দলের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করল গুসকরা শহর তৃণমূল কংগ্রেস
জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী
জন্মদিন পালন, সেটা ব্যক্তি জীবন বা কোনো সামাজিক প্রতিষ্ঠানেরই হোক, সদস্য-সমর্থকদের একটা আলাদা উৎসাহ, উদ্দীপনা সেটার ভিন্ন মাত্রা এনে দেয়। আবার জন্ম দিনটা যদি রজত জয়ন্তী বা সুবর্ণ জয়ন্তী ইত্যাদির মত কোনো বিশেষ দিন হয় তাহলে উৎসাহের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। যেমন দলের রজত জয়ন্তী জন্মদিন পালনে সেই উদ্দীপনা বা উৎসাহ দেখা গেল গুসকরা শহর তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের মধ্যে। সমস্তটাই ছিল স্বস্তঃস্ফূর্ত, কৃত্রিমতার কোনো ছাপ সেই উৎসাহকে স্পর্শ করতে পারেনি।
এক অবাঞ্ছিত পরিস্থিতিতে মমতা ব্যানার্জ্জী ১৯৯৮ সালের ১ লা জানুয়ারি সাধের কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করেন। শোভনদেব চ্যাটার্জ্জী ছাড়া সেদিন কোনো প্রতিষ্ঠিত মুখ তার সঙ্গে ছিলনা। প্রসঙ্গত শোভনদেব বাবু বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়ে কংগ্রেস ত্যাগ করেন ও উপনির্বাচনে জয়ী হন এবং তিনিই ছিলেন তৃণমূলের প্রথম বিধায়ক। বহু ঝড়ঝাপ্টা, অপমান, লাঞ্ছনা এবং সিপিএমের হাতে শারীরিক নির্যাতন সহ্য করে মমতা ব্যানার্জ্জী 'কুম্ভ' হয়ে দলকে রক্ষা করে গেছেন। অবশেষে ২০১১ সালে আপাত দৃষ্টিতে অপরাজেয় বামফ্রন্টকে পরাস্ত করে তিনি মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন। তার প্রতিষ্ঠিত সেই দল আজ রজত জয়ন্তীবর্ষে পা দিল।
মমতা ব্যানার্জ্জী বরাবরই মহিলাদের সঙ্গে সঙ্গে দলের ছাত্র-যুব কর্মীদের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। তাইতো মন্ত্রী সভায় বা দলের সংগঠনে একাধিক নতুন মুখ দেখা যাচ্ছে। গুরুত্ব দেওয়ার সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে সম্প্রতি তিনি দলের প্রতিষ্ঠা দিবসের দিনটি 'ছাত্র দিবস' হিসাবে পালনেরও সিদ্ধান্ত নেন। কার্যত তৃণমূল ছাত্র পরিষদের উদ্যোগেই গুসকরা শহরে জন্মদিনটি পালিত হয়।
সকালের দিকে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের উদ্যোগে একটি মিছিল গুসকরা শহরের বিভিন্ন এলাকা পরিক্রমা করে। যদিও সেখানে ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে সঙ্গে শহর সভাপতি কুশল মুখার্জ্জী, কার্যকরী সভাপতি মলয় চৌধুরী, শহর যুব সভাপতি উৎপল লাহা, তৃণমূল নেত্রী সাধনা কোনার, ব্রততী চৌধুরী, ভগবতী ঘোষ, বেলি বেগম, আইটি সেলের রবিনাথ আঁকুরে সহ বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে আগত তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের পা মেলাতে দেখা যায়। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের পক্ষে উপস্থিত ছিল আউসগ্রাম ১ নং তৃণমূল ছাত্র পরিষদ সভাপতি তন্ময় গোস্বামী, শহর ছাত্র পরিষদ সভাপতি সৌম্যদীপ চ্যাটার্জ্জী, মলি, রিয়া, অন্তরা সহ প্রাক্তন ছাত্র নেতা গণেশ পাঁজা ও দেবব্রত শ্যাম প্রমুখ। মিছিল শেষ হয় শহরের দলীয় কার্যালয়ে। সেখানে উপস্থিত দলীয় কর্মীদের করতালির মধ্যে দিয়ে তৃণমূলের পতাকা উত্তোলন করেন শহর সভাপতি কুশল মুখার্জ্জী প্রমুখ। তাকে সহযোগিতা করেন শহর কার্যকরী সভাপতি, যুব সভাপতি, আউসগ্রাম ১ নং ব্লক ছাত্র পরিষদ সভাপতি প্রমুখ।
এছাড়া দলের পক্ষ থেকে অন্যান্য বছরের মত এবছরেও গুসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রায় ১০-১২ জন রুগীর হাতে হাতে ফলমূল তুলে দেওয়া হয়।
কুশল বাবু বলেন - আজ দলের পঁচিশ তম প্রতিষ্ঠা দিবস। সিপিএমের হার্মাদদের হাতে বারবার আক্রান্ত হয়ে দিদি একাধিক বার মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে এসেছেন। দল করতে গিয়ে আমাদের দলের অনেকেই শহীদও হয়েছে। বহু ঘাতপ্রতিঘাত সহ্য করেও 'দিদি'র দক্ষতায় দল পঁচিশ বছরে পা দিয়েছে। আজ সত্যিই আমাদের খুব আনন্দের দিন। ব্যক্তিগত মান অভিমানকে গুরুত্ব না দিয়ে সবাইকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করতে হবে। আসন্ন পুরভোটে দল যাতে পুনরায় ক্ষমতা লাভ করে সেই বিষয়ে সবাইকে সচেতন হতে হবে।