Spread the love

স্বাস্থ্যবিষয়ক আলোচনা সভা হলো বর্ধমানের বিদ্যালয়ে

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী

লক্ষ্য একটাই শিশুদের ক্ষেত্রে মাম্পস,  হাম, পোলিও প্রভৃতি সংক্রামক     রোগজনিত মৃত্যু ও পঙ্গুত্বের হার কমিয়ে আনা। লক্ষ্য পূরণের লক্ষ্যে ১৯৭৯ সাল থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন ইপিআই সফলতার সঙ্গে সারা দেশে টিকাদান কর্মসূচি পরিচালনা করে আসছে। নিয়মিত টীকা করণের জন্য ইতিমধ্যে দেশ থেকে কার্যত পোলিও দূর হয়েছে। এবার লক্ষ্য ২০২৩ সালের মধ্যে দেশ থেকে মাম্পস, হাম দূর করা।

 এরজন্য সবচেয়ে সেরা উপায় হলো সঠিক সময়ে প্রতিটি শিশুকে মাম্পস-হামের বাহক রুবেলা ভাইরাসের টিকা প্রদান করা।  রুবেলা হলো প্রতিরোধযোগ্য এবং একটি মাত্র টিকার মাধ্যমে এটি প্রতিরোধ করা যায়। সাধারণত মাম্পস ও হাম ভ্যাকসিনের সাথে এটি প্রয়োগ করা হয় যেটা এমএমআর টিকা নামে পরিচিত। কিন্তু প্রচারের অভাবে বা অন্য কোনো কারণে এটি সেভাবে মানুষের মনে জায়গা করতে পারেনি। তবে সম্প্রতি এটি নিয়ে স্বাস্থ্য দপ্তর যথেষ্ট তৎপর হয়েছে।

 পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশানুসারে সারা রাজ্যব্যাপী ১৫ বছর বয়স পর্যন্ত সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের মিজল রুবেলার টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই ব্যাপারে ছাত্রদের অভিভাবকদের সচেতন করতে, টিকাটির গুণাগুণ, পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া সহ অন্যান্য আরো খুঁটিনাটি বিভিন্ন বিষয়ে বিভিন্ন জিজ্ঞাসার উত্তর দিতে বর্ধমানের কাঞ্চননগর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ডাক্তারবাবুদের সাহায্য নিয়ে গত ২৪ শে ডিসেম্বর বর্ধমানের রথতলা মনোহর দাস বিদ্যানিকেতনের উদ্যোগে বিদ্যালয়ের এসেম্বলি হলে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের  অভিভাবকদের সঙ্গে একটি সচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়। অধিকাংশ অভিভাবকরা সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন।  সভাটি সাফল্যমন্ডিত করতে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিটি শিক্ষকের ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়। সভায় উপস্থিত থাকার জন্য তারা প্রত্যেক অভিভাবকদের ব্যক্তিগতভাবে ফোন করেছেন। 

ডা.সাতকড়ি কুন্ডু সহজ সরল ভাষায় বিষয়টি সভায় তুলে ধরেন এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে এই ভ্যাকসিনের গুরুত্ব বুঝিয়ে বলেন। একইসঙ্গে তিনি নিজ নিজ বাচ্চাদের ভ্যাকসিনটি দেওয়ার জন্য অভিভাবকদের অনুরোধ করেন। এই সভার আয়োজন করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ প্রত্যেক শিক্ষকের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

  আউসগ্রাম ১ নং ব্লক হাসপাতালের স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা.জয় বিশ্বাস বললেন- 

রথতলা মনোহর দাস বিদ্যানিকেতনের এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। আমিও আমার এলাকার প্রতিটি বিদ্যালয়ে যাতে এই ধরনের সচেতনতামূলক সভার আয়োজন করা যায় তার জন্য একটা সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার চেষ্টা। তিনি আরও জানালেন- যদিও আমরা ইতিমধ্যে এই সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি সচেতনতামূলক সভা করেছি।

যার উদ্যোগে এই সভা তিনি হলেন রথতলা মনোহর দাস বিদ্যানিকেতনের প্রধান শিক্ষক বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বললেন - এই ছাত্রছাত্রীরা আমাদের সন্তানতুল্য। আমি এবং আমার সহকর্মীরা আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যত নিরাপত্তার জন্য এই উদ্যোগ নিয়েছি। আমার সহকর্মীরা যেভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করেছেন তার জন্য আমি গর্বিত। সবার সক্রিয় সহযোগিতার জন্য সভাটি সফল হয়েছে। তিনি সংশ্লিষ্ট ডাক্তার বাবুর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বললেন - বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রস্তাব দিতেই উনি সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যান। এরজন্য উনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *