এসএসকেএমে নার্সদের বিক্ষোভ প্রদর্শন নিয়ে রিপোর্ট তলব,
নিজস্ব প্রতিনিধি,
বেতন পরিকাঠামোর পুনর্বিন্যাস, বদলির ক্ষেত্রে অনিয়ম সহ একাধিক দাবিদাওয়ায় এসএসকেএম হাসপাতাল চত্বরে অবস্থান-বিক্ষোভ চালাচ্ছিলেন নার্সরা । এই বিক্ষোভের জেরে হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিষেবা বিঘ্নিত হচ্ছে বলে সোচ্চার হয় কয়েকটি সংগঠন।কলকাতা হাইকোর্টে এই বিক্ষোভ তুলে নেওয়ার আর্জি জানিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। মঙ্গলবার এই মামলার শুনানি ছিল হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। মামলায় রাজ্য সরকারের রিপোর্ট তলব করেছে হাইকোর্ট। মামলাকারীর বক্তব্য, ‘হাসপাতাল চত্বরে গত ১১ দিন ধরে বিক্ষোভ করছেন নার্সরা। হাসপাতালের ভেতরে মাইকিং চলছে। এতে স্বাস্থ্য পরিষেবা বিঘ্নিত হচ্ছে’ বলে অভিযোগ। আবেদনকারীর দাবি, ১৪ হাজার রোগীকে পরিষেবা দিতে সমস্যা হচ্ছে। বাইরে থেকে রোগীরা এসে ফিরে যাচ্ছেন। বিক্ষোভ চলতে থাকলে স্বাস্থ্য পরিষেবা পুরোপুরি বিপর্যস্ত হবে বলে দাবি মামলাকারীর। নার্সদের সংগঠনের তরফে আদালতে সওয়াল করেন আইনজীবী কিশোর দত্ত। তাঁর বক্তব্য, -‘বেতন পরিকাঠামো নিয়েই বিক্ষোভ। এসএসকেএমের কর্তব্যরত নার্সরাও আছেন এই বিক্ষোভে, তবে স্বাস্থ্য পরিষেবা যাতে বিঘ্নিত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে। শান্তিপূর্ণ মিছিলে নার্সরা নিজেদের দাবি জানাচ্ছেন’। অন্যদিকে, নার্সদের সংগঠনের তরফেও বলা হয়েছে, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ হচ্ছে। মাইকিং বন্ধ রাখা হয়েছে। রাস্তা বন্ধ করে অবরোধ হচ্ছে না। বেতন পরিকাঠামো পুনর্বিন্যাসের দাবি জানিয়ে গত ২৬ জুলাই এসএসকেএম হাসপাতাল চত্বরে অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। এরপর গত ৭ অগস্ট বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। বিক্ষোভকারীদের দাবি, সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি পেয়ে তাঁরা আন্দোলন তুলে নিয়েছিলেন। কিন্তু এর পরেও লাভ কিছু হয়নি। বরং হাসপাতাল থেকে ৩৫ জন নার্সকে বদলির নির্দেশিকা জারি করেছিল স্বাস্থ্য দফতর। এই নির্দেশিকা প্রত্যাহারের দাবিতে এসএসকেএমের নার্সিং সুপার মনীষা ঘোষ.কে ঘেরাও করে অবস্থান শুরু করেছিলেন নার্সরা। এর পরে মনীষা ঘোষ কোভিড আক্রান্ত হয়ে পড়ায় আন্দোলন থেমে যায়। অভিযোগ ওঠে, এই বিক্ষোভের কারণেই নার্সিং সুপার সংক্রমিত হয়েছিলেন। তিনি সেরে ওটার পরে গত ১৫ নভেম্বর থেকে ফের বিক্ষোভ শুরু হয়েছে এসএসকেএমে। নার্সেস ইউনিটির সম্পাদিকা ভাস্বতী মুখোপাধ্যায় বলেন,- ‘আদালতের এই নির্দেশ কে স্বাগত জানাচ্ছি। আগামী দিনে আমাদের আন্দোলন আরও তীব্রতর হবে। কোর্টের পরবর্তী শুনানি আগামী সোমবার, তার মধ্যে যদি প্রশাসন তাদের সঙ্গে কথা না বলে তবে তারা বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে’।