পড়ুয়া অনুপাতে শিক্ষক সংখ্যা কত? বদলী মামলায় জানতে চান বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়
মোল্লা জসিমউদ্দিন,
সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে এক শিক্ষকের বদলীর আবেদন বিষয়ক মামলার শুনানি চলে।বিচারপতি এদিন বদলী সংক্রান্ত কোন নির্দেশ জারি করেননি।তবে রাজ্যের কাছে পড়ুয়া অনুপাতে শিক্ষক সংখ্যা বিষয়ক রিপোর্ট তলব করেছে হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চ।এর আগে কলকাতা হাইকোর্টের আরেক বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু এক মামলায় পড়ুয়াদের শিক্ষাদানে শিক্ষক সংখ্যা কত রয়েছে তা জানতে চেয়েছেন রাজ্যের কাছে।অর্থাৎ রাজ্যের কাছে শিক্ষক ও পড়ুয়াদের অনুপাতের সংখ্যা নিয়ে জোড়া হলফনামা তলব হাইকোর্টের দুই বিচারপতির সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চে ছিল পুরুলিয়া জেলার ঘোড়াশূল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বদলি মামলা। তখনই পড়ুয়াদের পঠনপাঠনের মান নিয়ে চিন্তা প্রকাশ করে বিচারপতি বলেন , -‘ যদি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বেতন সহ বিভিন্ন সুযোগ এবং সুবিধার অধিকার থাকে, তবে ন্যায্য শিক্ষা গ্রহণের অধিকার আছে পড়ুয়াদেরও’।এদিন বিচারপতি বলেন,- ‘ রাজ্যকে ভাবতে হবে শিক্ষক এবং পড়ুয়া অনুপাত নিয়ে। তারপরেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে বদলি নিয়ে। বিচারপতির নির্দেশ, -‘ রাজ্যকে জানাতে হবে শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং পড়ুয়াদের অনুপাত। সব দেখে আদালত বদলির নির্দেশ দেবে’।এদিন বিচারপতি অভিজিত্ গঙ্গোপাধ্যায় জানান , -‘ আপাতত কোনও শিক্ষক বদলির মামলায় নির্দেশ দেবে না এই আদালত’ ।আগে রাজ্যে স্কুল পিছু ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত খতিয়ে দেখা হবে। তার পরই কোনও নির্দেশ দেবে হাইকোর্ট। পর্যবেক্ষণে তিনি এও বলেন, -‘ আগে ভাল করে পড়াতে বলুন। শিক্ষকদের বেতন এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার অধিকার থাকলে, ছাত্রদেরও উপযুক্ত শিক্ষার অধিকার রয়েছে। এই আদালত ওই পড়ুয়াদের জন্যও চিন্তিত’।
পুরুলিয়ার এক প্রাথমিক স্কুল থেকে বদলি চেয়ে মামলা করেছিলেন এক শিক্ষক। সেই মামলার শুনানি প্রসঙ্গেই এই পর্যবেক্ষণ জানিয়েছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এদিন শুনানির সময়ে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় মামলাকারীর আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, -‘ ওই স্কুলে কত ছাত্র রয়েছে’? প্রতুত্তরে আইনজীবী জবাবে বলেন, -‘৫৬ জন’। এর পরই বিচারপতি নির্দেশ দেন, -‘রাজ্যকে ছাত্র ও শিক্ষকের অনুপাত জানাতে হবে। এক মাত্র তার পরই আদালত বদলির নির্দেশ দেবে। তার আগে বদলি সংক্রান্ত কোনও নির্দেশ দেবে না হাইকোর্ট’।বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘শিক্ষকরা বদলি চাইছেন। তাঁরা বেতন নিচ্ছেন। অন্যান্য সুযোগও পাচ্ছেন। এটা তাঁদের অধিকার। কিন্তু এটাও মাথায় রাখতে হবে যে ছাত্রদেরও উপযুক্ত শিক্ষার অধিকার রয়েছে। তা থেকে তারা যেন বঞ্চিত না হয়। শুধু বদলি চাইলেই হবে না।’এর আগে অন্য একটি মামলায় বিচারপতি বিশ্বজিত্ বসুও রাজ্যের কাছ থেকে ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত জানতে চেয়েছেন। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, -‘ আমিও তা চাইছি। আগে তা দেখে নিই। তার পর এ ব্যাপারে পরবর্তী শুনানি হবে’।