দীপাবলীর প্রদীপ জ্বালাতে ব্যস্ত গৃহবধূ
নীহারিকা মুখার্জ্জী
দীপাবলী মানেই আলোর ঝলকানি। বিবর্তনের নিয়ম মেনে সরষে তেল ও পলতে দিয়ে মাটির প্রদীপের পথ অতিক্রম করে মোমবাতির হাত ধরে আজ দীপাবলী পালন করা হচ্ছে টুনি লাইটের আলোয়, তাও আবার মেড ইন চীনা। কিছুক্ষণ পর হয়তো আর পাঁচটা বাড়ির মত নিজের বাড়িতেও জ্বলবে টুনি লাইট! কিন্তু নিজের আজন্ম সংস্কার ভুলতে পারেননি গণপুরের গৃহবধূ ডলি মুখার্জ্জী।
বাজার থেকে কিনে এনেছেন কিছু মাটির প্রদীপ। গ্রামের মেয়ে ও গ্রামেরই বধূ। সুতরাং দিদা-ঠাকুমার কাছে মাটির প্রদীপ তৈরি করার শিক্ষা তো পাওয়া ছিল। সেটা কাজে লাগিয়ে নিজেই বাড়িতে তৈরি করেছেন কিছু প্রদীপ।
আবহাওয়া দপ্তরের ঘোষণাকে মান্যতা দিয়ে সকাল থেকেই আকাশ জুড়ে হাল্কা মেঘ ও একপশলা বৃষ্টি। বিকেল হতে না হতেই চারদিক ঘন মেঘে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। সঙ্গে প্রদীপ নিভিয়ে দেওয়ার মত হাওয়া। তারই মাঝে রেকাবি থালায় প্রদীপ সাজিয়ে সেগুলো জ্বালানোর চেষ্টা করছেন ডলি দেবী। কখনো জ্বলছে, কখনো বা হাওয়ায় নিভিয়ে যাচ্ছে। তারই মাঝে প্রাণপণ চেষ্টা করছেন সেগুলো জ্বালিয়ে ঘরের সামনের দরজা, তুলসী তলা সহ বিভিন্ন জায়গায় স্হাপন করতে। অবশেষে কিছুক্ষণের জন্য তিনি সফল হন। প্রদীপ জ্বলে ওঠে। ওদিকে আশি বছরের বৃদ্ধা খুড়শাশুড়ি বাড়ির বড় বৌয়ের প্রদীপ জ্বালানো দেখছেন।
ডলি দেবী বললেন - খুড়তুতো জেঠতুতো মিলিয়ে আমার শ্বশুররা পাঁচ ভাই। আমি এই বাড়ির বড় বৌ। আমার শাশুড়িও ছিলেন এবাড়ির বড় বৌ। দশ বছর আগে তিনি না ফেরার দেশে চলে গ্যাছেন। বৃদ্ধা খুড়শাশুড়ি আমার উপর দায়িত্ব দিয়েছেন। মুখার্জ্জী বাড়ির মঙ্গলের দিকে খেয়াল রেখে আমি দীপাবলীর প্রদীপ জ্বালাই বাড়ির সদস্যদের মঙ্গল কামনা করি। ব্যক্তিগত ভাবে মাটির প্রদীপ আমার খুব ভাল লাগে। তাইতো ওর প্রতি আমার বেশি টান।