এবার নিম্ন আদালতে শুনানিতে সশরীরে হাজির,তবে শর্তে
মোল্লা জসিমউদ্দিন ,
গত বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল অফিস থেকে নিম্ন আদালত অর্থাৎ মহকুমা ও জেলাস্তরের আদালত গুলিতে শুনানিতে সশরীরে হাজির থাকতে বলা হয়েছে। বর্তমানে মারণ ভাইরাস করোনা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে, তাই এই বিজ্ঞপ্তি বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। রাজ্যের নিম্ন আদালতগুলিতে স্বাভাবিক ছন্দে কাজকর্ম শুরু করতে উদ্যোগী হল কলকাতা হাইকোর্ট। মামলাকারী এবং আইনজীবীদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে এবং মামলার গুরুত্ব বুঝে এবার থেকে সশরীরে আদালতে উপস্থিত থেকেই শুনানি চালাতে হবে। তবে আগের মতো ভার্চুয়াল শুনানিও চলবে প্রয়োজনে। অর্থাত্, নিম্ন আদালতগুলির জন্য দুই ধরনের রাস্তাই খোলা রাখছে কলকাতা আদালত।রাজ্যে করোনার বাড়বাড়ন্তের জেরে প্রায় দেড় বছর ধরে নিম্ন আদালতগুলির শুনানি কেবলমাত্র ভার্চুয়ালি চলছিল। এতে অনেকক্ষেত্রেই মামলাকারী এবং আইনজীবীদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছিল। বিশেষ করে, যাঁরা অনলাইন ব্যবস্থাপনায় খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্য নন, তাঁদের ক্ষেত্রে মামলার শুনানিতে সমস্যা আরও বেশি হচ্ছিল। এই সমস্যা দূর করতেই এবার কলকাতা হাইকোর্ট দুই ধরনের ব্যবস্থাই চালু রাখছে নিম্ন আদালতগুলির জন্য।তবে আদালত কক্ষে সশরীরে উপস্থিতির ক্ষেত্রে আইনজীবীদের বেশ কিছু নিয়মবিধি মেনে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের তরফে। আদালত কক্ষে আইনজীবী, মামলাকারী ও অন্যান্য কর্মীদের উপস্থিতির ক্ষেত্রে করোনা টিকার দু’টি ডোজ় বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। করোনা টিকার দু’টি ডোজ়ের শংসাপত্র যদি না থাকে, সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আরটিপিসিআর পরীক্ষা করাতে হবে এবং রিপোর্ট অবশ্যই নেগেটিভ থাকতে হবে। শুনানি শুরুর ৭২ ঘণ্টা আগে পরীক্ষা করাতে হবে এবং শুনানির আগে আদালতে তা জমা করতে হবে।তাছাড়া আদালতের ভিতরে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আদালতে প্রবেশের আগে স্যানিটাইজ়ার দিতে হাত ধোয়া আবশ্যক। পাশাপাশি, যত সম্ভব কম মানুষ যাতে আদালত কক্ষের ভিতরে থাকেন, তার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করতে হবে এবং শারীরিক দূরত্ববিধি মেনে আদালতের শুনানি প্রক্রিয়া চালাতে হবে।উল্লেখ্য, রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসে গিয়েছে। দৈনিক সংক্রমণ যেখানে ১০ হাজারের উপর দিয়ে যাচ্ছিল, তা এখন অনেকটাই কমে এসেছে। এখন রাজ্যে করোনার দৈনিক সংক্রমণ হাজারেরও নিচে। এই পরিস্থিতি নিম্ন আদালতগুলিতে ফের সশরীরে আদালতে উপস্থিত থেকে শুনানি শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। তবে ভার্চুয়াল শুনানির সুবিধাও চালু থাকছে। পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া মহকুমা আদালতে তরুণ আইনজীবী অনিন্দ চট্টরাজ জানান – ” প্রায় দেড় বছর পর সবরকম সর্তকতা মেনে স্বাভাবিক হচ্ছে আদালত, এটাই পেশাগত আনন্দের বিষয় “।