Spread the love

‘পরিবেশ বান্ধব বাজি পুড়বে দু ঘন্টা’ ; কলকাতা হাইকোর্ট 

মোল্লা জসিমউদ্দিন টিপু,

  
বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের অবকাশকালীন বেঞ্চে বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসে পরিবেশ বান্ধব বাজি পোড়ানো নিয়ে দু ঘন্টার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। রাত্রি ৮ টা থেকে ১০ টা পর্যন্ত পোড়ানো যাবে পরিবেশ বান্ধব বাজি।হাইকোর্টের রায়ে খুশি বাজি ব্যবসায়ীরা।বাজি সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশই চূড়ান্ত। নির্দেশে জানাল কলকাতা হাইকোর্ট। এই পর্যায়ে আর কোনো হস্তক্ষেপ করবে না আদালত।বুধবার  নতুন কোনো নির্দেশিকা দিলে তা বাস্তবায়িত করা রাজ্যের পক্ষে সম্ভব নয় বলে মনে করছে আদালত ।রাজ্যের প্রতিটি জায়গায়  পরিবেশবান্ধব বাজি ব্যবহৃত হবে তা নিশ্চিত করা রাজ্যের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে বাজির অপব্যাবহার বন্ধ করার জন্য রাজ্যকে উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে হবে নির্দেশ বিচারপতি রাজশেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চের।  রাজ্যে যে আতশবাজি বা শব্দবাজি ফাটবে না তার কোন নিশ্চয়তা নেই। তবে সুপ্রিম করতে নির্দেশ মেনে নিষিদ্ধ বাজি যাতে না ব্যাবহার করা হয় তার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা পুলিশ – প্রশাসন করছে বলে  এদিন আদালতে সওয়াল পর্বে জানান  অ্যাডভোকেট জেনারেল।পাশাপাশি ইতিমধ্যেই প্রচুর বাজি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। বহু লোককে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে আদালতে জানিয়েছেন এজি। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গে কালীপুজোয় পরিবেশবান্ধব বাজির উপর থেকে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করল হাইকোর্ট। শুধুমাত্র পরিবেশবান্ধব বাজি পোড়ানো যাবে। কালীপুজো, দীপাবলিতে দু’ঘণ্টা বাজি পোড়ানো যাবে। রাত আটটা থেকে দশটা পর্যন্ত পোড়ানো যাবে পরিবেশবান্ধব বাজি। নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের।গত সোমবারই দেশের সর্বোচ্চ আদালত পরিবেশ বান্ধব বাজি নিয়ে ছাড়পত্র দিয়েছিল, তার পাশাপাশি মামলাকারী কে পরিবেশ বান্ধব বাজি নিয়ে কোন  অভিযোগ থাকলে তা  সংশ্লিষ্ট হাইকোর্ট জানাতে নির্দেশ দিয়েছিল।এই সুত্র ধরেই মামলাকারী গত  মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসে পরিবেশ বান্ধব বাজিতে বিধিনিষেধ চেয়ে মামলা দাখিল করেছিলেন। যার শুনানি  বুধবার সকালে ছিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসে। এই বিবেচনাধীন মামলা নিয়ে চরম আগ্রহের দিকে তাকিয়ে ছিল আতশবাজি উন্নয়ন সমিতি।পাশাপাশি পুলিশের তরফেও বাড়তি আগ্রহ রয়েছে। কেননা পুলিশি অভিযানের ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশিকা  গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান করছে।বেআইনি বাজি বন্ধের আর্জি নিয়ে ফের কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হয়েছিলেন মামলাকারী। পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড এক্সপ্লোসিভ সেফটি অর্গানাইজেশন বা ‘পেসো’ দ্বারা স্বীকৃত বাজি ছাড়া পরিবেশ বান্ধব বাজি বিক্রি করা যাবে না। সেই সঙ্গে হাসপাতালের কাছে বা লোকালয়ের কাছে বাজি ফাটানো যাবে না। এই আর্জি নিয়ে ফের কলকাতা হাইকোর্টের  দ্বারস্থ হয়েছিলেন মামলাকারী।গত মঙ্গলবার  বিচারপতি রাজা শেখর মান্থারের  ডিভিশন বেঞ্চ মামলার অনুমতি দিয়েছে।  