Spread the love

হার্টের নতুন চিকিৎসা ট্রান্স অ্যাওর্টিক ভালভ ইমপ্ল্যান্টেশান / রিপ্লেসমেন্এর সেমিনার

রাজকুমার দাস

হার্টের নতুন চিকিৎসা ট্রান্স অ্যাওর্টিক ভালভ ইমপ্ল্যান্টেশান / রিপ্লেসমেন্ট বা TAVI / TAVR হার্টের খারাপ ভাল্ভের চিকিৎসায় এক নতুন দিশা দেখিয়েছে। এই নতুন ইন্টারভেনশনাল চিকিৎসার আধুনিকতম অগ্রগতি ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা সম্পর্কেই আজকের ‘টভি নাঊ – কলকাতা চ্যাপ্টার’ (TAVI Now – Kolkata Chapter) আলোচনা চক্রটি অনুষ্ঠিত হয়। ভবিশ্যতেও এই ধরণের সেমিনার নিয়মিত অনুষ্ঠিত হবে।
আমাদের হৃদপিন্ডের দুটি কক্ষ অলিন্দ ও নিলয়ের চারটি দ্বারে রক্ত প্রবাহকে নিয়ন্ত্রন করতে স্লুইস গেটের মতো চারটি ভালভ থাকে। এর যে কোন একটি জন্মগত ত্রুটি, বার্ধক্য বা অন্য কারনে পুরু হয়ে গেলে বা ঠিক মতো না কাজ করলে ভালভ স্টেনোসিস নামের রোগ হতে পারে। এরই মধ্যে বাম নিলয় ও অ্যাওর্টা বা মহা ধমণির সংযোগ স্থলে অ্যাওর্টিক ভালভ স্টেনোসিস হলেই প্রাণ নিয়ে টানাটানি পড়ে।
হার্টে ভালভের অসুখ হলে আপাতভাবে কিছু বোঝা নাও যেতে পারে আবার খারাপ কার্ডিয়াক ভাল্ভের জন্য নিশ্বাসের কষ্ট, বুকে চাপধরা ভাব, গা ম্যাজম্যাজ, ঘুম ঘুম ভাব, হার্ট মারমার বা পা ফোলার মতো বিভিন্ন ধরণের উপসর্গ দেখা যেতে পারে। কারো আবার ক্ষিধে পায় না, ওজন কমে যায়, কেউ কেউ আচমকা অজ্ঞান হয়ে যান । আরও নানান সমস্যা দেখা যায়। যথাযথ চিকিৎসা না হলে যে কোন সময়ে হার্ট বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
ডা. পি কে হাজরা জানালেন যে TAVI একটি ইন্টারভেনশনাল প্রসিডিওর। অ্যাঞ্জিওপ্ল্যাস্টির মতোই এই পদ্ধতিতে কুঁচকি থেকে একটি স্টেন্টের মতো একটি মুল্যবান ডিভাইস ক্যাথিটারের সাহায্যে ঢুকিয়ে খারাপ ভালভে বসিয়ে দেওয়া হয়। প্রসিডিওরের তিন দিন পরে হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয়। আবার কাটাকুটি হয় না বলে রোগী খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারেন।
ডা. দিলীপ কুমারের কাছে জানা গেল আগে এর একমাত্র চিকিৎসা ছিল বুক কেটে হার্ট বার করে অপারেশন, ডাক্তারি পরিভাষায় এর নাম ওপেন হার্ট সার্জারি। জীবনের ঝুঁকি থাকায় সাধারণত বয়স্কদের ক্ষেত্রে এই অস্ত্রোপচার করা হতো না। এখন নতুন চিকিৎসা ট্রান্স অ্যাওর্টিক ভালভ ইমপ্ল্যান্টেশান /রিপ্লেসমেন্ট বা TAVI / TAVRএর সাহায্যে সব রোগীরই ভালভ মেরামতি সম্ভব। আশী বছরের বৃদ্ধ থেকে অতিরিক্ত ডায়াবেটিক বা ক্রনিক ডায়ালিসিস পেসেণ্ট, সকলের ক্ষেত্রেই এই প্রসিডিওর সফল হয়েছে। হার্টের এই সমস্যাকে অবহেলা করলে ভয় থাকে আচমকা অজ্ঞান হওয়ার বা সার্ডেন কার্ডিয়াক ডেথের।
ডা. পি কে হাজরা, ডা. দিলীপ কুমার, ডা.কুনাল সরকার, ডা.সুনীপ ব্যানার্জি, ডা.এ বি গোপালামুরুগান, ডা. এ শ্রীনিবাস কুমার, ডা. বিজয় আয়ার, ডা. অনিল মিশ্র, প্রভৃতি দেশের প্রথিতযশা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ও সার্জনরা অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করে নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা আলোচনা করেন। হার্টের ভাল্ভের অসুখ ও তার আধুনিকতম চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা সাধারণ চিকিৎসকদের জন্য খুবই জরুরী আবার পরোক্ষে সাধারণ মানুষের জন্যও প্রয়োজনীয়। এধরণের আলোচনাচক্র এ বিষয়ে এগিয়ে যেতে অনেকটাই সাহায্য করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *