ভূত চতুর্দশী উপলক্ষ্যে—
চতুর্দশীর ভূত,
নীতা কবি মুখার্জী
শাক খাও, শাক খাও, চোদ্দ রকম শাক
লিভারখানা ভালো থাকবে, ধরবে না চুলে পাক।
ভূত চতুর্দশী, শাক চতুর্দশী, চতুর্দশীর ভিড়ে
ধনতেরাসের কেনাকাটা, দোকানী নিচ্ছে মাথা মুড়ে।
ভূত নয়, ভূতনী শেওড়া গাছে থাকে
ডজন-খানেক বাচ্চাকে সে ডালে ঝুলিয়ে রাখে।
রাত্রি যত বাড়তে থাকে ভূতের নাচন বাড়ে
পাড়ার লোককে দেখলেই সে ভয় দেখিয়ে তাড়ে।
রাত্রি হলেই কড়মড়িয়ে মানুষ মাথা খায়
নিশিভোরে বন্ধু সেজে গেরস্থ-বাড়ি যায়।
বন্ধুর গলা নকল করে মানুষ ডেকে আনে
ঘাড়খানাকে মটকিয়ে সে চড়চড়িয়ে টানে।
রাত বাড়লেই ভূতের বাচ্চা হাঁই-মাঁই-খাঁই করে
বলে, মাঁগোঁ পেঁট জ্বঁলছে, মাথাখানা দাও ধরে।
ওমনি ভূতনী টানতে টানতে মানুষটাকে আনে
মানুষ তখন আধ-মরা হয়, মরে নাকো জানে।
বাচ্চারা সব আনন্দে খায় লজেন্স, চকলেট যেন
আঙ্গুলগুলো খায় যে তারা কাঠি লজেন্স হেন।
ভূতের বাচ্চার পেট ভরলে ভূত, ভূতনী বসে
আনন্দে হয় মাতোয়ারা, রক্তটা খায় কষে।
এমনি করে ভূত-ভূতনী মানুষ ধরে খায়
ভূতের কাছে ভাঙ্গাঘরই অট্টালিকা, হায়!
দিনের বেলা লুকিয়ে থাকে, কেউ পায় না টের
রাত্রি হলেই ভূতের নাচন, মজা মারে ঢের।
মামদো ভূত, গেছো ভূত, ভূতের রকমফের
দিনে দিনে বাড়বাড়ন্ত, বাড়ছে ভূতের ঢের।
চোদ্দটা শাক রান্না করো, চোদ্দ প্রদীপ জ্বালো
তবেই এ ভূত জব্দ হবে, জীবনে জ্বলবে আলো।