বুধবার সকালেই এই মামলার শুনানি ছিল ।প্রসঙ্গত, সোমবারই বাজি নিয়ে হাইকোর্টের  রায় খারিজ হয় সুপ্রিম কোর্টে । সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ -‘পরিবেশ বান্ধব বাজি  বিক্রি করা হোক। পরিবেশ বান্ধব বাজিই বিক্রি হচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত করতে হবে পুলিশ প্রশাসনকে। তবে সব বাজি নিষিদ্ধ, এমনটা হতে পারে না বলে পর্যবেক্ষণ  শীর্ষ আদালতের। কালি পুজো ও দিপাবলীতে  কোনও ধরনের বাজিই ফাটানো যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট এর সব্যসাচী ভট্টাচার্য এর ডিভিশন বেঞ্চ। হাইকোর্টের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিল আতসবাজি উন্নয়ন সমিতি। গত সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এনএম খান উইলকর ও বিচারপতি অজয় রাস্তোগীর বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল।সুপ্রিম কোর্ট আগেই জানিয়েছিল, -‘ পরিবেশের পরিস্থিনি অনুকূল থাকলে পরিবেশ বান্ধব বাজির ক্ষেত্রে কোনও বাধা থাকবে না’। সেই নির্দেশ সব রাজ্যের জন্য প্রযোজ্য বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। তাই পশ্চিমবঙ্গ সরকারকেও সেই নিয়ম মানতে হবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  সুপ্রিম কোর্ট ওইদিন বলে দিয়েছে, রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের আদেশ না মানলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সুপ্রিম কোর্ট আগেই বাজি সম্পূর্ণ বন্ধ করার নির্দেশের বিরোধিতা করেছিল, সোমবার  আবার সে কথাই মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে।সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চের তরফে বলা হয়েছে, -‘ পরিবেশ বান্ধব বাজি ব্যবহার হোক। বাতাসের একিউআই লেভেল বা বাতাসের মান যেখানে খারাপ, সেখানে পরিবেশ বান্ধব বাজি ফাটানো যাবে না। তার জন্য পুলিশকে সদর্থক ভূমিকা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে’। তবে বাজি একেবারে নিষিদ্ধ করা যাবে না বলেই নির্দেশ শীর্ষ  আদালতের।এর ফলে আপাতত পরিবেশ বান্ধব বাজি কেনা বা বিক্রির ক্ষেত্রে কোনও বাধা রইল না।সব ধরনের বাজি নিষিদ্ধ করে থাকে কলকাতা হাইকোর্ট। ‘পরিবেশ বান্ধব’ তথা সবুজ বাজিতেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। কালীপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো, ছটপুজোতে কোনওরকম বাজিই ফাটানো যাবে না বলে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট । কলকাতা হাইকোর্টের রায় কে খারিজ করে থাকে সুপ্রিম কোর্ট। তবে  সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর  মামলাকারী কে নুতন কোন অভিযোগ থাকলে তা জানাতে সংশ্লিষ্ট হাইকোর্ট কে বলা হয়।তাই ফের হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন এই মামলাকার বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসে এই মামলার শুনানি ছিল। সেখানে রাত্রি ৮ টা থেকে ১০ পর্যন্ত পরিবেশ বান্ধব বাজি পোড়ানোতে সম্মতি দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। এই সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার জন্য আদালত কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞ আইনজীবী বৈদূর্য ঘোষাল। তিনি বলেন – নিদিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়ায় একাধারে দীপাবলি উৎসবের আমেজ যেমন থাকবে,ঠিক তেমনি শব্দবাজির প্রকোপ অনেকটাই কমবে পুলিশি নজরদারি থাকার জন্য “। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *