শুভেন্দু কে সামনে রেখে বিচারপতি মান্থার কে বেনজির আক্রমণ কুণালের
ধনঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায় ,
আসানসোলে বিজেপির কম্বল বিতরণ কর্মসূচিতে নিহত ৩ এলাকাবাসীর ঘটনা কে সামনে রেখে হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থার কে বেনজির আক্রমণ করলেন কুণাল ঘোষ। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি তো বটেই দেশের আইনমহলে আলোড়ন পড়ে গেছে। ‘বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর দায়ের করা যাবে না’ বলে তাঁকে রক্ষাকবচ দিয়ে রেখেছে কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার সে ব্যাপারে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগ আনলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ ।বাংলার রাজনীতিতে এমন ঘটনা এক প্রকার বেনজির বলেই মনে করা হচ্ছে।এদিন দুপুরে তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করে কুণাল বলেন, -‘ শুভেন্দু বেপরোয়া। পুলিশের বিরুদ্ধে যা নয় তাই কথা বলছেন। পুলিশকে মানছেন না। আইনশৃঙ্খলা পৈতৃক সম্পত্তি বলে মনে করছেন। তাঁর এই বেপরোয়ার মনোভাবের কারণেই বুধবার সন্ধেয় আসানসোলে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটেছে। এর জন্য একমাত্র দায়ী বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার’।এখানেই থামেননি কুণাল। তিনি বলেন, -‘ সাধারণ মানুষ যখন কোনও বিপদে পড়েন তখন বলেন আমি হাইকোর্টে যাব, বা সুপ্রিম কোর্টে যাব। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীকে বলতে শোনা যায়, আমি বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার কোর্টে যাব। কেন, কী জন্য? বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার শুভেন্দুর উপর সব এফআইআরে রক্ষাকবচ দিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি শুভেন্দু যে অপরাধ করেননি, তার উপরেও আগাম রক্ষাকবচ দিয়ে দিচ্ছেন। বলছেন, আদালতের অনুমতি নিয়ে এফআইআর করতে হবে। এটা কী করে হয়? উনি কি জ্যোতিষী?’তৃণমূলের কথায়, -‘ এই কারণেই শুভেন্দু বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। নাম ধরে ধরে পুলিশ অফিসারদের হুমকি দিচ্ছেন। বিচারপতি মান্থার দেখতে পারছেন না? আপনার সুরক্ষা নিয়ে পুলিশকর্তাদের হুমকি দিতে পারে? এটা কি গণতান্ত্রিক?’বাংলার কোনও রাজনৈতিক দলের মুখপাত্র কলকাতা হাইকোর্টের কোনও বিচারপতির উদ্দেশে এহেন তীব্র সমালোচনা সম্ভবত আগে কেউ করেননি। অতীতে বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বিচারপতির উদ্দেশে তির্যক মন্তব্য করায় তাঁকে জরিমানাও দিতে হয়েছিল। কিন্তু বিমানবাবুর তুলনায় কুণালের সমালোচনা অনেক বেশি তীক্ষ্ণ। তা ছাড়া তৃণমূল ভবন থেকে কুণাল এই সমালোচনা করেছেন। যার অর্থ তৃণমূলের দলীয় অবস্থানই ব্যাখ্যা করেছেন কুণাল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তৃণমূল মুখপাত্র সরাসরিই বলেন,- ‘বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার রায় পক্ষপাতদুষ্ট। তিনি নির্দিষ্ট ভাবে একজন সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছেন’।শুধু তাই নয়, কুণাল এদিন বলেন, -‘লেক থানায় রাজাশেখর মান্থার নামে এক ভদ্রলোকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। উনি একটা ফ্ল্যাট কিনেছেন। কিন্তু তাঁর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ফ্ল্যাটের বকেয়া টাকা দিচ্ছেন না। তাঁকে টাকার জন্য ফোন করা হলে নাকি তিনি পাল্টা হুমকি দিয়েছেন। যিনি টাকা চেয়েছেন, তাঁর স্ত্রীকেও অকথ্য কথা বলেছেন বলে অভিযোগ’। কুণাল এদিন বলেন, -‘ এই রাজাশেখর মান্থার এর বিরুদ্ধে কেন আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। আমরা তার দাবি জানাচ্ছি।’ তবে কুণালের এহেন মন্তব্য ঘিরে আদালত অবমাননার অভিযোগ কে সামনে রেখে বেশ কয়েক জন আইনজীবী মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।