ত্রিপল চুরি মামলায় ছয় সপ্তাহের স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের
মোল্লা জসিমউদ্দিন ,
প্রাক দুর্গাপূজায় বড়সড় আইনী স্বস্তি পেলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সোমবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে উঠে এই মামলা।সেখানে বিচারপতি কাঁথির ত্রিপল চুরির মামলায় ছয় সপ্তাহের স্থগিতাদেশ জারি করেছেন।পাশাপাশি রাজ্য কে এই মামলায় হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। এর আগের শুনানিতে এডভোকেট জেনারেল আদালত কে তখন জানিয়েছিলেন – ‘ কাঁথির পুরসভার গোডাউন থেকে ত্রিপল চুরি কান্ডে প্রথমে জেনারেল ডায়েরি করা হয়েছিল।এরপর ঘটনার গুরুত্ব বুঝে এফআইআর দাখিল হয়। প্রভাবশালীদের নাম আসছে।তাই আরও তদন্ত প্রয়োজন ‘। ওইদিন বিচারপতি এডভোকেট জেনারেল কে প্রশ্ন করেছিলেন – ‘ এটি কি আদালত গ্রাহ্য অপরাধ, যদি তাই হয় সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের কাছে এই বিষয়ে কোন লিগ্যাল ডকুমেন্ট আছে? ‘ রাজ্যের এডভোকেট জেনারেল অবশ্য আরও তদন্ত প্রয়োজন বলে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। কলকাতা হাইকোর্ট এই এফআইআর খারিজ আবেদনে শুভেন্দু অধিকারী ও তাঁর ভাই সৌমেন্দু অধিকারী কে তখন কোন আইনী রক্ষাকবচ দেয়নি। গত শুনানিতে রাজ্যের আইনজীবীর কাছে বিচারপতি তদন্ত প্রক্রিয়া কোন পর্যায়ে রয়েছে তা জানতে চেয়েছিলেন ।সেখানে সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন – ‘এই মামলার তদন্ত চলছে।একজন কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আরেক অভিযুক্ত ফেরার রয়েছে ‘। যদিও ওইদিন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী জানিয়েছেন – ‘ গতবছর ডিসেম্বর মাসে কাঁথি পুরসভা থেকে চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব ছেড়েছেন সৌমেন্দু অধিকারী। ঘটনার দিন কাঁথির অফিসে জোর করে কয়েকটি লরি ঢোকানো হয়েছিল ‘। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে এফআইআর খারিজ সহ আইনী রক্ষাকবচ পেতে দারস্থ হয়েছেন বাংলার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি তাঁর আইনজীবী মারফত কাঁথি পুরসভার ত্রিপল চুরির মামলায় অভিযুক্ত হিসাবে এফআইআর টি খারিজ করার পাশাপাশি তদন্তে অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ জারি চেয়েছিলেন। তবে কলকাতা হাইকোর্ট শুভেন্দু অধিকারী ও তাঁর ভাইয়ের বিরুদ্ধে এফআইআর খারিজ কিংবা আইনী রক্ষাকবচ কোনটিই আগে দেয়নি ।উল্লেখ্য, ইয়াস নামে প্রাকৃতিক দুর্যোগ পরবর্তী দুদিন পর গত ২৯ মার্চ কাঁথির পুরসভার গোডাউন থেকে ত্রিপল চুরি নিয়ে লিখিত অভিযোগ জমা পড়ে। সেখানে দুজন পুরসভার কর্মীর পাশাপাশি নাম জড়ায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং তাঁর ভাই তথা কাঁথি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সৌমেন্দু অধিকারীর। কাঁথি পুরসভার গোডাউন থেকে রাতের অন্ধকারে ত্রিপল চুরি হয়েছে। তাতে এঁদের নাম জড়ায়।এই এফআইআর টি খারিজ করার জন্য এবং তদন্তে অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ জারি চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হন শুভেন্দু অধিকারী। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন – ‘ ৯৫ সাল থেকে কাউন্সিলর, বিধায়ক, মন্ত্রী হয়েছি।লক্ষ্মণ শেঠের মত নেতাদের হারিয়ে সাংসদও হয়েছি একসময়। চলতি বিধানসভার ভোটে তৃণমূল নেত্রী কেও হারিয়েছি।তাই ত্রিপল চুরির মামলা দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী কে রুখা অত সহজ নয়’। ।তবে এই মামলায় আরেক অভিযুক্ত চঞ্চল নন্দী কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজশেখর মান্থারের এজলাসে সাময়িক স্বস্তি পেয়েছেন। আপাতত গ্রেপ্তার নয় বলে জানিয়েছে হাইকোর্ট। ঘনিষ্ঠ চঞ্চল নন্দীর আইনী রক্ষাকবচ মেলায়, এতে কিছুটা স্বস্তি অবশ্য মিলেছিল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর।এরেই মধ্যে সোমবার দুপুরে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে উঠে এই মামলা।সেখানে ছয় সপ্তাহের স্থগিতাদেশ জারি করা হয়েছে আদালতের নির্দেশে। পাশাপাশি রাজ্য কে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।