিতা সরকার চাকরি পেয়েছিলেন ।পেয়েছিলেন অঙ্কিতা অধিকারীর প্রাপ্ত বেতন। সেই কারণেই এই মামলাটিও বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে শুনানির জন্য পাঠানো হয়েছে বলে আদালত সুত্রে জানা গেছে  ।প্রসঙ্গত, গত সোমবার  এসএসসি-র তালিকায় বদলের বিষয়টি বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে তুলে ধরেছিলেন বর্ষীয়ান  আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ।  বিকাশ বাবু জানিয়েছেন, -”ববিতা সরকারের মামলার শুনানি চলাকালীন এসএসসি-র দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ববিতা সরকার চাকরি পান । কিন্তু, পরবর্তীকালে এসএসসি-র পোর্টালে সামগ্রিক বিস্তারিত তালিকা প্রকাশ হয়েছে । তার পর দেখা গিয়েছে ববিতা সরকারের আগে অন্য প্রার্থীরা চাকরি পাওয়ার যোগ্য । এসএসসি-র তথ্য ভুলের জন্য এই অবস্থা তৈরি হয়েছে ।” তবে, এখন দেখার ববিতা সরকারের স্নাতকের শতাংশের গড়মিলে কার ভুল ছিল?  আজ অর্থাৎ বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে শুনানির দিকে তাকিয়ে রাজ্যবাসী। কেননা যেভাবে ববিতা তৎকালীন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর চাকরি বাতিলের আইনী লড়াইয়ে ছিলেন।তাতে তিনি কারচুপি করেছেন ভূল তথ্য প্রদানে? নাকি এসএসসির নাম্বার বিভ্রাটে এই গন্ডগোল!  তা জানতে উৎসুক অনেকেই।

Leave a Reply