অবহেলায় ‘ঐতিহ্যশালী’ বর্ধমানের রাজ কলেজিয়েট স্কুল
নিজস্ব প্রতিনিধি,
বর্তমানে সরকারি অবহেলার শিকার সদর বর্ধমান শহরের রাজ কলেজিয়েট স্কুল। বাংলার প্রাচীনতম স্কুলের মধ্যে অন্যতম বর্ধমানের রাজ কলেজিয়েট স্কুল। কলকাতার হিন্দু স্কুলের আগেও যে স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল । যে স্কুলে একদা পড়াশোনা করেছেন ভারত বিখ্যাত আইনবিদ তথা জাতীয় কংগ্রেসের দুবারের সভাপতি স্বাধীনতা সংগ্রামী রাসবিহারী ঘোষ, স্বাধীনতা সংগ্রামী বটুকেশ্বর দত্ত ,দামোদর দাস কাঠিয়া বাবা ,যোগেশ চন্দ্র রায় ,অভিনেতা কমল মিত্র । যে স্কুলে পড়েছেন বর্ধমান মহারাজ বিজয় চাঁদ ,আফতাব চাঁদ । যেখানে বহুবার বিদ্যাসাগর এসেছেন নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু, এখানে বক্তব্য রেখেছেন তিনি । যে স্কুলের প্রধান শিক্ষক ছিলেন রামতনু লাহিড়ী। বর্ধমানের মহারাজারা যে স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যে স্কুল থেকে বর্ধমান রাজ কলেজ,বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় এবং বর্ধমানের অনেক স্কুল প্রতিষ্ঠা হয়েছে। বর্ধমান জেলায় স্কুল জগতের যাকে ‘মা’ বলা যায় সেই স্কুল বর্তমানে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে পঠন-পাঠন করছে ছাত্র-ছাত্রীরা। শিক্ষক শিক্ষিকারা প্রাণভয়ের আশঙ্কা করছেন । ১৮১৭ সালের ৬ জানুয়ারী তৈরী হওয়া স্কুল বিল্ডিং থেকে খসে পড়ছে ছাদের একটা অংশ। দেয়াল খসে খসে পড়ছে মেরামত করার কেউ নেই। ছাত্র সংখ্যা ১৫০০ থেকে ৬০০ই নেমে এসেছে। যে স্কুলে ৫০ শতাংশের বেশি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছাত্রীরা পড়াশোনা করেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুব্রত মিশ্র বলেন -‘ পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক থেকে শুরু করে এমপি, এমএলএ এমনকি নবান্ন পর্যন্ত দরবার করেছি। সরকারের সর্বোচ্চ স্তরে আশ্বাস পাওয়ার পরেও কাজ শুরু হয়নি । এমন কোন জায়গা নেই যে জায়গায় আমরা পৌঁছায়নি কিন্তু স্কুল বিল্ডিং মেরামত হয়নি’। যে জায়গায় যেতে বলবেন যে কাজ করতে বলবেন স্কুলের স্বার্থে সেই জায়গায় পৌঁছাতে আমরা রাজি আছি বললেন প্রধান শিক্ষক সুব্রত মিশ্র । স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা ছাত্রছাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি আর সহ্য করা যাচ্ছে না। স্কুলের বিল্ডিং মেরামত হবে, রাজার স্কুলের গৌরব আবার কিভাবে ফিরে আসবে সেটা জানিনা। পূর্ব বর্ধমান তথা রাজ্যের প্রাচীনতম স্কুল হলেও বর্তমানে পূর্ব বর্ধমান তথা রাজ্যের এরকম ভগ্নদশা স্কুল আর দ্বিতীয়টি খুঁজে পাওয়া যাবে না। সাধারণ মানুষ থেকে রাজ পরিবারের সদস্যরাও চাইছেন যে এই স্কুল অবিলম্বে মেরামত হোক। এখন দেখার রাজ্য সরকারের টনক নড়ে কিনা?