সেখ সামসুদ্দিন,
পশ্চিমবঙ্গ গৃহ শিক্ষক কল্যাণ সমিতি সমগ্র রাজ্য জুড়েই বিভিন্ন শিক্ষা দপ্তরে ডেপুটেশন ও আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, তারই সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির উদ্যোগে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত অসংখ্য গৃহ শিক্ষকবৃন্দ বর্ধমান রেলস্টেশন থেকে মিছিল শুরু করে এবং এই মিছিল কার্জন গেট অতিক্রম করে ডিআই অফিসের সামনে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুসারে একটি ডেপুটেশন সংগঠিত করে। যেখানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য কমিটির সভাপতি হীরালাল মন্ডল, সহ সভাপতি অলিকেন্দু বিকাশ চক্রবর্তী, জেলা সভাপতি রাজেশ সামন্ত, জেলা সম্পাদক মোজাম্মেল হক, সহ পূর্ব বর্ধমান জেলা নেতৃত্ব এবং জেলার বিভিন্ন প্রান্তের অসংখ্য গৃহ শিক্ষকবৃন্দ। তাদের নির্ধারিত দীর্ঘদিনের ১২ দফা দাবি সমূহ হল- গৃহ শিক্ষকদের সরকারি স্বীকৃতি প্রদান ও সরকারি পরিচয় পত্র, গৃহশিক্ষক পর্ষদ গঠন, সঙ্গে সরকারি নির্দেশ আর.টি.ই আইন ২০০৯ মোতাবেক স্কুল শিক্ষকরা কোনভাবেই গৃহশিক্ষকতা করতে পারবেন না, তা সত্ত্বেও কিছু স্কুল শিক্ষক অবৈধভাবে গৃহ শিক্ষকতা করে যাচ্ছেন, এখানে জেলাজুড়ে বেশকিছু শিক্ষকদের নামের তালিকা তুলে দেওয়া হয় ডিআই অফিসে। এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ গৃহ শিক্ষক কল্যাণ সমিতির রাজ্য সভাপতি হীরালাল মন্ডল জানান,-” কেন্দ্রীয় সরকারের রাইট টু এডুকেশন আইন অনুযায়ী কোনো শিক্ষক প্রাইভেট টিউশন করতে পারেনা। ইউজিসির গাইডলাইন অনুযায়ী কোন কলেজের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর প্রাইভেট টিউশন করতে পারে না। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০১৮ সালের কোলকাতা গেজেটে পরিষ্কার উল্লেখ করে দিয়েছে যে তারা প্রাইভেট টিউশন করতে পারবে না। এবং প্রতিটি স্কুলের শিক্ষকদের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে যে তারা প্রাইভেট টিউশন করছেন না। কিন্তু তারা মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরকারকে জনগণের সঙ্গে ছলনা করে বাড়িতে বসে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে যেভাবে প্রাইভেট টিউশন করছেন তার প্রতিবাদে এদিন ডি আই এর কাছে ৪০০ স্কুল শিক্ষকের লিস্ট জমা দেওয়া হচ্ছে এবং আমরা চাইব যাতে এর উপযুক্ত তদন্ত হয়”।হীরালালবাবু আরও বলেন, যদি প্রতিটা ডিপার্টমেন্টের ডিপার্টমেন্টাল পানিসমেন্ট হয়, তবে স্কুলশিক্ষকদের টিউশনি করার ক্ষেত্রে কেন হবেনা। একজন পুলিশ আধিকারিক খারাপ ব্যবহার করলে তাকে ক্লোজ করে দেওয়া হয় কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোন স্কুল শিক্ষকের ক্ষেত্রে সেই শাস্তি আপনারা দেখাতে পারবেন না। স্কুল শিক্ষক এরা প্রকাশ্যে বাণিজ্যিকভাবে যে কালো টাকা রোজগার করছে। ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গের নব্বইটা স্কুলে ছাত্র সংখ্যা শূন্য হয়ে যাওয়ার ফলে স্কুল বন্ধ করে দিতে হয়েছে, তার কারণ সেখানে ছাত্রসংখ্যা শূন্য হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ছাত্রসংখ্যা শূন্য হয়ে যাওয়ার কারণ কি? সরকার তো সবই দেয় জুতো খাতা থেকে শুরু করে সমস্ত কিছুই দেয় ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য। তাহলে কেন ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে যাচ্ছে না, স্যারেরা পড়াচ্ছেন না। এর দায় পশ্চিমবঙ্গ গৃহ শিক্ষক কল্যাণ সমিতি স্কুল শিক্ষক এর উপরেই বর্তাচ্ছে। যতদিন না পর্যন্ত স্কুল শিক্ষকদের প্রাইভেট টিউশন বন্ধ করা যাচ্ছে ততদিন পর্যন্ত আমাদের এই আন্দোলন চলবে। এর আগে যে আন্দোলন করেছে তাতে প্রাইমারি ডিআই একটা নোটিফিকেশন করেছে। হাইকোর্টে কেস করেছি। এরপরেও যদি স্কুল শিক্ষকরা যদি প্রাইভেট টিউশন করে তাহলে আমরা তাদের বাড়ি ঘেরাও করব।